বিপর্যয়ের মধ্যে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সেঞ্চুরি করেছেন নুরুল হাসান সোহান, পরে রিপন মন্ডল ও শফিকুল ইসলামের দারুণ বোলিংয়ে জিতেছে দল।
Published : 17 Mar 2024, 05:29 PM
আগের ম্যাচে শতরানের সম্ভাবনা জাগিয়েও ৮০ রানে থমকে গিয়েছিলেন নুরুল হাসান সোহান। এবার আর সেই হাতছানিকে মিলিয়ে যেতে দিলেন না তিনি। কঠিন সময়ে ক্রিজে গিয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান উপহার দিলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। পরে শফিকুল ইসলাম ও রিপন মন্ডলের দারুণ বোলিংয়ে বড় জয়কে সঙ্গী করে মাঠ ছাড়ল শেখ জামাল।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ১২১ রানে হারায় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
ফতুল্লায় রোববার শেখ জামাল ৫০ ওভারে তোলে ২৫৬ রান। ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৯৭ বলে ১০১ রান করেন অধিনায়ক সোহান। ফজলে মাহমুদ রাব্বির ব্যাট থেকে আসে ১০০ বলে ৭৪ রান।
রাত তাড়ায় ব্রাদার্স কোনো লড়াই জমাতে পারেনি। ধুঁকতে ধুঁকতে গুটিয়ে যায় তারা ১৩৫ রানে।
ক্ষুরধার বোলিংয়ে ৯.২ ওভারে স্রেফ ১২ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন শফিকুল ইসলাম। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৩৪ ম্যাচের ক্যারিয়ারে তার প্রথম ৪ উইকেট এটি। রিপন মন্ডল ৪ উইকেট নেন ৪৪ রানে, এই সংস্করণে ৭ ম্যাচে যা তার তৃতীয়।
খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা শেখ জামাল ১৩ রানের মধ্যে হারায় ওপেনার সৈকত আলি ও তিনে নামা রবিউল ইসলাম রবিকে। প্রাথমিক সেই ধাক্কা সামাল দেন ওপেনার সাইফ হাসান ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি।
তৃতীয় উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন দুজন। সাইফ বিদায় নেন ৩৪ রানে।
৭০ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে অনেকটা দূর এগিয়ে নেয় ফজলে মাহমুদ ও সোহানের জুটি। শুরুতে ধীরে করার পর ক্রমে রানের গতি বাড়ান দুজন। বিশেষ করে, সোহানের ব্যাট হয়ে ওঠে উত্তাল। ২৯তম ওভারে মনির হোসেনের বলে দুটি ছক্কায় খেলার গতি বদলে দেন তিনি। পরে ওয়ালিদের টানা দুই বলে ছক্কা ও চারে ফিফটি করেন ৫২ বলে।
৭৪ রান করে ফজলে মাহমুদের বিদায়ে এই জুটি থামে ১২০ রানে।
এরপর এক প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় শেখ জামাল। আরেক প্রান্তে রান করতে থাকেন সোহান। শতরানের পা রাখেন তিনি ৯৫ বলে। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ১২০ ইনিংসে তার চতুর্থ সেঞ্চুরি এটি।
তবে আরেকপ্রান্তে রান না আসায় শেষ দিকে প্রত্যাশিত স্কোর পায়নি শেখ জামাল। শেষ ৬ উইকেট হারায় তারা ৪৮ রানের মধ্যে।
তবে সেই রানই ব্রাদার্সের ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে প্রমাণ করে ছাড়েন রিপন মন্ডল ও শফিকুল ইসলাম। শেখ জামালের নতুন বলের দুই বোলারের দারুণ বোলিংয়ে ১৫ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় ব্রাদার্স। এর মধ্যে রিপনের শিকার ছিল তিনটি, শফিকুলের দুটি।
প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চারজনই কোনে রান করতে পারেননি। তিনে নামা রহমতউল্লাহ ফেরেন ৫ রানে।
বিধ্বস্ত দলের মান বাঁচানোর লড়াইয়ে নামেন শাকিল হোসেন ও রাহাতুল ফেরদৌস। ৬৫ রানে জুটি গড়েন দুজন। শাকিল ২৬ রানের ফেরার পর মনির হোসেনকে নিয়ে কিছুটা লড়াই করেন রাহাতুল।
২১ রান করেন মনির। ৭ চারে ৫৩ করেন রাহাতুল। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার প্রথম ফিফটি এটি।
৪০ ওভার পেরিয়েই থমকে যায় ব্রাদার্সের ইনিংস। শেষ দুই উইকেট নিয়ে শফিকুল পূর্ণ করেন চার উইকেট।
শেখ জামালের এটি তিন ম্যাচে দ্বিতীয় জয়, ব্রাদার্স হারল তিনটিই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৫৬ (সাইফ ৩৪, সৈকত ২, রবি ০, ফজলে মাহমুদ ৭৪, সোহান ১০১, ইয়াসির ৫, জিয়া ৫, তাইবুর ১২, রিপন ৩, শফিকুল ১*, টিপু ৩; আবু জায়েদ ১০-০-৪৩-৩, ওয়ালিদ ৭-০-৫১-২, রাহাতুল ১০-১-৪৭-১, নূর ৮-০-৩৭-০, মনির ৯-০-৪১-১, মাহমুদুল ১-০-৮-০, রহমতউল্লাহ ৫-০-২৫-০)।
ব্রাদার্স ইউনিয়ন : ৪০.২ ওভারে ১৩৫ (ইমতিয়াজ ০, মাজিদ ০, রহমতউল্লাহ ১০, মাহমুদুল ০, অমিত ০, শাকিল ২৬, রাহাতুল ৫৩, মনির ২১, আবু জায়েদ ২, ওয়ালিদ ৮*, নূর ৪; রিপন ১০-০-৪৪-৪, শফিকুল ৯.২-৪-১২-৪, জিয়া ৪-০-২৬-০, টিপু ৯-১-২৫-১, সাইফ ৬-২-১৬-১, তাইবুর ২-০-১০-০)।
ফল: শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ১২১ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: নুরুল হাসান সোহান।