শ্রীলঙ্কা-নিউ জিল্যান্ড
ম্যাচ জিততে শেষ দিনে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ২ উইকেট, নিউ জিল্যান্ডের চাই ৬৮ রান।
Published : 22 Sep 2024, 07:42 PM
দিনজুড়ে পিচ থেকে উড়ল ধুলা। গ্রিপের সঙ্গে বড় টার্ন পেলেন স্পিনাররা। সহায়ক উইকেটে আলো ছড়িয়ে শ্রীলঙ্কাকে প্রথম সেশনেই গুটিয়ে দিলেন এজাজ প্যাটেল। পৌনে তিনশ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নিউ জিল্যান্ডকে স্বস্তিতে থাকতে দেননি রামেশ মেন্ডিস ও প্রাবাথ জায়াসুরিয়ারাও। তাদের ছোবল সামলে রাচিন রাভিন্দ্রার দারুণ লড়াইয়ে শেষ দিনের রোমাঞ্চে গল টেস্ট।
দুই দলের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কাকে ৩০৯ রানে থামিয়ে দেয় নিউ জিল্যান্ড। ২৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৮ উইকেটে ২০৭ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করেছে তারা।
জমে ওঠা ম্যাচে জয়ের পাল্লা কিছুটা নুইয়ে লঙ্কানদের দিকে। পঞ্চম ও শেষ দিনে স্বাগতিকদের চাই ২ উইকেট। ব্যাটিং দুরূহ উইকেটে জিততে কিউইদের প্রয়োজন ৬৮ রান।
৯১ রানে অপরাজিত থেকে সফরকারীদের আশা বাঁচিয়ে রেখেছেন রাভিন্দ্রা। ১ ছক্কা ও ৯ চারে ১৫৮ বলের ইনিংস সাজিয়েছেন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দুয়ারে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
তিনটি করে উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডকে চেপে ধরেছেন অফ স্পিনার রামেশ ও বাঁহাতি স্পিনার জায়াসুরিয়া। একটি করে উইকেট নিয়েছেন আসিথা ফার্নান্দো ও ধানাঞ্জায়া ডি সিলভা।
দিনের প্রথম সকালটা ছিল এজাজময়। ৪ উইকেটে ২৩৭ রান নিয়ে রোববার দিন শুরু করা লঙ্কানদের বাকি ৬ উইকেটের পাঁচটিই নেন কিউই বাঁহাতি স্পিনার। ইনিংস শেষে তার বোলিং বিশ্লেষণ, ৩০-৮-৯০-৬।
জাতীয় নির্বাচনের জন্য শনিবার ‘রেস্ট ডে’ কাটিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা লঙ্কানরা এদিন ৭২ রানে শেষ ৬ উইকেট হারায়। এজাজের বলে ধানাঞ্জায়া (৪টি চারে ৪০) স্টাম্পড হলে শুরু হয় স্বাগতিকদের ব্যাটিং ধস।
এজাজের বাড়তি লাফিয়ে ওঠা বলে কনুইয়ে লেগে বোল্ড হন ভালো শুরু করা কুসাল মেন্ডিস। ৩৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে পঞ্চাশ করার পর টিকতে দেননি বাঁহাতি এই স্পিনার।
একই ওভারে রামেশ ও লাহিরু কুমারাকে ফিরিয়ে নিজের পঞ্চম ও ষষ্ট উইকেট তুলে নেন এজাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারে এনিয়ে পঞ্চমবার ইনিংসে পাঁচ উইকেটের স্বাদ পেলেন তিনি। জায়াসুরিয়াকে বিদায় করে লঙ্কানদের ইনিংস শেষ করেন মিচেল স্যান্টনার।
রান তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারে আসিথার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান ডেভন কনওয়ে। শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠে সফরকারীরা টম ল্যাথাম ও কেন উইলিয়ামসনের জুটিতে। কিন্তু জায়াসুরিয়ার বল ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় স্টাম্পড হন উইলিয়ামসন, ভাঙে ৪৫ রানের জুটি।
কিছুক্ষণ পর ল্যাথামের প্রতিরোধ ভেঙে দেন ধানাঞ্জায়া। রামেশের টার্ন করে ভেতরে ঢোকা বল প্যাডে লেগে ছোবল দেয় ড্যারিল মিচেলের বেলসে। ৯৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় নিউ জিল্যান্ড।
টম ব্লান্ডেলকে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা চালান রাভিন্দ্রা। তাদের ব্যাটে ইনিংসে একমাত্র পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি পায় কিউইরা। কিন্তু এরপরই জায়াসুরিয়াকে রিভার্স সুইপ করে বোল্ড হন ব্লান্ডেল (৪টি চারে ৩০), ভাঙে ৫৬ রানের যুগলবন্দী।
গ্লেন ফিলিপস, স্যান্টনার ও টিম সাউদি দ্রুত বিদায় নিলে আরও বিপদে পড়ে যায় সফরকারীরা। সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে এক প্রান্ত ধরে রেখে দলকে টানছেন রাভিন্দ্রা। তাকে সঙ্গ দিয়ে ১৫ বলে শূন্য রান করে অপরাজিত আছেন এজাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩০৫
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩৪০
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৯৪.২ ওভারে ৩০৯ (আগের দিন ২৩৭/৪) (ম্যাথিউস ৫০, ধানাঞ্জায়া ৪০, মেন্ডিস ২৩, রামেশ ১, জায়াসুরিয়া ১১, কুমারা ০, আসিথা ০*; ও’ রোক ১৭-২-৪৯-৩, এজাজ ৩০-৮-৯০-৬, স্যান্টনার ১৪.২-২-৫১-১, সাউদি ১৬-৪-৩৯-০, ফিলিপস ১২-১-৫০-০, রাভিন্দ্রা ৫-০-১১-০)
নিউ জিল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৭৫) ৬৮ ওভারে ২০৭/৮ (ল্যাথাম ২৮, কনওয়ে ৪, উইলিয়ামসন ৩০, রাভিন্দ্রা ৯১*, মিচেল ৮, ব্লান্ডেল ৩০, ফিলিপস ৪, স্যান্টনার ২, এজাজ ০*; রামেশ ২৫-৩-৮৩-৩, আসিথা ২-০-৫-১, জায়াসুরিয়া ২৯-৭-৬৬-৩, ধানাঞ্জায়া ১০-৪-৩০-১, কুমারা ২-০-১৫-০)