Published : 29 Apr 2025, 12:57 PM
লাঞ্চের ঠিক আগের ওভারে ভিন্ন কিছুর চেষ্টা করলেন ক্রেইগ আরভাইন। জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক বল তুলে দিলেন অনিয়মিত স্পিনার ব্রায়ান বেনেটের হাতে। লাভ কিছু হলো না। তার প্রথম বলটিই বাউন্ডারিতে পাঠালেন সাদমান ইসলাম। ওই শটে বাংলাদেশের স্কোর পেরিয়ে গেল একশর সীমানা। অবসান হলো দীর্ঘ এক হতাশার।
আক্ষেপ-ব্যর্থতার লম্বা প্রহর পেরিয়ে অবশেষে টেস্টে শতরানের উদ্বোধনী জুটি পেল বাংলাদেশ। নতুন জুটি সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক দলকে এনে দিলেন সেই কাঙ্ক্ষিত শুরু।
চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম বলেই জিম্বাবুয়ের শেষ উইকেট আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। আগের দিন পাঁচ উইকেট শিকার করা তাইজুল ইসলাম যোগ করেন আরেকটি উইকেট। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে সাদমান ও এনামুল নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন পুরো সেশন।
প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশের রান ছিল কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০৫। লাঞ্চের পর এনামুলের বিদায়ে জুটি ভাঙে ১১৮ রানে।
টেস্টে শুরুর জুটিতে বাংলাদেশ শতরান সবশেষ পেয়েছিল এই মাঠেই। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান গড়েছিলেন ১২৪ রানের বন্ধন।
এরপর পেরিয়ে গেছে ৩৩ ইনিংস। অবশেষে আবার তেমন একটি জুটি গড়তে পারলেন প্রথমবার একসঙ্গে ইনিংস শুরু করতে নামা সাদমান ও এনামুল।
সবশেষ ১৩ ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে পঞ্চাশও ছিল না বাংলাদেশের।
উইকেট অবশ্য ব্যাটিংয়ের জন্য দারুণ সহায়ক হয়ে উঠেছে দ্বিতীয় দিনে। জিম্বাবুয়ের বোলাররাও ছিলেন একদম ধারহীন। নতুন বলে শর্ট ডেলিভারিতে যদিও কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছেন এনামুল। তার হেলমেটে বল লেগেছে একবার, কয়েক দফায় ঠিকমতো খেলতে পারেননি। তবে পরে সামলে নেন নিজেকে। আঁকড়ে রাখেন উইকেট।
আগের পাঁচ টেস্টে তার মোট রান ছিল ১০০, গড় ছিল ১০। সর্বোচ্চ ছিল ২৩। এবার তিনি সেটিকে ছাড়িয়ে যান।
প্রথম ফিফটির স্বাদ অবশ্য পাওয়া হয়নি। লাঞ্চের পরপর ব্লেসিং মুজারাবানির বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি ৮০ বলে ৩৯ রান করে।
সাদমান শুরু থেকেই ছিলেন বেশ ইতিবাচক। জিম্বাবুয়ের পেসার ও স্পিনাররা আলগা বল দিছেন নিয়মিতই। বাঁহাতি ওপেনার তা কাজে লাগিয়েছেন। দারুণ কিছু ড্রাইভ আর কাট শটে বাড়িয়েছেন রান।
টেস্ট ক্রিকেটে সপ্তমবার তিনি স্পর্শ করেছেন পঞ্চাশ। এর কেবল একটিতে তিনি রূপ দিতে পেরেছিলেন শতরানে। এবার আরেকটি সেঞ্চুরির হাতছানি তার সামনে। লাঞ্চের সময় অপরাজিত ছিলেন ৯১ বলে ৬৬ রান করে। বাউন্ডারি ছিল ১০টি।
এই ইনিংসের পথে টেস্ট ক্রিকেটে হাজার রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেন ২৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
জিম্বাবুয়ের কোনো বোলারই তেমন কোনো প্রভাব রাখতে পারেননি। আঁটসাঁট লেংথেও সেভাবে বল রাখতে পারেননি কেউ।