ব্র্যান্ডন কিংয়ের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর পথ হারালেও বোলারদের সৌজন্যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
Published : 24 May 2024, 11:31 AM
প্রথম ১০ ওভারে ক্যারিবিয়ান সাগরে যেন সুনামি বয়ে গেল। পরের ১০ ওভারে সাগর শান্ত। তবে শুরুর ওই সুনামিতেই একরকম ভেসে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি সিরিজের প্রথমটিতে ব্র্যান্ডন কিংয়ের ঝড়ো ইনিংসের পর বোলারদের সম্মিলিত পারফরম্যান্সে জয়ে শুরু করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জ্যামাইকায় তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৮ রানে হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
স্যাবাইনা পার্কে বৃহস্পতিবার বিস্ফোরক শুরুর পর ইনিংসের পরের ভাগে খেই হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেটে ১০৯ রান তোলা দল শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে করে ৮ উইকেটে ১৭৫। ওপেনিংয়ে ঝড় তুলে ব্র্যান্ডন কিং ৪৫ বলে করেন ৭৯।
দক্ষিণ আফ্রিকা রান তাড়ায় সেভাবে লড়াই জমাতে পারেনি। ওপেনার রিজা হেনড্রিকস একাই ৫১ বলে ৮৭ রান করার পরও তারা থমকে যায় ১৪৭ রানে।
বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য সিরিজটির আয়োজন করা হলেও আইপিএলের কারণে দুই দলের বেশির ভাগ নিয়মিত ক্রিকেটারই নেই এই সিরিজে। দুই অধিনায়ক ব্র্যান্ডন কিং ও রাসি ফন ডার ডাসেনও কাজ চালাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে।
এই ম্যাচে বড় রান করা কিং ও হেনড্রিকস অবশ্য বিশ্বকাপ স্কোয়াডে আছেন। তাদের প্রস্তুতির শুরুটা তাই দারুণ হলো।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ শুরু করে কিংয়ের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে। প্রথম তিন ওভারে ওঠে ৩৪ রান, এক ওপেনার জনসন চার্লসের রান তখনও শূন্য।
চার্লস আউট হন ১ রানে। এরপর কিংয়ের সঙ্গে দ্রুত রানের ধারা ধরে রাখেন বিশ্বকাপ দলে জায়গা না পাওয়া কাইল মেয়ার্স। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৪ বলে ৭৯ রান যোগ করেন দুজন।
কিং ফিফটি করেন ২৬ বলে। নবম ওভারে ১০০ পেরিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ছয়টি করে চার ও ছক্কায় ৭৯ করে কিং যখন আউট হন, ১১ ওভারে দলের রান তখন ১১৫। পরের বিপর্যয়ের আঁচ তখনও পাওয়া যায়নি।
কিন্তু তিন ছক্কায় ২৫ বলে ৩৪ করে মেয়ার্স আউট হওয়ার পরই ক্যারিবিয়ানদের উল্টো যাত্রার শুরু। এক পাশে রোস্টন চেইস উইকেট আগলে রাখেন, আরেক পাশে উইকেট পড়তে থাকে নিয়মিত।
শেষ সাত ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে তারা রান তুলতে পারে কেবল ৪৩। চেইস অপরাজিত রয়ে যান ৩০ বলে ৩২ করে।
২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার ওটনিল বার্টমান। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অভিষেকে ৩১ বছর বয়সী এই পেসারের চেয়ে ভালো পারফরম্যান্স আছে আর কেবল দুই বোলারের।
দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলেই চার মারেন কুইন্টন ডি কক। পরের বলেই তাকে আউট করে উল্লাসে মেতে ওঠেন ম্যাথু ফোর্ড। পরের ওভারে রায়ান রিকলটনকে ফেরান চেইস।
রান বাড়ানোর কাজটি মূলত করতে থাকেন হেনড্রিকস। তাকে কিছুটা সঙ্গ দেন ম্যাথু ব্রিটস্কে (১৯) ও ফন ডার ডাসেন (১৭)। কিন্তু এই দুজনও লম্বা সময় টিকতে পারেনি। দক্ষিণ আফ্রিকাও তাই পেরে ওঠেনি।
১০৮ রানে ৮ উইকেট হারানো দলকে দেড়শর কাছে এগিয়ে নেন মূলত হেনড্রিকস। ছয়টি করে চার ও ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ৮৭ রান করে তিনি বিদায় নেন নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ছয় ব্যাটসম্যানের চারজনই আউট হন শূন্য রানে।
সিরিজের পরের ম্যাচ শনিবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৭৫/৮ (কিং ৭৯, চার্লস ১, মেয়ার্স ৩৪, চেইস ৩২*, ফ্লেচার ১, অ্যালেন ১, আকিল ২, ফোর্ড ৫, মোটি ১ , শামার ০*; ফোরটান ২-০-১৪-০, এনগিডি ৪-০-৪১-০, কুটসিয়া ৪-০-৩০-১, বার্টমান ৪-০-২৬-৩, ফেলুকোয়াইয়ো ৪-০-২৮-৩, মুল্ডার ১-০-১৬-০, হেনড্রিকস ১-০-৮-০)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৯.৫ ওভারে ১৪৭ (ডি কক ৪, হেনড্রিকস ৮৭, রিকলটন ৫, ব্রিটস্কে ১৯, ফন ডাসেন ১৭, মুল্ডার ০, ফেলুককোয়াইয়ো ৪, ফোরটান ০, কুটসিয়া ০, এনগিডি ৫, বার্টমান ০*; ফোর্ড ২.৫-০-২৭-৩, চেইস ২-০-১২-১, শামার ৩-০-২০-১, আকিল ১-০-১৪-০, অ্যালেন ৪-০-৩২-০, ম্যাককয় ৩-০-১৫-২, মোটি ৪-০-২৫-৩)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৮ রানে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: ব্র্যান্ডন কিং