রাঁচি টেস্টে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন আর ১৫২ রান, হাতে আছে ১০ উইকেট।
Published : 25 Feb 2024, 04:34 PM
প্রথম ইনিংস শেষে এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ড দ্বিতীয়ভাগে পথ হারিয়ে ফেলল। রবিচন্দ্রন অশ্বিন, কুলদিপ ইয়াদাভের স্পিনের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ল তাদের ব্যাটিং। লক্ষ্য নাগালে রেখে রান তাড়ায় শুরুটাও বেশ ভালো করায় ভারতের সামনে দারুণ এক জয়ের হাতছানি।
রাঁচি টেস্টের তৃতীয় দিন ভারতকে ৩০৭ রানে থামিয়ে ৪৬ রানের লিড নেয় ইংল্যান্ড। পরে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে তারা অলআউট হয়ে যায় ১৪৫ রানে।
১৯২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভারত দিন শেষ করেছে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪০ রান নিয়ে। জয়ের জন্য আর ১৫২ রান প্রয়োজন তাদের।
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে সবকটি উইকেটই নেন ভারতের স্পিনাররা। অভিজ্ঞ অফ স্পিনার অশ্বিন ৫১ রানে নেন ৫ উইকেট। টেস্টে ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৩৫ বার পাঁচ উইকেট নিয়ে বসেন সাবেক লেগ স্পিনার আনিল কুম্বলের পাশে।
প্রথম ইনিংসে উইকেট না পাওয়া বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার কুলদিপ এবার ২২ রানে ধরেন চার শিকার। অন্য উইকেটটি নেন রবীন্দ্র জাদেজা।
প্রথম ইনিংসে বড় লিড পাওয়ার আশায় ছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু রোববার তাদের সেই স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেন ধ্রুব জুরেল। ৩০ রান নিয়ে দিন শুরু করা এই কিপার-ব্যাটসম্যান প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও জাগান; শেষ পর্যন্ত অবশ্য থামেন ৯০ রানে, ১৪৯ বলের ইনিংসে মারেন ৪ ছক্কা ও ৬টি চার।
৭ উইকেটে ২১৯ রান নিয়ে এদিন খেলতে নামা ভারত জুরেলের ইনিংসের সুবাদে পার করে তিনশ। তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া কুলদিপ ২৮ রানে আউট হলে ভাঙে ৭৬ রানের জুটি।
৯৬ বলে প্রথম টেস্ট ফিফটি করা জুরেল এরপর এগিয়ে যান অভিষিক্ত আকাশ দিপকে নিয়ে। তাদের ৪০ রানের জুটিতে ৩১ রানই ছিল দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা জুরেলের। আকাশকে ফিরিয়ে রেহান আহমেদের পর ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন আগের দিন চারটি নেওয়া শোয়েব বাশির।
সেঞ্চুরি যখন দৃষ্টি সীমানায় তখনই টম হার্টলির ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান জুরেল। তিন অঙ্ক না ছোঁয়ার হতাশা থাকলেও চমৎকার ইনিংসটির জন্য প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
ফিল্ডিংয়ে নেমে নতুন বল অশ্বিনের হাতে তুলে দেন রোহিত শার্মা। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে দেরি করেননি বোলার। নিজের তৃতীয় ওভারে পরপর দুই বলে ফিরিয়ে দেন বেন ডাকেট ও অলি পোপকে। দুই ইনিংসেই রানের খাতা খুলতে পারেননি পোপ।
জ্যাক ক্রলির সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান জো রুট। তাকেও ১১ রানে এলবিডব্লিউ করে দেন অশ্বিন। রিভিউ নিয়ে মূল্যবান উইকেটটি পায় ভারত।
একপ্রান্তে নিজের মতো খেলে যাওয়া ক্রলি ৭১ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। কুলদিপের বল ব্যাকফুটে খেলার চেষ্টায় বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন ৭ চারে ৬০ রান করা ইংলিশ ওপেনার। ভারতীয় রিস্ট স্পিনার কয়েক ওভার পর ভেঙে দেন বেন স্টোকসের স্টাম্পও।
৫ উইকেটে ১২০ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশন শেষ করে ইংল্যান্ড। বিরতির পর জাদেজার করা প্রথম বলেই শর্ট কাভারে সহজ ক্যাচ দেন সিরিজজুড়ে ছন্দ খুঁজে ফেরা জনি বেয়ারস্টো (৩ চারে ৩০)। আর এক ওভারে হার্টলি ও প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা অলিভার রবিনসনকে বিদায় করেন কুলদিপ।
বাশিরকে নিয়ে শেষ দিকে বেন ফোকস ১৩ ওভার কাটিয়ে দিলেও তেমন রান তুলতে পারেননি। একই ওভারে তাকে ও জেমস অ্যান্ডারসনকে ফিরিয়ে প্রতিপক্ষের ইনিংস গুটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন অশ্বিন।
রান তাড়ায় নেমে আগ্রাসী শুরু করেন রোহিত। ৪টি চারে ২৭ বলে ২৪ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন তিনি। ১ চারে ১৬ রান নিয়ে খেলছেন ইয়াশাসবি জয়সওয়াল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩৫৩
ভারত ১ম ইনিংস: ১০৩.২ ওভারে ৩০৭ (আগের দিন ২১৯/৭) (জুরেল ৯০, কুলদিপ ২৮, আকাশ ৯, সিরাজ ০*; অ্যান্ডারসন ১৮-৪-৪৮-২, রবিনসন ১৩-০-৫৪-০, বাশির ৪৪-৮-১১৯-৫, হার্টলি ২৭.২-৬-৬৮-৩, রুট ১-০-১-০)
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৫৩.৫ ওভারে ১৪৫ (ক্রলি ৬০, ডাকেট ১৫, পোপ ০, রুট ১১, বেয়ারস্টো ৩০, স্টোকস ৪, ফোকস ১৭, হার্টলি ৭, রবিনসন ০, বাশির ১*, অ্যান্ডারসন ০; অশ্বিন ১৫.৫-০-৫০-৫, জাদেজা ২০-৫-৫৬-১, সিরাজ ৩-০-১৬-০, কুলদিপ ১৫-২-২২-৪)
ভারত ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৯২) ৮ ওভারে ৪০/০ (রোহিত ২৪*, জয়সওয়াল ১৬*; রুট ৪-০-১৭-০, হার্টলি ৩-০-২২-০, বাশির ১-০-১-০)