৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারলেন না ইরফান শুক্কুর।
Published : 19 Dec 2022, 07:34 PM
যেখানেই সুযোগ পাচ্ছেন, ছোট ছোট কার্যকরী ইনিংস খেলে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়ে চলেছেন জাকের আলি। যদিও ফিফটি পেরিয়ে থমকে যাচ্ছিলেন বারবার। অবশেষে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বহুকাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কের স্বাদ পেলেন এ কিপার-ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের দশম আসরের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে বিসিবি মধ্যাঞ্চলের হয়ে সেঞ্চুরি করেছেন জাকের। অন্য ম্যাচে স্রেফ ৭ রানের আক্ষেপে পুড়েছেন বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের কিপার-ব্যাটসম্যান ইরফান শুক্কুর। বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন দুই তরুণ পেসার নাহিদ রানা ও রিপন মন্ডল।
রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে প্রথম দিন শেষে মধ্যাঞ্চলের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩২৪ রান।
আগে ১৪ বার ফিফটিতে আটকা পড়ার পর ৩৯তম ম্যাচে এসে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম শতরানের দেখা পান জাকের। তাদের হয়ে ফিফটি করেন সৌম্য সরকার ও শুভাগত হোম।
টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন আব্দুল মজিদ। দলীয় সংগ্রহ পঞ্চাশ পেরোনোর আগে একই পথে হাঁটেন মোহাম্মদ মিঠুন ও সালমান হোসেন।
ইনিংস শুরু করতে নামা সৌম্য টিকে তখনও। ধাক্কা সামাল দিয়ে চতুর্থ উইকেটে ১০৫ রানের জুটি গড়েন সৌম্য ও জাকের। দারুণ ব্যাটিংয়ে ১০ চারে পঞ্চাশ করেন সৌম্য। ৪৩তম ওভারে ডানহাতি পেসার এনামুল হককে টানা দুই বলে স্কয়ার কাট ও ড্রাইভে বাউন্ডারি আদায় করেন তিনি।
ওভারের শেষ বলটি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টা করেন সৌম্য। কিন্তু ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে ধরা পড়েন শর্ট থার্ড ম্যানে থাকা নাঈম হাসানের হাতে। সমাপ্তি ঘটে সৌম্যর ১৪ চারে খেলা ৭১ রানের ইনিংসের।
সৌম্য ফেরার পরপর ফিফটি স্পর্শ করেন জাকের। প্রথম পঞ্চাশ করতে ৯৮ বল খেলেন তিনি। যেখানে ছিল ৭ চার ও ১ ছয়।
পঞ্চম উইকেটে শুভাগতর সঙ্গে জাকেরের জুটি ১১৪ রানের। জুটিতে দাপট দেখান শুভাগত। ১০ চার ও ২ ছয়ে স্রেফ ৮৭ বলে ৮২ রান করেন তিনি। ৬৫তম ওভারে রিপনের হালকা লাফিয়ে ওঠা বলে এক্সট্রা কাভারে পারভেজ হোসেন ইমনের হাতে ক্যাচ দেন শুভাগত।
তখন ৭৯ রানে অপরাজিত জাকের। ঠাণ্ডা মাথায় খেলে সেঞ্চুরির বাকি পথ পাড়ি দেন ২৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। তানভির ইসলামের বলে লং অন দিয়ে বাউন্ডারি মেরে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছান তিনি।
প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি করতে ১৭৯ বলে ১৩ চার ও ৩ ছয় মারেন। দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে তাকে ফেরায় পূর্বাঞ্চল। নতুন বলে রিপনের করা প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন কিনি ১২১ রান করে।
আলোকস্বল্পতায় ৮ ওভার আগে বন্ধ হয় দিনের খেলা।
পূর্বাঞ্চলের পক্ষে ৫৩ রান খরচায় ৪ উইকেট পেয়েছেন রিপন। এছাড়া এনামুলের শিকার ২ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে):
বিসিবি মধ্যাঞ্চল: ৮২ ওভারে ৩২৪/৭ (মজিদ ০, সৌম্য, ৭১, মিঠুন ৭, সালমান ১০, জাকের ১২১, শুভাগত ৮২, শরিফউল্লাহ ১০, আরিফুল ১১*, রবিউল ৪*; রিপন ১৫-৪-৫৩-৪, এনামুল ১৪-৩-৬৩-২, জিয়াউর ৯-০-২৫-০, নাঈম ১৮-৩-৮৬-০, তানভির ২২-৪-৭৩-১, আশরাফুল ৪-০-২১-০)
ইরফানের ৭ রানের আক্ষেপ, নাহিদের ৪ উইকেট
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে স্রেফ ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের ইরফান শুক্কুর। দিনের শেষ ওভারে আউট হন তিনি। বল হাতে জাতীয় লিগের দারুণ ফর্ম বিসিএলেও বয়ে আনেন নাহিদ রানা।
প্রথম দিন শেষে বিসিবি উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২২ রান করেছে দক্ষিণাঞ্চল। আলোকস্বল্পতায় ৯ ওভার আগে বন্ধ হয়েছে দিনের খেলা।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে নাহিদ ও সালাউদ্দিন শাকিলের তোপে ২৭ রানে ৩ উইকেট তুলে নেয় উত্তরাঞ্চল। অল্পেই ফেরেন পিনাক ঘোষ, ফরহাদ হোসেন ও ফজলে রাব্বি। চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন অমিত হাসান ও মার্শাল আইয়ুব।
তবে বেশিক্ষণ লড়াই করতে পারেননি তারা। দুজনকেই ড্রেসিংরুমে ফেরান সানজামুল ইসলাম। দলীয় ৭৬ রানে নাহিদুল ইসলামও আউট হয়ে গেলে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় দক্ষিণাঞ্চল।
চাপের মুখে দারুণ জুটি গড়েন ইরফান ও সুমন খান। ফিফটির কাছাকাছি গিয়েও তা ছুঁতে পারেননি সুমন। ৪৪ রানে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে নাসির হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
এরপর শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লড়াই করেন ক্যারিয়ারের ২০তম ফিফটি করা ইরফান। কিন্তু দ্বিতীয় নতুন বল আসার পর টিকতে পারেননি। সালাউদ্দিনের করা ওভারের চতুর্থ বলে থার্ড ম্যানে ধরা পড়েন ৯৩ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)
বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল: ৮১ ওভারে ২২২/৯ (পিনাক ৩, ফরহাদ ৩, অমিত ২৪, ফজলে রাব্বি ৫, ইরফান ৯৩, নাহিদুল ১, সুমন ৪৪, নাজমুল ৫, হালিম ২*, হাসান ৪*; সালাউদ্দিন ১৮-৪-৫৩-২, সাইফ উদ্দিন ১২-৩-৩২-০, নাহিদ ১৭-৩-৬০-৪, সানজামুল ১৪-৪-২৯-২, নাসির ১১-৬-১৮-০, নাঈম ৪-২-৭-০, আমিনুল ৫-০-১৮-১)