সতীর্থদের সঙ্গে উদযাপন করেও আবার একটু থমকে যেতে হলো আরাফাত সানিকে। ব্যাটসম্যান যে রিভিউ নিয়েছেন! সেই অপেক্ষার ফল মধুরই হলো। রিভিউ নিয়েও টিকতে পারলেন না ব্যাটসম্যান উসমান খান। আরেক দফা উদযাপনের সুযোগ পেলেন সানি। ৭ বছরের বেশি সময় পর পেলেন তিনি ৪ উইকেটের স্বাদ, ‘ডাবল’ উদযাপন তো হতেই পারে!
এমনিতে বিপিএলে আরাফাত সানি মানে বরাবরই নির্ভরতার নাম। তবে সব দলে বেশির ভাগ সময়ই তার মূল কাজ থাকে আঁটসাঁট বোলিংয়ে রান আটকানো। তিন-চার উইকেট নিয়ে ম্যাচের নায়ক হয়ে উঠতে পারেন কম সময়ই। সেই সানি এবারের মৌসুমে দলের শেষ ম্যাচে আলোয় এলেন ৪ উইকেট নিয়ে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ঢাকা ডমিনেটর্সের হয়ে ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন সানি। তার সঙ্গে অন্য বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ২০ ওভারে করতে পারে স্রেফ ১১৮ রান।
সুদীর্ঘ বিপিএল ক্যারিয়ারে ৮৩ ম্যাচ খেলে আগে একবারই ৪ উইকেট নিতে পেরেছিলেন সানি। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে এই মিরপুরেই রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১৪ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি সিলেট সুপারস্টার্সের বিপক্ষে।
এই সংস্করণে অবশ্য এক দফায় ৫ উইকেটের স্বাদও তিনি পেয়েছেন। তবে সেটি বিপিএলে নয়। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ গেমসের ক্রিকেটে ঢাকা মেট্রোপলিসের হয়ে বগুড়ায় ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে।
২০ ওভারের ক্রিকেটে নতুন বলে বোলিংয়ে এমনিতে বিশেষজ্ঞ মনে করা হয় সানিকে। চট্টগ্রামের বিপক্ষে এই ম্যাচে অবশ্য আক্রমণে আনা হয় তাকে চতুর্থ বোলার হিসেবে। যদিও পাওয়ার প্লেতেইে বোলিংয়ে আসেন তিনি, বল তখনও নতুন। নিজের ছাপ রাখতেও সময় নেননি। প্রথম ওভারেই ইরফান শুক্কুরকে ফিরিয়ে দলকে এনে দেন প্রথম ব্রেক থ্রু।
দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান সানি নিজের পরের ওভারেই। এবার তার শিকার আরেক বাঁহাতি, আফিফ হোসেন। আউট হওয়ার ধরনেও আছে মিল। ইরফানের মতো আফিফও ক্যাচ দেন স্লগ সুইপ খেলে।
ওই ওভারেই তৃতীয় শিকারের দেখা পান তিনি চট্টগ্রাম অধিনায়ক শুভাগত হোমকে বিদায় করে। তার বোলিং বিশ্লেষণ তখন ২-০-৯-৩। তিন ওভারের স্পেলের পরের ওভারে অবশ্য উইকেটের দেখা তিনি পাননি।
নিজের শেষ ওভারটি করতে আসেন পঞ্চদশ ওভারে। সেই ওভারে উসমানকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন তিনি চার উইকেট। এক প্রান্ত আগলে তখন চট্টগ্রামকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন পাকিস্তানি এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু সানির বলে সুইপ করতে গিয়ে বিভ্রান্ত হন তিনি ফ্লাইটে। এলবিডব্লিউ হয়ে যান ২৯ বলে ৩০ রান করে।
এবারের বিপিএলে আগের ৭ ম্যাচে সানি উইকেট ছিল ৬টি। ওভারপ্রতি রান যদিও দিয়েছিলেন ছয়ের কম। শেষ ম্যাচে দারুণ বোলিংয়ে মৌসুম শেষ করলেন ১০ উইকেট নিয়ে।
এই ম্যাচের চার উইকেটে বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে উইকেট শিকারের তালিকায় যৌথভাবে পাঁচে উঠে এসেছেন সানি। ৩৬ বছর বয়সী স্পিনারের মোট উইকেট ৭৯টি। সমান উইকেট পেসার শফিউল ইসলামেরও।