রিয়ান পারাগের বিশ্বাস, একদিন না একদিন ভারতের হয়ে তিনি নিশ্চিতভাবেই খেলবেন।
Published : 30 May 2024, 01:06 PM
সেই ছেলেবেলা থেকে যে লক্ষ্য হৃদয়ে গেঁথে আছে, যে স্বপ্ন বুকে পুষে ক্রিকেটের পথে ছুটে চলা শুরু, সেটি পূরণ করেই ছাড়বেন রিয়ান পারাগ। তরুণ এই ব্যাটসম্যানের বিশ্বাস, একদিন না একদিন তিনি ভারতের হয়ে নিশ্চিতভাবেই খেলবেন।
এবারের আইপিএলে আলো ছড়ানোর পর বিশ্বাসের জোর আরও বেড়েছে পারাগের। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে এবার ৫২.০৯ গড়ে ও প্রায় দেড়শ স্ট্রাইক রেটে ৫৭৩ রান করেছেন তিনি। শেষের দিকে যদিও তিনি শুরুর মতো অতটা ভালো করতে পারেননি। তার পরও টুর্নামেন্টের রানের তালিকায় ২২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান ছিলেন তৃতীয়।
এই পারফরম্যান্স যথেষ্ট হয়নি ভারতে বিশ্বকাপ দলে জায়গা আদায় করে নিতে। তবে ভবিষ্যতে যে তিনি দেশের হয়ে খেলবেন, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই তার নিজের মনে। ভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআইকে সেই বিশ্বাসের কথাই শোনালেন তিনি।
“একটা সময় আমাকে নিতেই হবে দলে, তাই না? আমার বিশ্বাস এটাই, ভারতের হয়ে আমি খেলব। সেটা কখন, তা নিয়ে ভাবনা নেই আমার। এমনকি যখন রান করতে পারছিলাম না, তখনও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছি যে, ভারতে হয়ে খেলবই”।
“এটা আমার নিজের প্রতি বিশ্বাস, দম্ভ দেখিয়ে বলছি না। আমার ১০ বছর বয়স থেকেই যখন ক্রিকেট খেলতে শুরু করি, তখন থেকেই বাবার সঙ্গে আমার পরিকল্পনা এটা। যা কিছুই হোক না কেন, ভারতের হয়ে খেলবই।”
রিয়াগ পারাগের বাবা পারাগ দাস সাবেক ক্রিকেটার। ৪৩টি প্রথম শ্রেণির ও ৩২টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন সাবেক এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার, কিন্তু ভারতের হয়ে খেলতে পারেননি। পরে ছেলেকে তৈরি করেছেন সেই স্বপ্নের অনুসারী করে।
এবারের বিশ্বকাপ দিয়েই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিতে পারেন রোহিত শার্মা, ভিরাট কোহলিরা। সেক্ষেত্রে ভারতীয় দলে জায়গা ফাঁকা হবে। বিশ্বকাপের পর এমনিতেই দলে কিছু পরিবর্তনের পালা আসেই। তাছাড়া এবার বিশ্বকাপের পরপরই জিম্বাবুয়ে সফর আছে ভারতের। সেখানে মূলত আইপিএলের পারফরমারদের দিয়েই দল গড়া হতে পারে। পারাগের তাই সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে প্রবলভাবেই।
তবে পারাগ যথারীতি সম্ভাব্য সময় নিয়ে কথা বলতেই নারাজ।
“সুযোগটা এটা পরের সফরেই আসবে নাকি ছয় মাস পর কিংবা এক বছর পর… এসব ভাবনা আমি আলে কখনোই মাথায় ঢুকতে দেই না। সময় নিয়ে আমার ভাবনা নেই। কাজটা নির্বাচকদের।”
এবারের আগে আইপিএলে ৫ মৌসুম খেলে কখনোই এক আসরে ২০০ রান করতে পারেননি তিনি। তুমুল প্রতিভাবান হিসেবে পরিচিতি তার বরাবরই, ঘরোয়া অন্যান্য টুর্নামেন্টে ভালোও করছিলেন। কিন্তু আইপিএলে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারছিলেন না। তার ব্যাটিং পজিশনও অবশ্য একটা ব্যাপার ছিল এখানে। মূলত ফিনিশারের ভূমিকায় তাকে দেখা গেছে বেশির ভাগ সময়। তবে এবার তাকে টানা চার নম্বরে খেলিয়ে গেছে দল।
পারাগ বললেন, ব্যাটিং পজিশন আর নিজের মানসিকতা, দুটির পরিবর্তনেই এবারের সাফল্য এসেছে।
“এবারের আইপিএলে আপনারা আমাকে যেভাবে দেখেছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে মূলত সেভাবেই খেলি। দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেই, প্রত্যাশার ভার বয়ে চলি। যখন নিজে এভাবে দায়িত্ব নিয়ে খেলি, তখনই আমার সেরা পারফরম্যান্স বেরিয়ে আসে। আইপিএলে আগে সেটা করতে পারছিলাম না। অনেক বেশি চাপ নিতাম, একটু বেশিই প্রত্যাশা ছিল নিজের কাছে, মৌলিক কাজগুলি করতে ভুল করছিলাম।”
“এবার এই জায়গাতেই নিজেকে শুধরে নিয়েছি। প্রিয় পজিশন চার নম্বরে খেলতে পারাও সহায়তা করেছে। নিখুঁতভাবে কাজে দিয়েছে তা। আইপিএলে ভালোর চেয়ে মন্দই বেশি কেটেছে আমার। তবে এই পর্যায়ের ক্রিকেটে খেলতে পারি, এই বিশ্বাসটা সবসময়ই ছিল। স্বপ্ন পূরণ করতে পারি, সেই বিশ্বাসটা কখনোই হারাইনি।”