৬ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই সেঞ্চুরি উপহার দিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
Published : 07 Feb 2023, 09:14 PM
গুডাকেশ মোটির ফুল লেংথ বল স্লগ সুইপে স্কয়ার লেগ দিয়ে ওড়ালেন গ্যারি ব্যালান্স। টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনে সেঞ্চুরির উপলক্ষটা ব্যাট-হেলমেট উঁচিয়ে ধরে করলেন উদযাপন। দুর্দান্ত বোলিংয়ে পর ব্যাট হাতেও আলো ছড়ালেন ব্র্যান্ডন মাভুটা। তাদের দারুণ জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জবাবটা ভালোই দিয়েছে জিম্বাবুয়ে।
বুলাওয়ায়ো টেস্টের চতুর্থ দিন ৯ উইকেটে ৩৭৯ রান করে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে স্বাগতিকরা। ৬৮ রানের লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে সফরকারীরা দিন শেষ করেছে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২১ রানে। সব মিলিয়ে তারা এগিয়ে ৮৯ রানে।
দুইশর আগে ৭ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়েকে লড়াইয়ে রাখেন ব্যালান্স ও মাভুটা। দুইজনে গড়েন ১৩৫ রানের জুটি। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট ফিফটি করা মাভুটা থামেন ৯ চারে ৫৬ রান করেন।
জন্মভূমি জিম্বাবুয়ের হয়ে সাদা পোশাকে প্রথমবার খেলতে নামা ব্যালান্স অপরাজিত থাকেন ১৩৭ রান করে। তার ২৩১ বলের ইনিংসটি সাজানো ২ ছক্কা ও ১২ চারে।
জিম্বাবুয়ের হয়ে অভিষেকে এটিই সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। ১৯৯২ সালে ভারতের বিপক্ষে ডেভ হটনের করা ১২১ রান ছিল আগের সেরা।
এই ইনিংসে বিরল এক কীর্তিও গড়েন ব্যালান্স। ভিন্ন দুই দেশের হয়ে টেস্টে সেঞ্চুরি করা ইতিহাসের দ্বিতীয় ক্রিকেটার তিনি। ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের হয়ে ২৩ টেস্ট খেলে চারটি সেঞ্চুরি করেছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
ভিন্ন দুই দেশের হয়ে টেস্ট খেলেছেন মোট ১৬ জন। এর মধ্যে দুই দেশের হয়েই সেঞ্চুরির কীর্তি এতদিন ছিল শুধু অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলা কেপলার ওয়েসেলসের।
৩ উইকেটে ১১৪ রান নিয়ে মঙ্গলবার দিন শুরু করা জিম্বাবুয়েকে বেশিক্ষণ টানতে পারেননি আগের দিন ফিফটি করা ইনোসেন্ট কাইয়া। তাকে ৬৭ রানে এলবিডব্লিউ করে দেন আলজারি জোসেফ।
এরপর দ্রুত আরও দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় আফ্রিকার দলটি। লাঞ্চের আগে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরে যান উইকেটে অনেকটা সময় কাটানো ওয়েলিংটন মাসাকাদজাও।
১৯২ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা দলের হাল ধরেন ব্যালান্স ও মাভুটা। ২০১৭ সালের পর টেস্ট খেলতে নামা ব্যালান্স ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে ১২৬ বলে করেন ফিফটি। তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া মাভুটার পঞ্চাশ আসে ১০৭ বলে।
ফিফটির পর রানের গতি বাড়িয়ে দেন ব্যালান্স। ক্যারিয়ারের পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ১৯০ বলে। এই শতকের মধ্য দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা স্মরণীয় করে রাখেন তিনি।
আগের দিন টেস্টে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট নেওয়া মাভুটার ইনিংস থামে জেসন হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে। এক ওভার পর ফিরে যান ভিক্টর নিয়াউচিও। এর কয়েক ওভার পর ইনিংস ঘোষণা করে দেয় জিম্বাবুয়ে।
দিনের শেষ বেলায় ব্যাটিংয়ে নেমে নিরাপদে বাকিটা সময় কাটিয়ে দেন প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি ও ডাবল সেঞ্চুরি উপহার দেওয়া ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও তেজনারাইন চন্দরপল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪৪৭/৬ ডিক্লে.
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ১২৫ ওভারে ৩৭৯/৯ ডিক্লে. (আগের দিন ১১৪/৩) (কাইয়া ৬৭, ব্যালান্স ১৩৭*, সিগা ২, ইভান্স ৭, মাসাকাদজা ১৫, মাভুটা ৫৬*, নিয়াউচি ১৩, এনগারাভা ১৯*; রোচ ১৫-৪-৩৫-১, জোসেফ ২৬-২-৭৫-৩, মেয়ার্স ১০-৪-২২-০, গুডাকেশ ৩৩-১০-১১০-২, হোল্ডার ১৭-২-৫৫-২, চেইস ১৪-১-৪৫-০, ব্র্যাথওয়েট ৫-১-১২-১, রিফার ৩-০-৭-০, ব্ল্যাকউড ২-০-১১-০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৩ ওভারে ২১/০ (ব্র্যাথওয়েট ১১*, চন্দরপল ১০*; নিয়াউচি ৫-৩-৪-০, মাসাকাদজা ৬-২-১১-০, ইভান্স ২-১-৬-০)