চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড গড়েছেন ইংলিশ ওপেনার।
Published : 22 Feb 2025, 07:12 PM
নব্বই ছোঁয়ার পর চাপ পেয়ে বসতে পারে যেকোনো ব্যাটসম্যানকে। কিন্তু বেন ডাকেট সেসব যেন তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন। ব্যক্তিগত ৯৩ রানে দাঁড়িয়ে মারলেন দুর্দান্ত এক বাউন্ডারি। পরের বলেই আরেকটি হাঁকিয়ে কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কের ঠিকানায় পৌঁছে গেলেন ইংলিশ ওপেনার।
সেখানেই না থেমে আরও এগিয়ে গেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। গড়লেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড। এই টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ দলীয় রানের কীর্তি গড়ল ইংল্যান্ডও।
লাহোরে শনিবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চমৎকার ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ার সেরা ১৬৫ রান করেন ডাকেট। তার ১৪৩ বলের ইনিংসটি সাজানো ৩ ছক্কা ও ১৭ চার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দেড়শ করলেন তিনি।
বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টে এতদিন সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি ছিল নিউ জিল্যান্ডের ন্যাথান অ্যাস্টলের। ২০০৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে অপরাজিত ১৪৫ রান করেছিলেন তিনি।
ওই ম্যাচেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ডটি গড়েছিল কিউইরা। তাদের ৪ উইকেটে করা ৩৪৭ রান এবার ছাড়িয়ে গেল ইংল্যান্ড। ডাকেটের সেঞ্চুরি ও জো রুটের ৬৮ রানে ৮ উইকেটে ৩৫১ রান করেছে ইংলিশরা।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংলিশদের আগের সর্বোচ্চ ছিল ৮ উইকেটে ৩২৩, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০০৯ সালে। এই প্রতিযোগিতায় এনিয়ে চারবার তিনশ করতে পারল তারা, আগের তিনবারই জিতেছিল দলটি।
গত কয়েক মাস ধরেই দারুণ ছন্দে আছেন ডাকেট। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শুরুটা যদিও তার ছিল হতাশাজনক। ২০১৬ সালে অভিষেকের পর ৬ বছর দলের বাইরে ছিলেন তিনি। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ফেরার পর সেপ্টেম্বরে উপহার দেন এই সংস্করণে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। ১০৭ রানের অপরাজিত ওই ইনিংস ছিল চার নম্বরে নেমে।
আবার কয়েক মাস সুযোগ না পাওয়া ডাকেটকে গত সেপ্টেম্বরে ওপেনার হিসেবে ফেরায় ইংল্যান্ড। এই পজিশনে প্রায়ই দলকে ভালো শুরু এনে দিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু তার ইনিংস বড় করতে না পারা নিয়ে চলছিল চর্চা।
এখন অবশ্য ধারাবাহিকভাবে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন ডাকেট। সবশেষ ৯ ওয়ানডে ইনিংসে পাঁচটি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলেছেন তিনি। যার মধ্যে তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পেয়েছেন দুইবার।
এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডের শুরুটা হয় পাওয়ার প্লেতে টপ অর্ডারের দুইজনকে হারিয়ে। একটি করে ছক্কা-চারে ১০ রানে ফেরেন ফিল সল্ট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবার তিনে নেমে ১৫ রান করেন জেমি স্মিথ।
৪৩ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে চাপে পড়তে দেননি ডাকেট। অভিজ্ঞ জো রুটের সঙ্গে জুটি গড়ে এগিয়ে নেন ইনিং। স্পেন্সার জনসনকে চার মেরে ৪৯ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তিনি। কয়েক ওভার পর রুটও পান ফিফটির ছোঁয়া, ৫৬ বলে।
পঞ্চাশের পর আরেকটু দ্রুত রান বাড়াতে থাকেন ডাকেট। আরেক প্রান্তে রুটও খেলছিলেন স্বচ্ছন্দে; কিন্তু অ্যাডাম জ্যাম্পাকে সুইপ করে বাজে তার বিদায় ঘণ্টা। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। ভাঙে ১৫৫ বল স্থায়ী ১৫৮ রানের জুটি।
পরের ওভারেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ডাকেট, ৯৫ বলে। পঞ্চাশ থেকে শতক ছুঁতে তার লাগে কেবল ৪৬ বল।
হ্যারি ব্রুকের দ্রুত বিদায়ের পর জস বাটলার কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন ডাকেটকে। তাদের জুটিতে আসে ৬১ রান, যেখানে অগ্রণী ছিলেন ডাকেটই। দারুণ খেলা ডাকেট দেড়শতে পা রাখেন ৪৫তম ওভারে, ১৩৪ বলে।
পরপর দুই ওভারে লিয়াম লিভিংস্টোন ও ডাকেটকে হারায় ইংল্যান্ড। ন্যাথান এলিসের বলে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন লিভিংস্টোন। মার্নাস লাবুশেনের মন্থর গতির নিচু হয়ে যাওয়া বলে এলবিডব্লিউ হয়ে শেষ হয় ডাকেটের চমৎকার ইনিংসটি।
শেষ দিকে জফ্রা আর্চারের ১০ বলে ২১ রানের ক্যামিও ইনিংসে সাড়ে তিনশ ছাড়ায় ইংলিশরা।