আইসিসি অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪
মেয়েদের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন চামারি আতাপাত্তু, লরা উলভার্ট, অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড ও অ্যামেলিয়া কার।
Published : 30 Dec 2024, 04:27 PM
বছরজুড়ে ব্যাট হাতে দারুণ পারফরম্যান্সে টানা দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসির বর্ষসেরা পুরুষ ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ট্রাভিস হেড। ‘স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্স ট্রফি’ জয়ের লড়াইয়ে তার সঙ্গী ইংল্যান্ডের দুই ব্যাটসম্যান জো রুট, হ্যারি ব্রুক ও ভারতের পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ।
মেয়েদের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার ‘র্যাচেল হেহো ফ্লিন্ট ট্রফি’র সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন শ্রীলঙ্কার চামারি আতাপাত্তু, দক্ষিণ আফ্রিকার লরা উলভার্ট, অস্ট্রেলিয়ার অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড ও নিউ জিল্যান্ডের অ্যামেলিয়া কার।
এই দুই সংক্ষিপ্ত তালিকা রোববার প্রকাশ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা।
ট্রাভিস হেড (অস্ট্রেলিয়া)
এই বছর ৯ টেস্টে ৪০.৫৩ গড়ে হেড করেন ৬০৮ রান। সেঞ্চুরি করেন তিনটি। যার দুটি চলতি বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে টানা দুই ম্যাচে। অ্যাডিলেইডে গোলাপি বলের টেস্টে ১৪১ বলে ১৪০ রানের পর ব্রিজবেনে করেন ১৬০ বলে ১৫২। আরেকটি সেঞ্চুরি করেন তিনি বছরের শুরুতে অ্যাডিলেইডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
ওয়ানডেতে এই বছর ৫ ম্যাচে ৬৩ গড় ও ১২০ স্ট্রাইক রেটে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান করেন ২৫২ রান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রান তাড়ায় খেলেন ১২৯ বলে অপরাজিত ১৫৪ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস।
আর টি-টোয়েন্টিতে বছরে ১৫ ম্যাচে ১৭৮.৪৭ স্ট্রাইক রেটে তিনি করেন ৫৩৯ রান।
গত বছর বর্ষসেরার লড়াইয়ে থাকলেও পুরস্কারটি পাননি হেড, জেতেন তার স্বদেশী প্যাট কামিন্স।
জো রুট (ইংল্যান্ড)
এই বছরে টেস্টের সর্বোচ্চ স্কোরার রুট। ১৭ ম্যাচে ৫৫.৫৭ গড়ে রান করেন ১ হাজার ৫৫৬। ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মতো এক পঞ্জিকাবর্ষে হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।
বছরে সেঞ্চুরি করেন তিনি ৬টি। যার একটি ডাবল, অক্টোবরে মুলতানে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেন ২৬২ রানের ইনিংস। অ্যালেস্টার কুককে ছাড়িয়ে টেস্টে ইংল্যান্ডের সফতলতম ব্যাটসম্যানও হয়ে যান এই বছরে।
টেস্টে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির তালিকায় পঞ্চম স্থানে রাহুল দ্রাবিড়ের পাশে বসেন তিনি ৩৬ সেঞ্চুরি নিয়ে।
হ্যারি ব্রুক (ইংল্যান্ড)
এই বছর ১২ টেস্টে ৫৫ গড়ে ব্রুক করেন ১ হাজার ১০০ রান। সেঞ্চুরি করেন ৪টি। যার একটি ট্রিপল, মুলতানে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩১৭। ইংল্যান্ডের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরির স্বাদ পান তিনি।
নিউ জিল্যান্ড সফরে সেঞ্চুরি করেন তিনি টানা দুই টেস্টে। ২০০৮ সালের পর প্রথমবার নিউ জিল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় ইংল্যান্ড।
টেস্ট ব্যাটসম্যানদের র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেও ওঠেন ব্রুক। পরে তাকে টপকে শীর্ষে ফেরেন রুট।
এছাড়া বছরে ৫ ওয়ানডেতে ৭৮ গড়ে একটি সেঞ্চুরি ও দুটি ফিফটিতে ব্রুক করেন ৩১২ রান। টি-টোয়েন্টিতে ৬ ইনিংসে করেন ১৬৩ রান।
জাসপ্রিত বুমরাহ (ভারত)
এই বছর ১৩ টেস্টে ১৪.৯২ গড়ে বুমরাহ নেন ৭১ উইকেট। টেস্ট ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে ১৫ এর নিচে গড়ে এক পঞ্জিকাবর্ষে অন্তত ৭০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন ৩১ বছর বয়সী এই পেসার।
এর মধ্যে চলতি বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির প্রথম ৪ টেস্টে তার শিকার ৩০ উইকেট। ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ৪ বার। নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শার্মার অনুপস্থিতিতে পার্থে প্রথম টেস্টে ৮ উইকেট নিয়ে দলের জয়ের নায়ক ছিলেন তিনিই।
বছরে টি-টোয়েন্টি খেলেন তিনি ৮টি, সবগুলোই বিশ্বকাপে। যেখানে ওভারপ্রতি ৪.১৭ করে রান দিয়ে উইকেট নেন ১৫টি। দ্বিতীয়বারের মতো ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে তিনি রাখেন বড় অবদান।
চামারি আতাপাত্তু (শ্রীলঙ্কা)
শ্রীলঙ্কার সব সংস্করণের অধিনায়ক ব্যাটে-বলে আলো ছড়ান ২০২৪ সালে। সীমিত ওভারের দুই সংস্করণ মিলিয়ে ব্যাটিংয়ে এক হাজারের বেশি রান করার পাশাপাশি হাত ঘুরিয়ে উইকেট নেন ৩০টি।
ওয়ানডেতে ৯ ইনিংসে ৬৫.৪২ গড় ও ১০১.১০ স্ট্রাইক রেটে করেন ৪৫৮ রান। একটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি ফিফটি করেন দুটি।
এই সংস্করণে অফ স্পিনে ওভারপ্রতি ৪.৬১ করে রান দিয়ে বছরে উইকেট নেন ৯টি।
এই বছর টি-টোয়েন্টিতে ২১ ম্যাচ খেলে দুই সেঞ্চুরি ও চার ফিফটিতে ৭২০ রান করেন আতাপাত্তু। মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে এক পঞ্জিকাবর্ষে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
আর বল হাতে ১৬.৮ গড়ে নেন ২১ উইকেট, সেরা বোলিং ২৯ রানে ৪ উইকেট।
২০২৪ সালে মেয়েদের বর্ষসেরা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকাতেও আছেন তিনি।
লরা উলভার্ট (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এই বছরে ওয়ানডেতে ১২ ইনিংসে ৬৯৭ রান করেন ৮৭.১২ গড় ও ৮৭.৩৪ স্ট্রাইক রেটে। সেঞ্চুরি ও ফিফটি সমান তিনটি করে।
বছরে ১৯ টি-টোয়েন্টিতে ৩৯.৫৮ গড়ে ৬৭৩ রান করেন উলভার্ট। ক্যারিয়ারের একমাত্র টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিটিও করেন তিনি এই বছর।
আর বছরে ৩ টেস্টে ৩৭.১৬ গড়ে তিনি করেন ২২৩ রান। সেঞ্চুরি ও ফিফটি একটি করে।
আতাপাত্তুর মতো তিনিও এই বছরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির বর্ষসেরার সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন।
অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড (অস্ট্রেলিয়া)
এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার ২০২৪ সালে টেস্ট খেলেন একটি। পার্থে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওই ম্যাচে ছয়ে নেমে ব্যাট হাতে তিনি খেলেন ২৫৬ বলে ২১০ রানের ইনিংস। মেয়েদের টেস্টে ছয় নম্বরে নেমে সর্বোচ্চ ইনিংস এটি। হাত ঘুরিয়ে ওই ম্যাচে তিনি নেন ৫ উইকেট।
বছরে ১২ ওয়ানডেতে ৫২.৭১ গড় ও ১০০.২৭ স্ট্রাইক রেটে তিনি করেন ৩৬৯ রান। ওভারপ্রতি ৪.১৯ করে রান দিয়ে উইকেট নেন ১৩টি। এছাড়া টি-টোয়েন্টিতে ১৭ ম্যাচে নেন ১৯ উইকেট।
অ্যামেলিয়া কার (নিউ জিল্যান্ড)
এই লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার বছরে ৯ ওয়ানডেতে করেন ২৬৪ রান। উইকেট নেন ১৪টি। সেরা বোলিং ৪২ রানে ৪ উইকেট।
১৮ টি-টোয়েন্টিতে করেন ৩৮৭ রান। উইকেট নেন ২৯টি। মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে এক পঞ্জিকাবর্ষে যা সর্বোচ্চ।
প্রথমবারের মতো নিউ জিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে তার ছিল বড় অবদান। আসরে ব্যাট হাতে ১৩৫ রান করার পাশাপাশি বোলিংয়ে ১৫ উইকেট নেন তিনি।