জাতীয় ক্রিকেট লিগ
এক ম্যাচ বাকি থাকতেই জাতীয় ক্রিকেট লিগে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা জাগিয়েছে সিলেট।
Published : 25 Nov 2024, 08:49 PM
প্রথম ইনিংসে রেজাউর রহমান রাজার তোপে পড়া বরিশাল বিভাগ দ্বিতীয়বার পুড়ল সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদের আগুনে বোলিংয়ে। দেড়শর আগে গুটিয়ে হারের শঙ্কায় তারা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা জোরাল করল সিলেট বিভাগ।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডে সিলেটের দারুণ দিনে ফিফটির দেখা পেয়েছেন খুলনার এনামুল হক ও রংপুরের নাঈম ইসলাম। খালেদ, তোফায়েল ছাড়াও বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন আলআমিন হোসেন, আনিসুল ইসলামরা।
শিরোপা দুয়ারে সিলেট
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন দিন শেষে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছে সিলেট। শেষ দিন সবকটি উইকেট হাতে রেখে ১০৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামবে তারা।
প্রথম ইনিংসে বরিশালের ৩০৪ রানের জবাবে সোমবার ৩৪২ রানে অল আউট হয় সিলেট। ৩৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়বার মাত্র ১৪২ রানে গুটিয়ে যায় বরিশাল।
আগের ৫ রাউন্ডে ৩ জয় ও ২ ড্রয়ে ২৯ পয়েন্ট পাওয়া সিলেট এই ম্যাচ জিতলে তাদের পয়েন্ট হয়ে যাবে ৩৭। তখন ২১ পয়েন্টে থাকা ঢাকা মেট্রোর বাকি দুই ম্যাচে বোনাস পয়েন্ট না পেলে সিলেটকে টপকে যাওয়া সম্ভব হবে না।
আর তা হলে জাতীয় লিগের ইতিহাসে প্রথমবার শিরোপার স্বাদ পাবে সিলেট।
৬ উইকেটে ২১৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা সিলেট শুরুতেই হারায় আসাদুল্লা আল গালিবের উইকেট। এরপর অষ্টম উইকেটে ৯৪ রান যোগ করেন তোফায়েল ও রাজা। ৮৪ বলে ৬৪ রান করেন তোফায়েল। রাজার ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান।
শেষ দিকে খালেদের ক্যামিও ইনিংসে সাড়ে তিনশর কাছে যায় সিলেট।
পরে দ্বিতীয়বার ব্যাটিং করতে নেমে লড়াই করতেই পারেনি বরিশাল। খালেদের তোপে মাত্র ৭৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।
সপ্তম উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়েন মইন খান ও সোহাগ গাজী। মইনের ব্যাট থেকে আসে ৩২ রান। সোহাগ করেন ৩৫ রান।
সিলেটের হয়ে খালেদ নেন ৪ উইকেট, তোফায়েলের শিকার ৩টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে)
বরিশাল ১ম ইনিংস: ৯৩.২ ওভারে ৩০৪
সিলেট ১ম ইনিংস: ১০২.২ ওভারে ৩৪২ (আগের দিন ২১৭/৬) (গালিব ০, তোফায়েল ৬৪, রাজা ৩৫, খালেদ ১৬, ইবাদত ০*; রুয়েল ২২-৩-৭৯-৩, মহিউদ্দিন ১৪-২-৫৪-১, তানভির ২৩.২-৬-৫৭-১, সালমান ৬-১-২১-০, মইনুল ৮-২-২১-১, সোহাগ ১১-০-২৯-২, মইন ১২-১-৪৭-১, ইফতেখার ৬-০-২১-১)
বরিশাল ২য় ইনিংস: ৩৫.৩ ওভারে ১৪২ (ইফতেখার ৭, মজিদ ১৯, আদিল ১৫, তাসামুল ০, সালমান ১২, মইন ৩২, মইনুল ০, সোহাগ ৩৫, তানভির ৬, মহিউদ্দিন ১, রুয়েল ৪*; ইবাদত ৫-০-২২-১, নাসুম ১৩.৩-১-৪৭-২, খালেদ ৮-২-১৮-৪, রাজা ৫-০-২৯-০, তোফায়েল ৪-১-১৭-৩)
খুলনা-চট্টগ্রাম ম্যাচে শেষ দিনের রোমাঞ্চের অপেক্ষা
আল আমিন হোসেনের দারুণ বোলিংয়ে চট্টগ্রামের বিপক্ষে মাঝারি পুঁজি নিয়ে লড়াই জমিয়ে তুলেছে খুলনা। শেষ দিন তাদের প্রয়োজন ৩ উইকেট আর চট্টগ্রামের করতে হবে ৮৬ রান।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৯ রান করে খুলনা। চট্টগ্রামের সামনে দাঁড়ায় ২০৪ রানের লক্ষ্য। রান তাড়ায় ১১৮ রান করতেই ৭ উইকেট হারিয়েছে চট্টগ্রাম।
খুলনার হয়ে ১২ চারে ১১৫ বলে ৭৫ রান করেন এনামুল হক। দলকে দেড়শ পার করিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর শেখ পারভেজ রহমান ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৪৯ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেললে দুইশ ছাড়ায় খুলনা।
এনামুল হক আশিক নেন ৪ উইকেট।
পরে আলআমিনের তোপে পড়ে চট্টগ্রাম। মাত্র ৮০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। ইরফান শুক্কুর ৩২ ও ইয়াসির আলি চৌধুরি করেন ২৬ রান।
শেষ দিকে আশরাফুল হাসানের ২৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে আর উইকেট হারায়নি চট্টগ্রাম। আহমেদ শরিফের সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন জুটির সংগ্রহ ৩৮ রান।
চমৎকার বোলিংয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন আলআমিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা ১ম ইনিংস: ২০৪
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ২২০
খুলনা ২য় ইনিংস: ৫৭.৩ ওভারে ২১৯ (আগের দিন ৫৬/১) (এনামুল ৭৫, আরিদুল ৪, হাসানুজ্জামান ০, রবিউল ৬, মিঠুন ৩১, নাহিদুল ৬, পারভেজ ৫২, মেহেদি ২, মাসুম ৮*, আলআমিন ০; ফাহাদ ৮-১-৩৫-১, নাঈম ১৫-৪-৪৭-০, এনামুল ১৬-৩-৫৪-৪, আশরাফুল ৮.৩-২-৩৬-৩, শরিফ ১০-১-৩১-২)
চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২০৪) ৩০ ওভারে ১১৮/৭ (সাদিকুর ৫, পারভেজ ১০, সাজ্জাদুর ১, সাব্বির ৫, ইয়াসির ২৬, ইরফান ৩২, নাঈম ০, শরিফ ৫*, আশরাফুল ২৮*; আলআমিন ১২-৩-৫৫-৪, মাসুম ৭-১-১৬-২, মেহেদি ৭-০-৩২-১, পারভেজ ৪-১-১০-০)
নাঈমের ফিফটির পর ফলো-অনের শঙ্কায় রংপুর
কক্সবাজার একাডেমি মাঠে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ফলো-অনের শঙ্কায় রংপুর। মেট্রোর ৪৭৫ রানের জবাবে তৃতীয় দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ২৫৩ রান। ২২২ রানে পিছিয়ে থেকে শেষ দিন নামবে তারা।
২ উইকেটে ৩২ রান নিয়ে দিন শুরু করা রংপুরকে শুরুতে এগিয়ে নেন আব্দুল্লাহ আল মামুন ও নাঈম ইসলাম। তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৮৭ রান। পরের দুই জুটিতেই ৫৫ রান করে পায় রংপুর।
দিনের শেষ দিকের ধসে অল্পেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় তারা। ১০ চার ও ১ ছক্কায় ২০৫ বলে ৮৮ রান করেন নাঈম। মামুনের ব্যাট থেকে আসে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৯৪ বলে ৪০ রান। দিন শেষে ৩৯ রানে অপরাজিত তানবীর হায়দার।
মেহেদি হাসান ও আনিসুল ইসলাম নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে)
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ১৪১.৩ ওভারে ৪৭৫
রংপুর ১ম ইনিংস: ৯২.৩ ওভারে ২৫৩/৯ (আগের দিন ৩২/২) (মামুন ৪০, নাঈম ৮৮, মিম ২৩, তানবীর ৩৯*, আরিফুল ২২, রবিউল ০, লিওন ১২, মেহেদি ০, নজরুল ২*; মেহেদি ২০-৩-৫৮-৩, আনিসুল ১৬-২-৬৬-৩, আলআমিন ৬-৩-১১-০, রকিবুল ২৪-১০-৩৫-০, আরিফ ১৩.৩-৫-৩২-২, আশরাফুল ৯-২-২৬-০, আমিনুল ২-০-৫-০)