ফরচুন বরিশালের শক্তিশালী দল দেখে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অন্য দলের ক্রিকেটাররাও বলেছে, এই দল না খেললেও চ্যাম্পিয়ন।
Published : 05 Feb 2025, 06:54 PM
টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা জেতার দুয়ারে ফরচুন বরিশাল। চার আসরের মধ্যে তারা তৃতীয়বার উঠে গেছে ফাইনালে। প্রত্যাশার পথ ধরেই তারা এগিয়ে গেছে শিরোপার মঞ্চে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই তাদেরকে বলা হয়েছে সবচেয়ে ফেভারিট। কোচ মিজানুর রহমান জানালেন, অন্য দলের ক্রিকেটাররাও মজা করে বলেছে, বরিশালের মাঠে খেলার দরকারই নেই, এমনিই চ্যাম্পিয়ন!
গত আসরের শিরোপা জেতা দল থেকে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমকে ধরে রেখেছিল বরিশাল। প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগে সরাসরি চুক্তিতে নিশ্চিত করে তাওহিদ হৃদয়কে। পরে প্লেয়ার্স ড্রাফটে প্রথম ডাকেই তারা দলে নেয় মাহমুদউল্লাহকে। এরপর দলে যোগ করে তারা নাজমুল হোসেন শান্ত, ইবাদত হোসেন, রিশাদ হোসেনদের।
কাগজে-কলমে এগিয়ে থাকা দলটি মাঠেও রাখে সামর্থ্যের ছাপ। প্রথম পর্বে ৯ ম্যাচ জিতে সবাইকে পেছনে ফেলে শীর্ষে থেকেই প্লে-অফে নাম লেখায় বরিশাল। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে প্রথম সুযোগই কাজে লাগিয়ে এখন শিরোপার খুব কাছে তামিম ইকবালের দল।
মিরপুরের একাডেমি মাঠে বুধবার ঐচ্ছিক অনুশীলনের পর সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রধান কোচ মিজানুর রহমান বললেন, টুর্নামেন্টের শুরুতেই চ্যাম্পিয়ন দলের তকমা পেয়ে গিয়েছিলেন তারা।
“আমরা যখন দল বানিয়েছি, সবাই বলেছে আমরা চ্যাম্পিয়ন। মিডিয়া বলেছে... (অন্য দলের) ক্রিকেটাররা বলেছে, আপনাদের তো খেলার দরকার নেই। এভাবে মজা নিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই আমরা দল করেছি। আমাদের টিম কম্বিনেশন দেখলেও তাই মনে হয়।”
“চ্যাম্পিয়ন হতে পারব কিনা সেটা ৭ তারিখে (ফাইনালে) বোঝা যাবে। আমরা ফাইনালে উঠেছি। আমাদের কম্বিনেশন, টিম বন্ডিং কাজ করেছে। আমরা প্রথম দিন থেকেই চেয়েছি যে ফাইনাল খেলব। সেই লক্ষ্যেই এগিয়েছি এবং আমরা যেতে পেরেছি।”
টুর্নামেন্টের প্রথম দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স। এরপর তাদের কীর্তিতে নাম লেখাতে পেরেছে শুধু কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, ২০২২ ও ২০২৩ সালে। এবার ঢাকা ও কুমিল্লার সাফল্যের পুনরাবৃতিতর হাতছানি বরিশালের সামনে।
সেই অভিযানে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের পাঁচজনকে এবারও নিয়েছে বরিশাল। দলটির প্রধান কোচের মতে, একই সমন্বয় ধরে রাখা পরপর ফাইনালে ওঠার বড় কারণ।
“আমাদের যে দলটা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। তো ফলাফল পাওয়ার কারণ হলো বন্ডিং। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেটাররা যখন খেলতে আসে দলের প্রতি একটা অনুভূতি কাজ করে। এই দরদের থেকেই ফল বের হয়। বেশিরভাগ ক্রিকেটার গত আসরে যারা খেলেছে, এবারও তারাই আছে। এটা একটা কারণ ফাইনালে ওঠার।”
গত আসরে মিজানুরই ছিলেন বরিশালের কোচ। তার সামনেও এখন ইয়ান পন্ট ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের পর পরপর দুই শিরোপা জয়ের হাতছানি।
বিপিএলের বাইরে ঘরোয়া ক্রিকেটেও সফল কোচদের একজন তিনি। চলতি মৌসুমের জাতীয় ক্রিকেট লিগে চার দিনের সংস্করণের পর টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টেও তার কোচিংয়ে রানার্সআপ হয় ঢাকা মেট্রো।
তবে পাদপ্রদীপের আলো ততটা পড়ে না দেশের অভিজ্ঞ এই কোচের ওপর। এসব নিয়ে অবশ্য আক্ষেপও নেই তার
“আন্ডাররেট... কারা রেট করে, কীভাবে রেট করে, সেটা তো আসলে যারা করে তারা বুঝবে। আমার কাজ হলো কোচিং করানো, ভালো কিছু করা। আমি চেষ্টা করি আমার তরফ থেকে। যারা বিচার করবে, আরেকটা জায়গা থেকে। তারা তাদের দৃষ্টিতে... ওইটা তো আমার হাতে নেই।”
“আমার হাতে যেটা, আমি চেষ্টা করি একটা দলকে কীভাবে সমন্বয় করা যায়। এই বছর ভালো হচ্ছে। জাতীয় লিগে চার দিনের সংস্করণ ও টি-টোয়েন্টিতে আমার দল ফাইনাল খেলেছে। গত বছর বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এবছরও ফাইনালে উঠেছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।”