প্রতিবাদস্বরূপ অ্যাশেজের লর্ডস টেস্টের পর থেকে ওভার-রেটের চার্জশিটে স্বাক্ষর করেননি ইংল্যান্ড অধিনায়ক।
Published : 04 Dec 2024, 09:15 PM
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট শেষের পর ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুনের সঙ্গে লম্বা সময় আলোচনা করতে দেখা যায় বেন স্টোকসকে। চার দিনে ম্যাচ শেষ হওয়ার পরও মন্থর ওভার-রেটের কারণে শাস্তি পাওয়ায় সামাজিক মাধ্যমে তিনি এক হাত নেন আইসিসিকে। খেলোয়াড়দের সঙ্গে আইসিসির যোগাযোগের ঘাটতির অভিযোগ তুলে আবারও ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ওভার-রেটের মানদণ্ড পুনর্বিবেচনা করতে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থার প্রতি অনুরোধও করেছেন স্টোকস।
সিরিজের প্রথম টেস্টে মন্থর ওভার-রেটের কারণে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে দুই দলেরই তিন পয়েন্ট করে কাটা হয়েছে। পাশাপাশি দুই দলের খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফির ১৫ শতাংশ করে জরিমানা করা হয়েছে।
শাস্তির পর টেস্ট চ্যাম্পিয়শিপের টেবিলে চার থেকে পাঁচ নেমে গেছে প্রথম চক্রের চ্যাম্পিয়ন নিউ জিল্যান্ড। তাদের পরেই আছে ইংল্যান্ড। এই চক্রে এখন পর্যন্ত মন্থর ওভার-রেটের কারণে মোট ২২ পয়েন্ট কাটা হয়েছে ইংলিশদের। এর মধ্যে গত অ্যাশেজে পাঁচ টেস্টের চারটিতেই মন্থর ওভার-রেটের জন্য কাটা যায় তাদের ১৯ পয়েন্ট!
টেস্টে মন্থর ওভার রেটের সংশোধিত নিয়ম অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতি ওভার কম করার জন্য ম্যাচ ফির পাঁচ শতাংশ জরিমানা করা হয়। সঙ্গে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজ হলে প্রতি ওভারের জন্য কাটা হয় একটি করে পয়েন্ট।
ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের শাস্তি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ইনস্টাগ্রামে স্টোকস লেখেন, “দারুণ বিষয় আইসিসি। ১০ ঘণ্টার খেলা বাকি থাকতেই আমরা ম্যাচ শেষ করেছি।”
ওয়েলিংটনে দ্বিতীয় টেস্টের আগে বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিষয়টি নিয়ে আবারও হতাশা প্রকাশ করলেন স্টোকস।
“দুই দলের দৃষ্টিকোণ থেকে সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় হলো যে, ম্যাচ তাড়াতাড়ি শেষ হয়েছে, সেখানে একটি ফলাফল ছিল। তবে আমি মনে করি হতাশাটি আসলে গত বছরের অ্যাশেজ থেকেই, যেখানে প্রথমবার আমি বিষয়টি নিয়ে ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের বলেছি। মূল বিষয়টি হলো, বিশ্বের কোথায় খেলাটা হচ্ছে এবং কোন ধরনের ক্রিকেট খেলা হচ্ছে। এশিয়াতে কখনোই ওভার-রেটের সমস্যা হয় না, কারণ সেখানে অনেক বেশি স্পিন খেলা হয়।”
“এখানে অনেক কৌশলগত সিদ্ধান্ত থাকে, যা একজন অধিনায়ককে নিতে হয়, সেটা বোলারের সঙ্গে আলোচনা হোক বা মাঠে ফিল্ডিং পরিবর্তন হোক। একজন অধিনায়ক হিসেবে আমি অনেক কিছু পরিবর্তন করতে পছন্দ করি এবং এক ওভারে ছয় বলে পুরোপুরি ভিন্ন ফিল্ডিং হতে পারে। কিন্তু বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয় না। বিশ্বের যেখানেই খেলতে যান না কেন, সময় ও নিয়ম একই। একজন খেলোয়াড়ের দৃষ্টিকোণ থেকে এই মতামত দেওয়া আমিই একমাত্র ব্যক্তি নই। আমরা এই বিষয়ে আইসিসির সঙ্গে আরও অনেক যোগাযোগ করতে চাই।”
এই বিষয়ে আইসিসির প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় বিরক্ত স্টোকস। প্রতিবাদ হিসেবে অ্যাশেজের লর্ডস টেস্টের পর থেকে ওভার-রেটের চার্জশিটে স্বাক্ষর করেননি বলে জানান তিনি। যদিও তিনি এবং নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথাম ক্রাইস্টচার্চে দলের ওভার-রেটের অপরাধের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন।
“ম্যাচ রেফারিদের সঙ্গে আমার যে দুটি আলোচনা হয়েছে, তা খুব ভালো হয়েছে। ম্যাচ রেফারিরা বিষয়টি খুব ভালোভাবে সামলেছেন এবং একজন খেলোয়াড়ের দৃষ্টিকোণ থেকে বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু ওভার-রেট নিয়ে আমার মন্তব্যের পর এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, আইসিসির আশেপাশে কারও কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া এখনও শুনতে পাইনি।”