এনসিএল টি-টোয়েন্টি
বরিশালের বিপক্ষে জিতে টিকে রইল সিলেট, আর চট্টগ্রামের বিপক্ষে খুলনার জয়ে নিশ্চিত হলো রংপুর ও ঢাকা মেট্রোর প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলা।
Published : 18 Dec 2024, 02:45 PM
আগের দিন বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দলকে অভাবনীয় এক জয়ের কাছে নিয়ে গিয়েও একটুর জন্য পারেননি মাহফুজুর রহমান রাব্বি। এবার তার কাছে দলের চাওয়া ছিল অন্যরকম ব্যাটিংয়ের। পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে তিনি উপহার দিলেন দায়িত্বশীল ইনিংস। ইবাদত হোসেন ও তোফায়েল আহমেদের চমৎকার বোলিংয়ের পর চাপের মুখে রাব্বির ব্যাটিং দৃঢ়তায় জিতল সিলেট।
জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে বুধবার সকালে অন্য ম্যাচেও দাপট দেখান বোলাররা। ছোট রানের ম্যাচে চট্টগ্রামকে হারিয়ে প্লে-অফ খেলার আশা আরেকটু বাড়ায় খুলনা।
বরিশালকে হারিয়ে টিকে রইল সিলেট
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের আউটার মাঠে বরিশালকে ২ উইকেটে হারায় সিলেট। ১০৯ রানের লক্ষ্যে ৭ বল আগে জিতে যায় রাব্বির নেতৃত্বাধীন দল।
ছয় ম্যাচে সিলেটের এটি দ্বিতীয় জয়। সমান ম্যাচে বরিশালের জয়ও দুইটি। শেষ রাউন্ডের ফলের ওপর নির্ভর করবে তাদের প্লে-অফে খেলা।
বল হাতে ১ উইকেটের পর ব্যাটিংয়ের ১৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলের জয় নিশ্চিত করেন রাব্বি। আগের ম্যাচে ৭ ছক্কায় ৮২ রানের ঝড় তুলেও ১ রানে পরাজয়ের হতাশার পর এবার তিনিই পান ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বরিশালকে শুরুতে চেপে ধরেন ইবাদত। প্রথম ওভারের শেষ বলে আব্দুল মজিদকে ফেরান তিনি। পরের ওভারের প্রথম বলে ফজলে মাহমুদকে আউট করে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। তবে অল্পের জন্য পাননি সেই স্বাদ।
এরপর তোফায়েল, সৈয়দ খালেদ আহমেদরাও উইকেট শিকারে যোগ দিলে মাত্র ৫৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে বরিশাল।
সাত নম্বরে নামা সোহাগ গাজী প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। তিনি সঙ্গী হিসেবে পান কামরুল ইসলামকে। দুজনের প্রচেষ্টায় কোনোমতে একশ পার করে বরিশাল। ১৪ বলে ১৬ রান করেন সোহাগ। কামরুলের ব্যাট থেকে আসে ২৬ বলে ২৫ রান।
সিলেটের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন ইবাদত ও তোফায়েল।
রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ২০ বলে ৩৮ রান তোলেন জিসান আলম ও তৌফিক খান। জিসান ৮ বলে ১২ ও তৌফিক ১৩ বলে ২১ রান করে ফেরার পর চাপে পড়ে যায় সিলেট।
পিনাক ঘোষ, আসাদুল্লাহ আল গালিব, তোফায়েলরা ব্যাটিংয়ে হতাশ করলে মাত্র ৫৬ রানে ৫ উইকেট হারায় সিলেট। এরপর ওয়াসিফ আকবর ও রাব্বি মিলে গড়েন ৩৩ রানের জুটি।
ওয়াসিফ ২০ রান করে আউট হওয়ার পর বোলারদের নিয়ে বাকি কাজ শেষ করেন রাব্বি। ২ চারে ৩০ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বরিশাল: ১৮.৪ ওভারে ১০৮ (ইফতেখার ২৬, মজিদ ০, ফজলে মাহমুদ ২, সালমান ১, আহরার ০, মইন ১১, সোহাগ ১৬, কামরুল ২৫, রুয়েল ৭, তানভির ১, মেহেদি ০*; ইবাদত ৩.৪-০-১৪-৩, খালেদ ৩-০-২৭-১, তোফায়েল ৪-১-১৫-৩, নাবিল ৩-০-১৭-১, জিসান ১-০-১০-১, নাঈম ২-০-১৩-০, রাব্বি ২-০-৬-১)
সিলেট: ১৮.৫ ওভারে ১০৯/৮ (তৌফিক ২১, জিসান ১২, পিনাক ৯, গালিব ০, ওয়াসিফ ২০, তোফায়েল ৬, রাব্বি ১৮*, নাঈম ৯, খালেদ ০, ইবাদত ১*; তানভির ৪-০-২৫-১, কামরুল ৪-০-২৩-৩, রুয়েল ৪-০-১৪-২, মেহেদি ৪-০-২২-১, সোহাগ ২.৫-০-১৯-০)
ফল: সিলেট ২ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মাহফুজুর রহমান রাব্বি
খুলনার জয়ে রংপুর-মেট্রোর হাসি
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চট্টগ্রামকে ৫ উইকেটে হারায় খুলনা। ১৩০ রানের লক্ষ্যে ৭ বল বাকি থাকতে পৌঁছে যায় নুরুল হাসান সোহানের দল।
ছয় ম্যাচে খুলনার এটি তৃতীয় জয়। চট্টগ্রামের জয়ও তিনটি। তবে চট্টগ্রাম এই ম্যাচে হেরে যাওয়ায় প্রথম কোয়ালিফায়ারের টিকেট নিশ্চিত হয়ে গেছে এরই মধ্যে ১০ পয়েন্ট পাওয়া রংপুর ও ঢাকা মেট্রোর। আর কোনো দল ৮ পয়েন্টের বেশি পাবে না।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। দলের পঞ্চাশ স্পর্শ করতেই লেগে যায় একাদশ ওভার। একপ্রান্ত ধরে রেখে ৩০ রান করতে ৩১ বল খেলেন মাহমুদুল হাসান জয়।
পঞ্চম উইকেটে শামিম মিয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নেন ইয়াসির আলি চৌধুরি। দুজনের ৪৪ বলের জুটিতে আসে ৪৭ রান।
শেষ তিন ওভারে ঝড় তোলেন ইয়াসির। ৪ চারের সঙ্গে ৩ ছক্কায় ৩০ বলে তিনি করেন ফিফটি। শেষ পর্যন্ত ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৯ বলে ৬১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
রান তাড়ায় এনামুল হকের সঙ্গে এ দিন ওপেনিংয়ে নামার সুযোগ পান আজিজুল হাকিম তামিম। প্রতিভার ঝলক আরেকবার দেখিয়ে ৩টি করে চার-ছক্কায় ২৫ বলে ৩৬ রান করেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক।
কিন্তু অন্যপ্রান্ত থেকে তেমন সমর্থন পাননি তিনি। দশ ওভারের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে খুলনা। তবে স্কোরবোর্ডে ততক্ষণে উঠে যায় ৭৭ রান।
শেষ ১০ ওভারে ৫৩ রানের চাহিদায় দেখেশুনে খেলে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান সোহান ও জিয়াউর রহমান। ২৩ বলে ২০ রান করেন সোহান। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হন জিয়াউর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম: ২০ ওভারে ১২৯/৬ (জয় ৩০, মুমিনুল ২, ইরফান ৪, শাহাদাত ৪, ইয়াসির ৬১, শামিম ১৫, সাজ্জাদুল ৮*; আল আমিন ৪-১-২৭-১, নাহিদুল ৪-০-২৫-১, মৃত্যুঞ্জয় ৩-০-২৪-০, জায়েদ ৪-০-২৬-২, পারভেজ ৪-০-১৮-২, সামিউন ১-০-৫-০)
খুলনা: ১৮.৫ ওভারে ১৩২/৫ (এনামুল ৪, আজিজুল ৩৬, মিঠুন ১৪, নাহিদুল ১২, সোহান ২০*, সামিউন ১, জিয়াউর ৩৯*; ইফরান ২-০-২২-১, ফাহাদ ২.৫-০-৩১-০, নাঈম ৪-০-১৩-১, শামিম ৪-১-১৮-১, মুমিনুল ৪-০-৩৪-১, জয় ১-০-৬-০, শরিফ ১-০-৭-০)
ফল: খুলনা ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: জিয়াউর রহমান