বাংলাদেশের ১৫তম বোলার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক করলেন রেজাউর রহমান রাজা।
Published : 14 Oct 2023, 05:33 PM
ছোট লক্ষ্যেও টপ ও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় বিপদে পড়ে গেল রংপুর। নিচের সারির ব্যাটসম্যানরা লড়াই করে জাগালেন আশা। তবে পারলেন না দলকে বাঁচাতে। দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচ জিতে নিল ঢাকা।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জাতীয় ক্রিকেট লিগে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুরকে ২৩ রানে হারিয়েছে ঢাকা। প্রথম স্তরের প্রথম রাউন্ডের এই ম্যাচে ১৫২ রানের লক্ষ্যে রংপুর গুটিয়ে গেছে ১২৮ রানে।
প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ১০২ রানের পর দ্বিতীয়টিতে ৩৯ রান করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন রনি তালুকদার। এছাড়া ঢাকার জয়ে বোলিংয়ে দারুণ অবদান রেখেছেন দলের পেসাররা।
আগের দিনের ৬ উইকেটে ১৭২ রানের সঙ্গে শনিবার আরও ৬১ রান যোগ করে ঢাকা। অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরিয়ান তাইবুর রহমান দিনের শুরুতে ফিরে যান। পরে সুমন খানের ৩৩ রানের সৌজন্যে দুইশ পেরোয় ঢাকা।
রংপুরের পক্ষে ৫ উইকেট নেন আসাদুল্লাহ গিল গালিব। চার ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় ৫ উইকেট।
রান তাড়ায় সুমন, এনামুল হক, সালাউদ্দিন শাকিলের তোপে স্রেফ ৪৪ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে সিলেট। প্রথম ইনিংসে পঞ্চাশ ছোঁয়া মিম মোসাদ্দেক, আরিফুল হকরা এবার কিছুই করতে পারেননি।
অষ্টম উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন নিহাদউজ্জামান ও সঞ্জিত সাহা। দুজনের জুটিতে জাগে রংপুরের জয়ের আশা। ৫৬ রান করা নিহাদউজ্জামানকে আউট করে ৭৫ রানের জুটি ভাঙেন বাঁহাতি পেসার শাকিল।
এরপর অন্য প্রান্ত থেকে সহায়তা পাননি সঞ্জিত। তিনি অপরাজিত থাকেন ২২ রানে।
এনামুল ১৯ রানে ধরেন ৪ শিকার। এছাড়া শাকিল ৩ ও সুমন নেন ২ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (তৃতীয় দিন শেষে)
ঢাকা ১ম ইনিংস: ১৬৬
রংপুর ১ম ইনিংস: ২৩৮
ঢাকা ২য় ইনিংস: ৬১.৫ ওভারে ২২৩ (আগের দিন ১৭২/৬) (তাইবুর ৬৬, নাজমুল ২১, সুমন ৩৩, এনামুল ৭, শাকিল ০*; সোহেল ৮.৪-০-৩২-১, আরিফুল ৯.১-২-৩৮-১, গালিব ১৬-১-৬৮-৫, নবিন ১৩-৩-২৫-২, নিহাদউজ্জামান ৯-১-৩০-১, সঞ্জিত ৬-০-২১-০)
রংপুর ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৫২) ৪১.১ ওভারে ১২৮ (মাইশুকুর ৭, মেহেদি ১৩, জাহিদ ০, মিম ২, তানবির ০, আরিফুল ১৬, নবিন ০, নিহাদউজ্জামান ৫৬, সঞ্জিত ২২*, গালিব ০, সোহেল ০; শাকিল ১৩-৪-২৪-৩, সুমন ১৩.৪-০-৩৬-২, এনামুল ৭.২-২-১৯-৪, নাজমুল ২-০-১৯-০, শুভাগত ২.১-০-৮-১, তাইবুর ২-০-৬-০, সাইফ ১-০-৬-০)
ফল: ঢাকা বিভাগ ২৩ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রনি তালুকদার
সিলেটে রাজার হ্যাটট্রিক
রেজাউর রহমান রাজার অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে শেষ মুহূর্তে ছেড়ে দিতে চাইলেন শহিদুল ইসলাম। ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে বল জমা পড়ল তৌফিক খানের গ্লাভসে। প্রায় একই লাইনের পরের ডেলিভারি দূর থেকে খেলার চেষ্টায় স্লিপে ক্যাচ দিলেন কাজি অনিক। আর ব্যাক অব লেংথে পড়ে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে খোঁচা দিলেন আরিফ আহমেদ। বল কিপারের গ্লাভসে যেতেই ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিকের আনন্দে দৌড় শুরু করলেন রাজা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে এই অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন সিলেটের ২৩ বছর বয়সী পেসার। তার হ্যাটট্রিকে দ্বিতীয় ইনিংসে মেট্রো গুটিয়ে গেছে ২১২ রানে। শেষ দিন ২০৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামবে সিলেট।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক করা বাংলাদেশের ১৫তম বোলার রাজা।
আগের দিনের ৮ উইকেটে ২৪৫ রানের সঙ্গে শনিবার আর ৬ রান যোগ করতেই অলআউট হয়ে যায় সিলেট।
৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসেও তেমন ভালো করতে পারেনি মেট্রোর টপ-অর্ডার। নাইম শেখ ভালো কিছুর সম্ভাবনা জাগিয়ে আউট হন ৪১ রানে। সাদমান ইসলাম ৪, আইচ মোল্লা করেন ৩ রান।
অভিজ্ঞ মার্শাল আইয়ুবের ব্যাট থেকে আসে ৫৭ রান। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা নাইম ইসলাম এবার নন স্ট্রাইকে দাঁড়িয়ে দেখেন রাজার হ্যাটট্রিক। তিনি অপরাজিত থাকেন ১৬৭ বলে ৪৪ রান করে।
এই ইনিংসের সৌজন্যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০ হাজার রান পূর্ণ করেছেন নাইম। ১৬৪ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৩১ সেঞ্চুরি ও ৪৪ ফিফটিতে এই মাইলফলকে পা রেখেছেন তিনি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে নাইমের আগে এই কীর্তি রয়েছে শুধু তুষার ইমরানের।
সিলেটের হয়ে ৩৮ রানে ৪ উইকেট নেন রাজা। ১০ ওভারে স্রেফ ১৩ রানে ৩ উইকেট ধরেন শাহানুর রহমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (তৃতীয় দিন শেষে)
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ২৪৩
সিলেট ১ম ইনিংস: ৮২.২ ওভারে ২৫১ (আগের দিন ২৪৫/৮) (জাকের ৫৫, খালেদ ০, নাবিল ১*; শহিদুল ১৪.২-৪-৩১-২, আবু হায়দার ১৬-৫-৪৩-৩, কাজি অনিক ১৪-৩-৩১-২, আরিফ ২৩-৩-৬৬-২, নাইম ইসলাম ৩-১-৮-০, আইচ ১২-০-৫৬-১)
ঢাকা মেট্রো ২য় ইনিংস: ৭৪.৫ ওভারে ২১২ (সাদমান ৪, নাইম শেখ ৪১, আইচ ৩, নাইম ইসলাম ৪৪*, মার্শাল ৫৭, আমিনুল ১৬, জাহিদুজ্জামান ১, আবু হায়দার ১৭, শহিদুল ১৩, কাজি অনিক ০, আরিফ ০; আবু জায়েদ ১৭-২-৪৮-১, নাবিল ২৫-৫-৬৭-২, রাজা ১০.৫-৩-৩৮-৪, খালেদ ১২-২-৩৪-০, শাহানুর ১০-৪-১৩-৩)