তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারতের কাছে ব্যাটে-বলে পাত্তাই পেল না বাংলাদেশ।
Published : 06 Oct 2024, 10:36 PM
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত।
গোয়ালিয়রের মাধাবরাও সিন্দিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ এটি। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ১২৭ রানে। রান তাড়ায় ভারতের জিততে লাগে স্রেফ ১১.৫ ওভার।
ভারতের হয়ে দারুণ বোলিংয়ে তিনটি উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার আর্শদিপ সিং। ম্যাচের সেরা তিনিই। প্রায় তিন বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে তিন উইকেট শিকার করেন স্পিনার ভারুন চক্রবর্তি। পরে রান তাড়ায় মারকাটারি ব্যাটিংয়ে অবদান রাখেন সবাই।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ প্রথম ওভারেই হারায় লিটন কুমার দাসকে। আর্শদিপ সিংয়ের বলে ভীষণ দৃষ্টিকটূ শটে আউট হন অভিজ্ঞ ওপেনার।
ঠিক এক বছর পর বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে ব্যর্থ হন আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ফ্লিক করে একটি ছক্কা মারলেও বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান স্টাম্পে টেনে আনেন আর্শদিপের বল।
ভারুন চক্রবর্তির বলে তিন রানে জীবন পেয়েও সুবিধা করতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়। একটু পর এই স্পিনারকেই উইকেট দিয়ে আসেন তিনি ১৮ বলে ১২ রান করে।
প্রথম ওভার মেডেন নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু করেন মায়াঙ্ক ইয়াদাভ। গত আইপিএলে গতির ঝড় তুলে আলোড়ন তোলার পর চোট পেয়ে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। সব ধরনের ক্রিকেট মিলিয়েই গত পাঁচ মাসে তার প্রথম ম্যাচ এটি।
এই মায়াঙ্ককেই প্রথম উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন ৩৮ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহ (১)। ভারুনের গুগলি কিছুই বুঝতে না পেরে বোল্ড হন জাকের আলি (৮)।
অনেকটা সময় এক প্রান্ত আগলে রাখা নাজমুল হোসেন শান্ত ফেরেন দ্বাদশ ওভারে। একটি করে ছক্কা ও চার মারলেও ২৭ রান করতে ২৫ বল খেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
মায়াঙ্ককে একটি ছক্কা ও চার মারার পর রিশাদ হোসেন বিদায় নেন ১১ রানে।
বাংলাদেশের তখন একশ হওয়া নিয়েই শঙ্কা। মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদ ২৩ রানের জুটিতে একটু টানেন দলকে। তবু শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার খেলতে পারেনি বাংলাদেশ।
এক বছরের বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে ৩২ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ।
ভারত রান তাড়ায় শুরু করে প্রত্যাশিত আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়েই। সাঞ্জু স্যামসন ও আভিশেক শার্মার ব্যাটে প্রথম দুই ওভারেই আসে চারটি বাউন্ডারি এক ছক্কা।
৭ বলে ১৬ করে হৃদয়ের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হন আভিশেক। কিন্তু ভারতীয় ঝড় চলতেই থাকে।
স্যামসন ও সুরিয়াকুমার ইয়াদাভের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতেই রান আসে ৭১।
চোখধাঁধানো কয়েকটি শট ১৪ বলে ২৯ রান করে আউট হন সুরিয়াকুমার। ১৯ বলে ২৯ করে মিরাজের শিকারে পরিণত হন স্যামসন।
হার্দিক পান্ডিয়া নেমে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে সহজেই দলকে নিয়ে যান ঠিকানায়। ১৬ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার। অভিষিক্ত নিতিশ কুমার রেড্ডি আরেক প্রান্তে টিকে থাকেন দলের জয় পর্যন্ত।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ দিল্লিতে বুধবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৯.৫ ওভারে ১২৭ (ইমন ৮, লিটন ৪, শান্ত ২৭, হৃদয় ১২, মাহমুদউল্লাহ ১, জাকের ৮, মিরাজ ৩৫*, রিশাদ ১১, তাসকিন ১২, শরিফুল ০, মুস্তাফিজ ১; আর্শদিপ ৩.৪-০-১৪-৩, হার্দিক ৪-০-২৬-১, ভারুন ৪-০-৩১-৩, মায়াঙ্ক ৪-১-২১-১, নিতিশ ২-০-১৭-০, ওয়াশিংটন ২-০-১২-১)।
ভারত: ১১.৫ ওভারে ১৩২/৩ (স্যামসন ২৯, আভিশেক ১৬, সুরিয়াকুমার ২৯, নিতিশ ১৬*, পান্ডিয়া ৩৯*; শরিফুল ২-০-১৭-০, তাসকিন ২.৫-০-৪৪-০, মুস্তাফিজ ৩-০-৩৬-১, রিশাদ ৩-০-২৬-০, মিরাজ ১-০-৭-১)
ফল: ভারত উইকেটে ৭ জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ভারত ১-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: আর্শদিপ সিং।