জাতীয় ক্রিকেট লিগ
জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডের দ্বিতীয় দিন তিন অঙ্কের দেখা পেলেন আইচ মোল্লা, মার্শাল আইয়ুবরা; বল হাতে আলো ছড়ালেন আল আমিন হোসেন ও এসএম মেহেরব হাসান।
Published : 20 Oct 2024, 08:34 PM
কামরুল হাসানের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি পয়েন্টের দিকে খেলে রানের জন্য ছুটলেন মার্শাল আইয়ুব। অন্য প্রান্তে পৌঁছানোর আগে তাসামুল হকের থ্রো লাগল তার ব্যাটে। সঙ্গে সঙ্গে জোরাল আবেদন। আঙুল তুলে দিলেন আম্পায়ার! বিরল এক আউট হলেন মার্শাল।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডের দ্বিতীয় দিন সেঞ্চুরি করে ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ আউট হলেন মার্শাল। তার আগে ঢাকা মেট্রোর হয়ে সেঞ্চুরি করেন আইচ মোল্লা। এছাড়া রোববার বল হাতে আলো ছড়ান আল আমিন হোসেন, এসএম মেহেরব হাসানরা।
মার্শাল-আইচের সেঞ্চুরিতে চারশ পেরিয়ে মেট্রো
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৫ উইকেটে ৪০৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রো। দিনের শেষ ভাগে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২২ রান করেছে বরিশাল।
বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম দিনে ১ উইকেটে ১০২ রান করে মেট্রো। রোববার প্রথম ওভারেই ড্রেসিং রুমে ফেরেন ইমরানুজ্জামান।
এরপর আইচ ও মার্শাল মিলে গড়ে তোলেন ১৭৪ রানের জুটি। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি করে ১২২ রান করে আউট হন আইচ। ২৫০ বলের ইনিংসে ১৫ চারের সঙ্গে ১টি ছক্কা মারেন ২২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
লাল বলের ক্রিকেটে ২৫তম সেঞ্চুরি ছুঁতে ১৭২ বল খেলেন মার্শাল। দেড়শর দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড আউট হন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। আইচের মতো তিনিও ১৫ চারের সঙ্গে মারেন ১টি ছক্কা।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড হওয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার মার্শাল। গত বছর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হাত দিয়ে বল ধরে এই আউট হন মুশফিকুর রহিম। সব মিলিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড হওয়া ৩৯তম ক্রিকেটার মার্শাল।
মার্শালের বিদায়ের পর শামসুর রহমান ফিফটি পূর্ণ করার পরপর ইনিংস ঘোষণা করে মেট্রো।
শেষ ঘণ্টায় ব্যাটিংয়ে নেমে কোনো বিপদ ঘটতে দেননি আব্দুল মজিদ ও ইফতেখার হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ১২৫.২ ওভারে ৪০৮/৫ (ডিক্লে) (আগের দিন ১০২/১) (ইমরানুজ্জামান ৩৫, আইচ ১২২, মার্শাল ১২৭, শামসুর ৫০*, আল আমিন ৪, আমিনুল ২৫*; কামরুল ১৯.২-২-৬৮-২, রুয়েল ১৯-৩-৬৭-১, মহিউদ্দিন ১৭-৫-৪৬-০, তানভীর ৩৯-১০-১০৪-০, মইন ১৮-২-৭২-১, সোহাগ ১৩-২-৪৫-০)
বরিশাল ১ম ইনিংস: ৭ ওভারে ২২/০ (মজিদ ৩*, ইফতেখার ১৯*; আশরাফুল ৩-০-১২-০, আরিফ ৩-১-৫-০, আইচ ১-০-৫-০)
আল আমিনের ৫ উইকেট ছাপিয়ে মেহেরবের ৬টি
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আল আমিন হোসেনের তোপে রোববার বেশি রান করতে পারেনি রাজশাহী। পরে অবশ্য এসএম মেহেরব হাসানের অফ স্পিনে দুইশর আগেই গুটিয়ে যায় খুলনা।
ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ১৫.৫ ওভারে মাত্র ৪১ রান করতেই শেষ ৬ উইকেট হারিয়েছে রাজশাহী। পরে খুলনা অলআউট হয়েছে ১৯৪ রানে। ২৩২ রানের লিড পেয়ে খুলনাকে ফলো-অন করানোর সুযোগ রাজশাহীর সামনে।
আগের দিন সেঞ্চুরি থেকে ৯ রান দূরে ছিলেন ফরহাদ হোসেন। রোববার আর ২ রান যোগ করতে পারেন তিনি। এতেই অবশ্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৯ হাজার রান পূর্ণ হয় ৩৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের।
শাকির হোসেন ফেরেন ৬৮ রান করে। পরে আর কেউ দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি।
৯৬ রানে ৫ উইকেট নেন আল আমিন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার অষ্টম।
পরে মেহেরবের স্পিনে আটকা পড়ে খুলনা। মূল পরিচয় ব্যাটসম্যান হলেও তার অফ স্পিন সামাল দিতে পারেননি অমিত মজুমদার, নাহিদুল ইসলাম, শেখ মেহেদি হাসানরা। মাত্র ৩৫ রানে ৬ উইকেট নেন মেহেরব।
খুলনার পক্ষে ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন জিয়াউর রহমান। অমিত মজুমদারের ব্যাট থেকে আসে ৫২ রান। এছাড়া নাহিদুল করেন ৪৫ রান। ১৬ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি এনামুল হক। সৌম্য সরকার আউট হন ১৭ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ১০৫.৫ ওভারে ৪২৬ (আগের দিন ৩৮৫/৪) (ফরহাদ ৯৩, শাকির ৬৮, মেহেরব ৫, সানজামুল ৫, শফিকুল ৪, মোহর ০, আসাদুজ্জামান ০*; আল আমিন ২০-১-৯৬-৫, হালিম ২০-৩-৭৫-২, মেহেদি ২৫-৪-১০৭-২, সৌম্য ১০-১-৪১-০, নাহিদুল ১২-২-৩৭-০, পারভেজ ১৪-২-৪৬-০, জিয়াউর ৪.৫-০-১১-১)
খুলনা ১ম ইনিংস: ৬১.২ ওভারে ১৯৪ (এনামুল ০, সৌম্য ১৭, অমিত ৫২, মিঠুন ৬, সোহান ১, নাহিদুল ৪৫, জিয়াউর ৫৪*, পারভেজ ৪, মেহেদি ৫, হালিম ১, আল আমিন ০; শফিকুল ১০-৫-২২-০, মোহর ১১-৩-২৬-২, আসাদুজ্জামান ৯-০-৪৮-১, সাব্বির ৮-১-১৭-১, সানজামুল ১২-০-৪০-০, মেহেরব ১১.২-৩-৩৫-৬)
সিলেটকে গুঁড়িয়ে এগিয়ে ঢাকা
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনেও ছিল বৃষ্টির বাগড়া। সব মিলিয়ে খেলা হয় ৫৮.৪ ওভার। এর মধ্যেই সিলেটকে অলআউট করে দিয়েছে ঢাকা।
এনামুল হক, নাজমুল ইসলামদের তোপে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে গেছে সিলেট। পরে দিনের শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেটে ৩৮ রান করেছে ঢাকা।
আট নম্বরে নেমে সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪২ রান করেন তানজিম হাসান। আর কেউ ত্রিশ রান করতে পারেননি।
৩টি করে উইকেট নেন এনামুল ও নাজমুল।
পরে দিনের খেলার শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ১৫ রান করে আউট হন ঢাকার ওপেনার আশিকুর রহমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)
সিলেট ১ম ইনিংস: ৪৮.৪ ওভারে ১৪৬ (তৌফিক ১৬, পিনাক ১, মাইশুকুর ১, অমিত ২৮, আসাদুল্লা ১৩, রাহাতুল ১৪, তাওহিদ ৮, তানজিম ৪২, নাসুম ১, আবু জায়েদ ১*, খালেদ ০; সুমন ১২-২-৩৬-১, সালাউদ্দিন ১৩-৩-৩৮-২, এনামুল ৯-১-২৩-৩, নাজমুল ৯.৪-২-২৩-৩, আরিফুল ২-০-১১-০, তাইবুর ৩-১-৪-১)
ঢাকা ১ম ইনিংস: ১০ ওভারে ৩৮/১ (আশিকুর ১৫, রনি ১৬*, সুমন ১*; আবু জায়েদ ৪-০-১৫-০, খালেদ ৫-১-১৬-১, তানজিম ১-০-২-০)
বগুড়ায় দ্বিতীয় দিনেও বৃষ্টির দাপট
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে প্রথম দিনের মতো রোববারও দেখা যায় বৃষ্টির দাপট। সব মিলিয়ে মাত্র ২১ ওভার খেলা হয়।
চট্টগ্রামের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে রংপুরের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৬৯ রান। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ২২ রান করে আউট হন। বাঁহাতি ওপেনার খালিদ হাসান ৩৭ রানে অপরাজিত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)
রংপুর ১ম ইনিংস: ২১ ওভারে ৬৯/১ (খালিদ ৩৭*, রিজওয়ান ২২, অনিক ১*; ফরহাদ ৬.৩-২-১৪-১, ইফরান ৩.৩-০-১২-০, ইয়াসিন ৭-৩-১৮-০, আশরাফুল ৪-০-১৯-০)