কালরাত স্মরণে ঢাবিতে মোমবাতি প্রজ্বালন

“১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের কনভেনশনে গণহত্যার যে সংজ্ঞা দিয়েছে, সেই দিক থেকে ২৫ মার্চের হত্যাকাণ্ড ছিল গণহত্যা,” বলেন উপাচার্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2024, 06:00 PM
Updated : 25 March 2024, 06:00 PM

কালরাত স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করে শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 

সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল তার সহকর্মীদের নিয়ে মোমবাতি প্রজ্বালন করেন। 

এরপর গণহত্যার উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা শেষে জগন্নাথ হলের স্মৃতিসৌধেও মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। 

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স মাঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা পাওয়ার পর মুক্তিকামি জনতার মধ্যে বিদ্রোহ দানা বাধতে থাকে। অন্যদিকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিধনযজ্ঞের প্রস্তুতি নেয়। 

বাঙালির মুক্তির আন্দোলনকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, শুরু হয় ‘অপারেশন সার্চলাইট’। 

সেই অভিযানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, রমনা কালীমন্দিরসহ বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় গণহত্যা। কেবল ঢাকাতেই অন্তত ৭ হাজার বাঙালিকে হত্যা করা হয়। 

পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান। সশস্ত্র সংগ্রামে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আসে স্বাধীনতা। 

আলোচনা সভায় উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, “এই গণহত্যা ছিল পরিকল্পিত। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের কনভেনশনে গণহত্যার যে সংজ্ঞা দিয়েছে, সেই দিক থেকে ২৫ মার্চের হত্যাকাণ্ড ছিল গণহত্যা। 

“আমরা দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল ও রাজারবাগ পুলিশের সদর দপ্তরে সেদিন হামলা করা হয়। দুটি সদর দপ্তর থেকে হামলা করা হয়েছে, কারণ সেখান থেকে প্রতিরোধ গড়ে উঠেতে পারে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে গণআন্দোলন গড়ে উঠবে, সেই গণআন্দোলন পাকিস্তানিরা প্রতিহত করতে পারবে না বলে দুটি সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বেসামরিক স্থাপনায় হামলা করা হয়।” 

অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, “গণহত্যার স্বীকৃতি চাই এজন্য যে, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আজকে গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে, গাজায় যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, মিয়ানমারে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে এ ধরনের গণহত্যা যারা করছে, তারা তখন সাবধান হয়ে যাবে। 

“যারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে, তারা উপলব্ধি করতে পারবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। সেজন্য আমাদের দেশে যে গণহত্যা হয়েছে তার স্বীকৃতি চাই।” 

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ তানভীর হাসান সৈকত বক্তব্য দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার।