চট্টগ্রাম, ডিসেম্বর ২৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে গতবারের তুলনায় প্রায় ৪ গুণ। একইসঙ্গে পাসের হারও বেড়েছে।
বুধবার বেলা ৩টায় চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কার্যালয়ে ২০১১ সালের জেএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. পীযূষ দত্ত।
তিনি জানান, এবার এ বোর্ডের পাসের হার ৭২ দশমিক ৬৫। গতবার এ হার ছিল ৭০ দশমিক ২৬ শতাংশ।
এবার চট্টগ্রাম বোর্ড থেকে পূর্ণ জিপিএ পেয়েছে ২ হাজার ১৭৬ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৫২৮।
এবার ছাত্রদের মধ্যে পাসের হার ৭৬ দশমিক ৩২ শতাংশ; আর ছাত্রীদের মধ্যে ৬৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তবে জিপিএ ৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েরাই এগিয়ে আছে। পূর্ণ জিপিএ অর্জনকারীদের তালিকায় এক হাজার ১৮৬ জন ছাত্রীর বিপরীতে ছাত্রের সংখ্যা ৯৯০ জন।
চট্টগ্রাম বিভাগের ৫২টি বিদ্যালয়ে এবার শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। গতবার এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৬৬টি।
তবে একজন পরীক্ষার্থীও পাস করতে পারেনি এমন কোনো বিদ্যালয় এবার চট্টগ্রাম বোর্ডে নেই। গতবার এ রকম বিদ্যালয় ছিল চারটি।
ড. পীযূষ দত্ত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিয়মিত তদারকি এবং নির্ধারিত সময়ে ক্লাশ শুরু করতে পারায় এবার সামগ্রিক ফলাফলের উন্নতি ঘটেছে।”
বোর্ড সেরা খাস্তগীর স্কুল
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবার জুনিয়র স্কুল সার্টেফিকেট পরীক্ষায় সেরা ফল করেছে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এ স্কুলের ৩১৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই পাস করেছে; জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯৩ জন।
গতবার জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ভিত্তিতে বোর্ডের করা সেরা দশের তালিকায় প্রথম অবস্থানে ছিল খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ২০১০ সালে এ বিদ্যালয়ের ৭৫ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পীযূষ দত্ত জানান, নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর হার, পাসের হার, জিপিএ-৫ পাওয়ার হার, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের গড় জিপিএ- এই পাঁচটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে এবার বোর্ডের সেরা ২০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়েছে। এতে খাস্তগীর স্কুলের স্কোর ৮৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
৮৩ দশমিক ০৬ স্কোর নিয়ে চট্টগ্রাম বোর্ডে দ্বিতীয় স্থানে আছে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ। এ বিদ্যালয় থেকে ৫০ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭ জন।
আর ৮০ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে থাকা চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের ১৭৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
তালিকার বাকি ১৭টি প্রতিষ্ঠান হলো- চট্টগ্রাম পাবলিক স্কুল এণ্ড কলেজ (৮০ দশমিক ২৯), বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ (৭৭ দশমিক ৮৪), ক্যান্টনমেন্ট ইলিংশ স্কুল (৭৬ দশমিক ৮০), সিলভার বেলস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৭৫ দশমিক ৫৮), ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এণ্ড কলেজ (৭৫ দশমিক ১১), সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৭৪ দশমিক ৯৭), চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (৭৪ দশমিক ২৬ পয়েন্ট), নৌ বাহিনী স্কুল এণ্ড কলেজ (৭৩ দশমিক ৩৫), সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় (৭০ দশমিক ২৫), নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (৬৯ দশমিক ৫৭), কক্সাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৬৮ দশমিক ৯১), অপর্ণাচরণ সিটি কর্পোরশেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৬৮ দশমিক ৮০), চিটাগাং ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল এণ্ড কলেজ (৬৮ দশমিক ২২), কক্সবাজার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (৬৭ দশমিক ৪৩), সেন্ট স্কলাস্টিকা উচ্চ বিদ্যালয় (৬৬ দশমিক ৩৩), চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার স্কুল এণ্ড কলেজ (৬৫ দশমিক ৪৮), বিএফ শাহীন কলেজ (৬৫ দশমিক ৪৬)।
এবার মহানগরীতে পাসের হার গতবারের তুলনায় কমলেও চট্টগ্রাম জেলায় তা বেড়েছে। জেলাভিত্তিক ফলাফলে সবচেয়ে ভালো করেছে কক্সবাজার। সেখানে পাসের হার ৭৫ দশমিক ১০ শতাংশ।
তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে পাসের হার বাড়লেও কমেছে রাঙ্গামাটিতে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমইউ/সিএম/জেকে/২০০৫ ঘ.