প্রযুক্তির সহায়তায় হজ কার্যক্রমকে আধুনিক করার পরও কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের তৎপর থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 08 May 2024, 02:36 PM
হজযাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য আশকোনা হজক্যাম্প এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত আন্ডারপাস করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে এবারের হজ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, "হজযাত্রীদের সুবিধার জন্য আশকোনা হজক্যাম্প এবং বিমানবন্দর রেল স্টেশন থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে একটি আন্ডারপাস করে দেওয়া হবে। এতে হজযাত্রীদের সুবিধা আরও বাড়বে।"
প্রযুক্তির সহায়তায় হজ কার্যক্রমকে আধুনিক করার পরও কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের তৎপর থাকার নির্দেশ দেন তিনি।
হজ কার্যক্রমকে সহজ করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আজকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। ঘরে বসেই হজের কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব- ২০০৮ এর নির্বাচনি ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছিলাম। কোনো রকম হয়রানির শিকার যেন হতে না হয়।
“হজের রেজিস্ট্রেশন সরাসরি অনলাইনে করা যায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি, সেখানেও রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের জন্য এই সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। এরপরও যেন কেউ হয়রানির শিকার না হয়, সেই লক্ষ্য রাখতে হবে।”
সৌদি আরবে বাংলাদেশি হজ যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে আওয়ামী লীগ সরকারই কাজ করেছে বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, "জেদ্দা বিমানবন্দরে আমরা ছাউনি ভাড়া নিয়েছি। আমি দেখেছি, আগে সেখানে কষ্ট হত। সরকারে এসে আমি আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করি। এখন আর জেদ্দা বিমানবন্দরে ভোগান্তিতে পড়তে হয় না।"
হজ যাত্রীদের সমস্যা দূর করার জন্য সৌদি আরবের প্রতিও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান শেখ হাসিনা।
প্রথমবার ওমরাহ এবং হজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, "১৯৮৪ সালে আমি প্রথম ওমরাহ করি এবং ১৯৮৫ সালে প্রথম হজ করি। প্রতিবারই গিয়ে যে যে সমস্যা দেখেছি, সেটা সৌদি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং তারা এসব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে।"
‘আমি যেখানেই কথা বলছি, সেখানেই প্রতিবাদ করে যাচ্ছি’
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “সেখানে (গাজা) যেভাবে গণহত্যা চালান হচ্ছে, নারী শিশু কাউকে রেহাই দিচ্ছে না। আমি যেখানেই কথা বলছি, সেখানেই এই হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। ফিলিস্তিনিরা তারা তাদের জায়গা পাবে। এটা তাদের অধিকার। এ অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না। সেই অধিকার তাদের দিতে হবে।“
গাজার সমস্যা টিকে থাকার পেছনে মুসলিম দেশগুলোর এক হয়ে কাজ না করাকেই দায়ী করেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “আজকে যদি আমাদের সব মুসলিম কান্ট্রিগুলো এক হয়ে একযোগে কাজ করতে পারত, তাহলে আমরা এ ব্যাপারে আরো অগ্রগামী হতে পারতাম। ওআইসি দেশগুলোর মধ্যে আমি একাই একমাত্র, আমি সেখানে বলছি সকলে এক হোন।”
কারবালা ময়দানের ঘটনার সঙ্গে পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার ঘটনার তুলনা করে বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কারবালা ময়দানের যে ঘটনা ঘটেছে, তারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছিল ১৫ অগাস্টে। কারবালা ময়দানে অন্তত নারী শিশুদের হত্যা করা হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশে ১৫ অগাস্ট নারী শিশু কেউ রেহাই পায়নি।"
ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকায় সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বক্তব্য দেন।