“এটি যেহেতু স্পর্শকাতর ঘটনা, তাই সাবধানতার সঙ্গে তদন্ত করতে হবে”, বলেন উপাচার্য সাদেকা হালিম।
Published : 16 Mar 2024, 09:39 PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রথম সভা বসছে রোববার।
কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন বিডিনিউজ ডটকমকে বলেন, “রোববার দুপুর ১২টায় আমাদের প্রথম সভা হবে। সেই সভাতেই সদস্যদের সবার মতামতের ভিত্তিতে তদন্ত কীভাবে এগোবে তার রোডম্যাপ ঠিক করা হবে।”
উপাচার্য ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটির ফলাফল দেবেন বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন। তবে জাকির হোসেন বলছেন, তাদের কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। তবে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটি যেহেতু স্পর্শকাতর ঘটনা, তাই সাবধানতার সঙ্গে তদন্ত করতে হবে। যদি ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেকটা প্রসেস কমপ্লিট না হয় তাহলে দেখা যাবে আমাদের বিরুদ্ধেও মামলা হবে।
“বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনগুলো তাদের গতিতে চলে। আমাদেরকে এগুলো দেখতে হবে।”
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা শহরের বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। এর আগে নিজের ফেইসবুক আইডিতে আর এমন মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন দুইজনকে। তারা হলেন-সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।
আম্মান তাকে অনলাইন ও অফলাইনে হুমকির ওপর রাখতেন এবং সহকারী প্রক্টরকে অভিযোগ দেওয়ার পর তিনিও হুমকি ধমকি দিয়েছেন- এমন অভিযোগের কথা লিখে গেছেন তিনি।
অবন্তিকা নিজেকে ‘লড়াকু’ মেয়ে আখ্যা দিয়ে ফেইসবুকে লেখেন, “আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।”
‘আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়’, এটাও লিখেছেন তিনি। তাও কেন সে পথে গেছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়ে লিখেছেন, “আমাকে বাঁচতে দিতেসে না বিশ্বাস করেন। আমি ফাইটার মানুষ। আমি বাঁচতে চাইসিলাম।”
এ ঘটনায় শুক্রবার রাত থেকে বিক্ষোভ শুরু করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবন্তিকার সহপাঠী ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সকালে রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে বহিষ্কার ও দ্বীন ইসলামকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন দ্বীন।
এদিন রাতে আম্মান ও দ্বীনকে আসামি করে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। এতে দুইজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাতেই আম্মান ও দ্বীনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান।
আরও পড়ুন
অবন্তিকার সহপাঠী ও সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণার মামলা