গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ নিয়ে এ মামলায় পাঁচজন গ্রেপ্তার হলেন।
Published : 23 Apr 2025, 06:22 PM
প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি মেহরাজ ইসলামকে গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে র্যাব।
এ নিয়ে এ মামলায় পাঁচজন গ্রেপ্তার হলেন। এর আগে পুলিশ তিনজনকে এবং র্যাব এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
বুধবার বিকালে এক বার্তায় র্যাব সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, মামলাটির ১ নম্বর আসামি মেহরাজ ইসলামকে গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাবের একটি দল।
রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গত শনিবার টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থী পারভেজ ছুরিকাঘাতে খুন হন।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন সকালে নিহতের চাচাত ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে বনানী থানায় মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, মেহরাজ ও তার সঙ্গীরা লাঠিসোটা, ছুরি-চাকু ও চাপাতি হাতে পারভেজের ওপর হামলা চালায়।
এজাহারে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলা হয়, ওইদিন (১৯ এপ্রিল) বিকালে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টোদিকে একটি পুরি-সিঙ্গাড়ারা দোকানে খেতে খেতে বন্ধুদের সঙ্গে হাসাহাসি করছিলেন নিহত পারভেজ। এসময় তাদের পেছনে দুজন অন্য প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী দাঁড়িয়ে ছিল। এক পর্যায়ে মামলার এক নম্বর আসামি মেহরাজসহ তিনজন এসে পারভেজের কাছে হাসাহাসির কারণ জানতে চায়। বিষয়টি নিয়ে তাদের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ”পরে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক এসে দুই পক্ষকেই প্রক্টরের রুমে ডেকে নিয়ে মীমাংসা করে দিলে মেহরাজসহ তার সঙ্গীরা প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ভবন থেকে বের হয়ে যান।
”এর কিছুক্ষণ পরে আসামিরা লাঠিসোটা, ছুরি-চাকু ও চাপাতি হাতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ধাওয়া করে পারভেজ ও তার বন্ধু তারিকুল ইসলামকে মারধর এবং পারভেজের বুকে ছুরিকাঘাত করে।”
এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, “মেহরাজ ইসলাম তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে পারভেজের মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তার বুকের বাম পাশে সজোরে আঘাত করে।”
মামলার আসামিরা হলেন- মেহরাজ ইসলাম (২০), আবু জর গিফারী পিয়াস (২০), মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজী (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। এদের ছাড়াও নাম না দিয়ে আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ মামলায় রোববার মধ্যরাতে বনানী থানা পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন- মো. আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) ও আল আমিন সানি (১৯)। তবে তারা কেউ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন, মামলার এজাহারেও তাদের নাম নেই।
এরপর সোমবার রাতে কুমিল্লার তিতাস এলাকায় মামার বাড়ি থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হৃদয় মিয়াজীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
হৃদয় মিয়াজী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানা ইউনিটের যুগ্ম সদস্য সচিব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম আহ্বায়ক সোবহান নিয়াজ তুষারও এই হত্যা মামলার আসামি।
শনিবার বিকালে রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে বিবাদের জেরে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়।
টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে চায়ের দোকানে আড্ডার সময় ছোট একটি ঘটনায় বহিরাগতদের নিয়ে এসে বুকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয় পারভেজকে।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে পারভেজকে নিজেদের কর্মী দাবি করে এ হত্যাকাণ্ডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানীর কয়েকজন নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ করে ছাত্রদল।
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিজেদের ফেইসবুক পেইজে ছাত্রদলের এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এই ঘটনায় তাদের নেতারা জড়িত নন; ছাত্রদল মিথ্যাচার করছে।
প্রাইমএশিয়ার ছাত্র খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩
প্রাইমএশিয়ার ছাত্র হত্যা: গ্রেপ্তার তিনজন ৭ দিনের রিমান্ডে
পারভেজ হত্যা 'পরিকল্পিত' কিনা, তদন্তের দাবি
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের 'কতিপয়ের' আচরণ 'রক্ষীবাহিনীর' মত: ছাত্রদল
প্রাইম এশিয়ার ছাত্র খুনের মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ২ নেতা
ক্যাম্পাসে 'ছুরিকাঘাতে' প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খুন