"রোববার সাত কলেজ নিয়ে ইউজিসি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো ঘোষণা করবে। আমরা সেটি প্রত্যাখ্যান করছি।"
Published : 16 Mar 2025, 12:51 AM
সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার বিষয়ে সরকারকে ‘যোগাযোগ করার জন্য’ ১৫ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে ‘তিতুমীর ঐক্য’।
শনিবার রাতে কলেজের মূল ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলন বেলাল হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, "আমরা তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্নভাবে দ্বিচারিতার শিকার হয়েছি।
“শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট এমন কোনো দপ্তর, অফিস বা দায়িত্বশীল ব্যক্তি নেই, যাদের কাছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি পৌঁছানো হয়নি। কিন্তু রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেসব ভয়াল রাঘববোয়াল বসে আছেন, তাদের ষড়যন্ত্র ও স্বার্থান্বেষী আচরণই তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।”
'শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বিচারিতার’ প্রতিবাদে তিতুমীর ঐক্য এ সংবাদ সম্মেলন ডাকে।
কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে গঠিত এ প্লাটফর্মের শিক্ষার্থী বেলাল বলেন, “সাত দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চললেও গত ৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নুরুজ্জামান আমাদের ৬ দফা দাবি মেনে নেন। ৭ দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি।"
তিনি বলেন, "ইউজিসির পক্ষ থেকে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা চিঠি পেয়েছে, আগামীকাল রোববার তারা নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো ঘোষণা করবে, আমরা যেন সেই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করি এবং সেখানে তারা নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঘোষণা করবে।
“আমরা তিতুমীরের ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী সেটি প্রত্যাখ্যান করছি।"
আব্দুল হামিদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, "৩ ফেব্রুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত উনারা আমাদের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করেন নাই। কোনো ধরনের সমাধানের পদক্ষেপ নেন নাই।
“উনারা যে ছয় দফা মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গেলেন, সেটি যদি উনারা না মেনে নেন, আমরা আগামী ১৫ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দিলাম। ১৫ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।"
তিনি বলেন, "উনি আমাদের আশ্বাস দিলেন, তিতুমীরকে তারা বাকি ছয়টি কলেজের সঙ্গে নেবেন না। কিন্তু শুক্রবার আমরা একটা চিঠিতে দেখতে পাই, উনারা সাত কলেজকে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে রূপান্তরে ছাত্র প্রতিনিধিদের আলোচনার জন্য ডেকেছেন।”
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘দ্বিচারিতা করছে’ অভিযোগ করে করে ‘এ বিষয়ে নালিশ দিতে’ ও ‘দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নে আলোচনা করতে’ প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ দাবি করেছিলেন।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ মোট সাত দাবিতে অনশন ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকা অবরোধে ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি অনশনরত ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মহাখালী রেলক্রসিং ও সড়ক আটকে অবস্থান নিলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কলেজ শাখার যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামানসহ কর্মকর্তারা কলেজ ক্যাম্পাসে এসে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে জানানো হলেও মন্ত্রণালয়ে পক্ষ থেকে অন্যান্য দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা লাগাতার অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন।