বোর্ডের সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এবং পদাধিকারবলে আরেক সদস্য বিভাগের সভাপতি শাকিলা তাসনিম নির্বাচনী বোর্ডটি সম্পন্ন করেন।
Published : 22 Jan 2024, 12:16 AM
সিন্ডিকেট মনোনীত বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ছাড়াই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের সাক্ষাৎকার হয়েছে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের তিনটি প্রভাষক পদে শিক্ষক নিয়োগে এই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। ৬৮ জন প্রার্থী আবেদন করলেও ৪০ জন পরীক্ষায় অংশ নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. কুন্তল বড়ুয়া ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদকে নিয়োগ বোর্ডের বিশেষজ্ঞ হিসেবে মনোনীত করেছিল।
দুই বিশেষজ্ঞ সদস্য উপস্থিত না থাকায় বোর্ডের সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এবং পদাধিকারবলে আরেক সদস্য বিভাগের সভাপতি শাকিলা তাসনিম নির্বাচনী বোর্ডটি সম্পন্ন করেন।
অধ্যাপক আনোয়ার সাঈদ জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি সাক্ষাৎকারে উপস্থিত ছিলেন না। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "আমি উপস্থিত থাকতে পারব না এটা মৌখিকভাবে জানিয়েছিলাম।"
আরেক বিশেষজ্ঞ সদস্য অধ্যাপক কুন্তল বড়ুয়া উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, নির্বাচনী বোর্ডে বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশ অগ্রাহ্য করায় তিনি নিয়োগ বোর্ডে থাকতে পারবেন না।
চিঠিতে বলা হয়, নাট্যকলা বিভাগের তিনটি প্রভাষক পদের জন্য নির্বাচনী বোর্ডে নাট্যকলা বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশ বা সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করেছে রেজিস্ট্রার অফিস। সে কারণে বিভাগের জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক হিসেবে তিনি ‘সংক্ষুব্ধ’।
তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে শঙ্কা অনুভব করায়’ নির্বাচনী বোর্ডে থাকতে অপারগতা প্রকাশ করেন অধ্যাপক কুন্তল বড়ুয়া।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "প্ল্যানিং কমিটি যে সুপারিশ করে, রেজিস্ট্রার অফিস তা অগ্রাহ্য করতে পারে না। বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটি থেকে যাদের সুপারিশ করা হয়েছিল, তাদেরকে প্রশাসন প্রবেশপত্রই দেয়নি।"
বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি’ বলতে কী বুঝিয়েছেন, সেই ব্যাখ্যায় কুন্তল বড়ুয়া বলেন, "বাংলা এবং আইন বিভাগের নিয়োগ নিয়ে ইতোমধ্যে ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়কে শোকজ করেছে, তাই আমার আশঙ্কা হয়েছিল, এই নিয়োগটাও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে হবে না। সে কারণে আমি চাইনি এই বোর্ডের সাথে নিজেকে জড়াতে।"
অধ্যাপক কুন্তল বড়ুয়ার অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নুর আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "প্ল্যানিং কমিটি যদি অন্যায় সুপারিশ করে, সেটা কি রেজিস্ট্রার অফিস মেনে নেবে? "
বিভাগের সুপারিশ কীভাবে অন্যায় বা নিয়মবহির্ভূত ছিল, তা জানতে চাইলে নুর আহমদ অফিসে গিয়ে দেখা করতে বলেন।
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে বিভাগের সভাপতি শাকিলা তাসনিম বলেন, “আমাদের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কোনো প্রশাসনিক জটিলতা নেই। তিনজন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে যাওয়ায় বিভাগ শিক্ষক সঙ্কটে পড়ে। প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নাট্যকলা বিভাগের শূন্য পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি হয়। এতে নাট্যকলায় অনার্স মাস্টার্সের বাইরে নৃত্যকলা ও চারুকলার দুইজন প্রার্থী আবেদন করেন।
"অন্য বিষয়ে পাস করা প্রার্থীদের নিয়ে বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটিতে মতদ্বৈততা তৈরি হয়। তারপরও উনাদের জন্য বোর্ড সুপারিশ করে। কিন্তু রেজিস্ট্রার অফিস থেকে নৃত্যকলা ও ভাষ্কর্য থেকে পাস করা প্রার্থীদের নাট্যকলা বিষয়ের নির্বাচনী বোর্ডের অংশগ্রহণের চিঠি দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়।"
শাকিলা তাসনিম বলেন, “তারপরও বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটি আবার সুপারিশ করে চিঠি পাঠায়। সম্ভবত সংশ্লিষ্ট বিষয় না হওয়ায় রেজিস্ট্রার অফিস ওই দুই প্রার্থীর ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করেনি। একদফা পিছিয়ে যাবার পর আজ বোর্ড বসে। বোর্ড সদস্য ছিলেন উপাচার্য শিরীণ আখতার, অধ্যাপক কুন্তল বড়ুয়া, অধ্যাপক আনোয়ার সাঈদ এবং আমি শাকিলা তাসনিম। এর মধ্যে আমি এবং উপাচার্য মহোদয় বোর্ডে উপস্থিত ছিলাম।
"কুন্তল বড়ুয়া স্যার দুই বার প্ল্যানিং কমিটির সভায় উপস্থিত থেকে নিয়োগের সার্কুলার দিতে রাজি থাকলেও, আজ সকালে আসেননি। নির্বাচনী বোর্ডে অনুপস্থিত থাকবেন বলে লিখিতভাবে জানান। আনোয়ার সাঈদ স্যার কেন অনুপস্থিত ছিলেন তা আমার জানা নেই। কোরাম পূর্ণ হওয়ায় যথারীতি বোর্ড হয়।"
এ বিষয়ে উপাচার্য শিরীণ আখতারের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।