ইউয়ানে লেনদেন আটকে আছে ‘কারিগরি’ কারণে: রাষ্ট্রদূত

দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাঝে এ নিয়ে এখনও 'কোনো স্পষ্ট' চুক্তি হয়নি, বলেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2022, 07:44 PM
Updated : 18 Nov 2022, 07:44 PM

ডলার সংকটের মধ্যে বিকল্প হিসেবে চীনের মুদ্রা ইউয়ানে পণ্য আমদানির বিষয়টি আলোচনা চললেও তা কিছু ‘কারিগরি’ সমস্যার কারণে আটকে আছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

শুক্রবার ঢাকায় একটি হোটেলে চায়না মিডিয়া গ্রুপ আয়োজিত ‘চীনের নতুন যাত্রা' শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেসের সাফল্য এবং দেশটির অগ্রযাত্রা তুলে ধরতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিদেশি মুদ্রার ওপর চাপ কমাতে বিশেষ করে সরবরাহ সংকটে ডলারের বদলে চীন থেকে পণ্য আমদানিতে চীনা মুদ্রায় লেনদেন সহজ করতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ইউয়ানে অ্যাকাউন্ট খোলাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়।

এরপরও আমদানি ও রপ্তানিতে দেশটির মুদ্রা ইউয়ান নামে পরিচিত সিএনআই দিয়ে লেনদেন এগোচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চীনের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সরকার ও চীনা দূতাবাসের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা চলার কথা জানালেও ‘কিছু কারিগরি সমস্যার সমাধান ছাড়া এ ব্যাপারে অগ্রগতি হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, "দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাঝে এ নিয়ে এখনও কোনো স্পষ্ট চুক্তি হয়নি। এছাড়া বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংক সিআইপিএসের (সুইফট এর মত লেনদেনের নেটওয়ার্ক) আওতায় আনেনি।"

ডলার সংকটের এ সময়ে চীন বাংলাদেশকে কোনো মুদ্রা সহায়তা দেবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে লি জিমিং বলেন, “এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, বাংলাদেশকে কোনো না কোনো উপায়ে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করার ব্যাপারটি চীন বেশ ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে।

“গত মাসে আমার বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ হয়েছিল। সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে শুধু মুদ্রা বিনিময়ের মাঝে সীমাবদ্ধ না থেকে দুই দেশের ভেতরে বাণিজ্যও কীভাবে আরও বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে আমরা বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়েছি এবং কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করছি।“

এর আগে বেশকিছু কারিগরি বাধা পেরিয়ে আসার কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি মুদ্রা সংকটের বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ও চীন একত্রে কাজ করতে পারবে।“

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত জিমিং দুই দেশের সংবাদমাধ্যমের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ওপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানে চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগের বিভিন্ন তথ্যচিত্রের মাধ্যমে চীন ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিনিময়, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব ও কৃষি সম্ভাবনার জায়গাগুলো তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কাউন্সিলর ইয়ু লি ওয়ান, বাংলাদেশে চীনা শিল্প প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খ্য ছাং লিয়াং, বাংলাদেশের চায়না শান্তিপূর্ণ পুনরেকত্রীকরণ ত্বরান্বিত অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সভাপতি ছাই ছুন লেই, সিনহুয়া বার্তা সংস্থার ঢাকা ব্যুরোর প্রধান লিউ ছুন থাও, বাংলাদেশে প্রবাসী চীনা সংস্থার মহাসচিব চেন ছি হুয়া, বাংলাদেশে প্রবাসী চীনা সংস্থার যুব কমিটির সভাপতি চাং ছিন পিন।

Also Read: চীনা মুদ্রায় দেশের ব্যাংকে লেনদেনের সুযোগ বাড়ল

Also Read: দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে চীনা মুদ্রা ব্যবহারের প্রস্তাব