“এই চা শ্রমিকরা ৫০ টাকা বেতন বাড়ানোর জন্য ১৯ দিন ধর্মঘট করেছে। ওই ৫০ টাকা থেকে নিশ্চয় দিনে ১০ টাকা বা ২০ টাকা ব্যয় করছে টেলিকমের পেছনে।”
Published : 19 Feb 2024, 06:45 PM
ইন্টারনেট এখন স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষরাও ব্যবহার করে জানিয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন- বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তাদের কেনা ডেটার পুরোটাই যেন ব্যবহার করতে পারে। কেনা ডেটার কোনো অংশ যেন কেটে নেওয়া না হয়।
‘ডেটা প্যাকেজের নামে কোনো ধরনের ফাঁকি গ্রহণযোগ্য নয়; উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব সতর্ক থাকতে চাই। এই মানুষগুলোর যেন ক্ষতি না হয়।”
সোমবার গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বিটিআরসির নতুন চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানে এক সংবাদ কর্মী ৩ দিন ও ১৫ দিন মেয়াদের ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজ বিক্রি বন্ধের নির্দেশনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা যে সার্ভিসটা দিচ্ছি তা কিন্তু নিচ্ছে এ দেশের রিকশাওয়ালা, গার্মেন্টস শ্রমিক, কাজের বুয়া, চা শ্রমিকরাও।
“এই চা শ্রমিকরা ৫০ টাকা বেতন বাড়ানোর জন্য ১৯ দিন ধর্মঘট করেছে। ওই ৫০ টাকা থেকে নিশ্চয় দিনে ১০ টাকা বা ২০ টাকা ব্যয় করছে টেলিকমের পেছনে।”
ইন্টারনেট ও টক টাইম দৈনিক খাবারের মতো প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কথা না বললে, ইন্টারনেট ব্যবহার না করলে মানুষ থাকতে পারে না।
“গ্রামের একজন মানুষ, যার আয় নগণ্য, সেও কিন্তু একজন ছেলে পাঠিয়েছে সৌদি আরব, মধ্যপ্রচ্যের কোনো দেশে বা মালয়েশিয়ায়। সে ভিডিও কল দিয়ে ইন্টারনেট ইউজ করছে। ভিডিও কল দিয়ে তার ছেলের সঙ্গে কথা বলছে। তার মানে এই সার্ভিসটি আমাদের কাছ থেকে সে পাচ্ছে। এখানে কোনো ফাঁকি দেওয়ার পক্ষে আমি না।”
গত ১৪ ডিসেম্বর বিটিআরসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান মহিউদ্দিন আহমেদ। দুই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসির মহাপরিচালক (স্পেকট্রাম বিভাগ) খলিল-উর-রহমান বলেন, “মোবাইল অপারেটরদের ডেটা প্যাকেজের সংখ্যা যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার পাশাপাশি প্যাকেজগুলোর দামেও কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। ডেটার দাম কমানো হয়েছে। আগামীতে টকটাইমের দামও কমে আসতে পারে।
“এখন আমাদের দেশে ক্যাস সার্ভার বসছে। সুতরাং যৌক্তিক সময়ে আবার কল রেট পর্যালোচনা করার পরিকল্পনা আছে আমাদের।”
৩ দিন ও ১৫ দিনের ডেটা প্যাকেজ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা যখন এই নির্দেশনাটা দিয়েছিলাম তখন (ডেটার) দাম বেশ বাড়ানো হয়েছিল। পরবর্তীতে আমরা মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে বসি এবং তাদেরকে সেটা (দাম) যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে বলি। এরপর অক্টোবরের পর থেকে দাম কমানো হয়েছে।”
তিনি বলেন, “ব্যান্ডউইথের দামেরও কিছু পরিবর্তন আসবে। সাবমেরিন ক্যাবলস এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রচার ক্যাবল (আইটিসি) পরিবর্তনের সময় সামঞ্জস্য রেখে যাতে দাম কমানো হয় সে বিষয়টাও আমরা দেখছি।”
সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে গত এক বছরে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেগুলো নিয়েও অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক হবে জানিয়ে খলিল-উর-রহমান বলেন, “বিদ্যমান নানা রকম সমস্যা দূর করে আরো কীভাবে গুণগত সেবা দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা করা হবে।”
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনের সম্মেলন কক্ষে এই মতবিনিময়ে বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামানও উপস্থিত ছিলেন।