বাংলাদেশি পণ্যের নতুন বাজার খোঁজার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

“অনেক দেশ আমাদের পণ্য আমদানি করতে চায়, তাই কোন দেশের কোন পণ্য দরকার- সেটি আমাদের খুঁজে বের করতে হবে,”বলেন সরকারপ্রধান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2023, 12:00 PM
Updated : 20 March 2023, 12:00 PM

টেকসই রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে বাংলাদেশি পণ্যের জন্যে নতুন বাজার খোঁজার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, “ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে চাহিদা বাড়ায় বাংলাদেশি পণ্যের জন্যে নতুন বাজার খোঁজার সুযোগ বিশ্বব্যাপী তৈরি হয়েছে। আমাদেরকে এসব বাজার ধরতে হবে।”

সোমবার গণভবনে রপ্তানি বিষয়ক জাতীয় কমিটির ১১তম সভায় তিনি এ আহ্বান জানান বলে বাসসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।

নতুন বাজার খোঁজার পাশাপাশি পোশাক, ওষুধ, ডিজিটাল ডিভাইসসহ রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের নতুন বাজার অন্বেষণ করতে হবে এবং রপ্তানি পণ্যের মধ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে।

“চার থেকে পাঁচটি রপ্তানি পণ্য ঠিক করতে হবে। অনেক দেশ আমাদের পণ্য আমদানি করতে চায়, তাই কোন দেশের কোন পণ্য দরকার- সেটি আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল ডিভাইসের চাহিদা বাড়ছে, তাই একে গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। 

বিশ্বজুড়ে প্রক্রিয়াজাত খাবারের চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

“অনেক দেশ আমাদের খাদ্য আমদানি করতে ইচ্ছে প্রকাশ করছে। এজন্য আমাদের খাদ্য সামগ্রী রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে।” 

শেখ হাসিনা বলেন, “ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে টেকসই রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জনে পদক্ষেপ নিতে হবে।”

২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া বিদ্যমান রপ্তানি নীতিমালার সংশোধন, পরিবর্তন ও উন্নয়ন করে আরও চার কিংবা পাঁচ বছরের জন্যে নতুন রপ্তানি নীতিমালা প্রণয়নেরও আহ্বান জানান সরকার প্রধান।

“চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, যুদ্ধের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এবং ২০২৬ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশে যেসব চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ তৈরি হতে পারে তা বিশ্লেষণ করে নতুন রপ্তানি নীতি গ্রহণ করা উচিত।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রয়োজন, এছাড়া কিছুই অর্জন করা যাবে না।”

রপ্তানি বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, “একটি দেশের অর্থনীতি মূলত রপ্তানির ওপর নির্ভর করায় আমরা রপ্তানি বাড়াতে অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছি। কাজেই আমরা এর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।”

রপ্তানি বাড়াতে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার তাদের সব ধরনের সহায়তা  দেবে।

“রপ্তানি বাড়ানোর জন্য আমরা বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি এবং এর জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে।”

আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে রপ্তানি খাতের বিকাশে বেসরকারি খাতের জন্য সবকিছু উন্মুক্ত করে দিয়েছিল বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

কোভিড মহামারীর ক্ষয়ক্ষতি পূরণের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজসহ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, রপ্তানি আয় ২০২২-২৩ অর্থবছরে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৩৭ দশমিক ০৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে, আগের অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় ছিল ৩৩ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার।

“আমরা কোভিড-১৯ মহামারী এবং ইউক্রেন যুদ্ধ সত্ত্বেও রপ্তানির প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছি।”

সরকার প্রধান বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সময় রপ্তানি থেকে আয় ছিল ১৬ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে সেই রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৬০ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।