১ নভেম্বর থেকে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত এ পরিমাণ চিনি বিদেশে বিক্রি করতে পারবে দেশটির কারখানাগুলো।
Published : 06 Nov 2022, 01:26 AM
আগের সিদ্ধান্ত থেকে সাময়িক সরে এসে ৬০ লাখ টন চিনি রপ্তানির ঘোষণা দিয়েছে ভারত।
শনিবার বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি রপ্তানিকারক দেশটির খাদ্য মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে ১ নভেম্বর থেকে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত এ পরিমাণ চিনি বিদেশে বিক্রি করতে অনুমোদন দেবে বলে জানিয়েছে।
রয়টার্স ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, চিনিকলগুলো কোটা অনুযায়ী ওই সময়ের জন্য রপ্তানি করতে পারবে।
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি চিনি উৎপাদনকারী দেশটি আরও এক বছরের জন্য চিনি রপ্তানিতে বিধিনিষেধ বাড়িয়েছিল। সেদিন আগের সময়সীমাকে বাড়িয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছিল।
দেশের অভ্যন্তরে দামে লাগাম টানতে বিশেষ করে উৎসবের সময় যাতে সংকটে দাম চড়ে না যায় সেজন্য এমন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে চিনি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ দিয়ে রেখেছে দেশটি।
শনিবার রয়টার্স লিখেছে, টানা দ্বিতীয় বছরের মত দেশটিতে রেকর্ড পরিমাণ চিনি উৎপাদন হতে যাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে চিনিকলগুলোর গত তিন বছরের উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে ৬০ লাখ টন রপ্তানির অনুমোদন দেওয়ার কথা ওই প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে।
প্রতিবেশী দেশটিতে অক্টোবর থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কাল আখ ও চিনির মৌসুম।
ভারত সব থেকে বেশি চিনি উৎপাদন করলেও ভোক্তা হিসেবেও তারা দ্বিতীয় অবস্থানে। আর রপ্তানিতে ব্রাজিলেরই পরই রয়েছে দেশটি।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের সূত্র ধরে অন্য সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সব রপ্তানিকারক কারখানার জন্য গত তিন বছরের উৎপাদনের ১৮ দশমিক ২৩ শতাংশ হিসেবে একইরকম রপ্তানির কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণহীন রপ্তানি, স্থানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্ত চিনি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে যৌক্তিক দর বজায় রাখতে ‘যৌক্তিক সীমা’ পর্যন্ত রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
আগামী মে মাসের পর উৎপাদনের তথ্যের ভিত্তিতে নতুন করে আবার রপ্তানির অনুমোদনের জন্য কোটা নির্ধারণ করা হবে।
নতুন মৌসুমে মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকে ইতোমধ্যে আখ মাড়াই পরবর্তী চিনির মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। উত্তর প্রদেশসহ আখ উৎপাদনকারী রাজ্যগুলোতে এক সপ্তাহের মধ্যে তা শুরু হবে।
২০২১-২২ অর্থবছর থেকে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ১ কোটি ১০ লাখ টন চিনি রপ্তানি করেছে দেশটি। ওই মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টন।
এর আগে সেপ্টেম্বরে ভারতের বাণিজ্য বিভাগ ও সরকারি সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছিল, অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া নতুন বিপণন বছরে প্রথম ধাপে ৫ মিলিয়ন টন চিনি রপ্তানির কথা ভাবছিল সরকার। দ্বিতীয় ধাপে ৩ মিলিয়ন টনসহ মোট ৮ মিলিয়ন টন চিনি রপ্তানির প্রত্যাশা ছিল।
ইন্ডিয়ান সুগার মিলিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, ২০২২-২৩ মৌসুমে ভারতের ৯০ লাখ টন চিনি রপ্তানি করতে পারত। আকর্ষণীয় মূল্যে ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে এই মৌসুমের জন্য অপরিশোধিত চিনি রপ্তানির লক্ষ্যে চুক্তি সই শুরু করেছে।
২০২২-২৩ বছরে ইথানলের জন্য ৪৫ লাখ টন চিনি বাদ দিয়েও ৩ কোটি ৬৫ লাখ টন চিনি উৎপাদনের আশা করছে ভারতে, যা আগের মওসুমের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি।