১০ বছর পেরিয়ে আসা নভোএয়ারের এমডি মফিজুর রহমান বলছেন, লাভজনক না হলেও ‘ব্যাতিক্রমী’ এয়ারলাইনের সুনাম কুড়াতে পেরেছেন তারা।
Published : 09 Jan 2023, 11:44 AM
বাংলাদেশে বেসরকারি বিমান সংস্থার বাজার সম্প্রসারণে সরকারি নীতি সহায়তার গুরুত্ব তুলে ধরলেন নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মফিজুর রহমান।
প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার কথা বলেন তিনি। তার ভাষ্যে, বাংলাদেশে কর এত বেশি যে যা বিমান পরিবহন শিল্পের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়।
নভোএয়ারের ১০ বছর পূর্তিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন মফিজুর, যিনি এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশেরও (এওএবি) মহাসচিব।
২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করা বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভোএয়ার দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের পাশাপাশি কলকাতায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
সাক্ষাৎকারে দেশে বিমান পরিবহন খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনার পাশাপাশি নভোএয়ারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন মফিজুর রহমান।
প্রশ্ন: ১০ বছরে নভোএয়ার আসলে কেমন করেছে, আপনার মূল্যায়ন কী?
উত্তর: আমরা সবসময় দেখতাম আমাদের অভ্যন্তরীণ রুটে কোয়ালিটি সার্ভিস এবং সেফটি এই দুটোর অভাব ছিল। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল একটা কোয়ালিটি সম্পন্ন ও নিরাপদ এয়ারলাইন করা। এই দুটো লক্ষ্য আমরা পূরণ করেছি বলে আমি মনে করি। আমাদের যাত্রীরা সেবা ও নিরাপত্তার মান নিয়ে সন্তুষ্ট। এয়ার এশিয়া বা লায়ন বা ইন্ডিগোর মতো এয়ারলাইন আমরা হতে পারবে না, সেটা আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে, কারণ সেই ধরনের পরিস্থিতি, অবকাঠামোগত অবস্থান বা আর্থিক সক্ষমতা আমাদের নেই। কিন্তু বাস্তব স্বপ্ন যেটা আমাদের ছিল… আমাদের এয়ারলাইনটা যেন রিজিওনাল বেসিসে মানুষ চিনতে পারে। এটার জন্য যে টাইমলাইনটা ছিল, সেটা আমরা মহামারীর অভিঘাত বলেন বা ইউক্রেইন যুদ্ধ, এসব কারণে এটা ফুলফিল হয়নি। আমরা এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। অভারঅল লাভজনক না হোক, আমরা একটি ব্যাতিক্রমী এয়ারলাইন তৈরি করতে চেয়েছিলাম। আমরা সেই সুনামটা অর্জন করতে পেরেছি। আশা করছি, দেশের বাইরেও নভোএয়ার একইভাবে সুনাম অর্জন করবে।
প্রশ্ন: বিশ্ব একটা মহামারীর পরপরই যুদ্ধ দেখছে, এসবের অভিঘাতে দেশের এভিয়েশন খাতের অবস্থা আসলে কী?
উত্তর: এয়ারলাইন এমন একটা খাত, যেটা বারবার বিভিন্ন অভিঘাতে আক্রান্ত হয়। আমরা যদি গালফ যুদ্ধের কথা বলি অথবা পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে ছোটোখাট ঘটনাও এই খাতকে প্রভাবিত করে। মূলত এসব পরিস্থিতিতে উড়োজাহাজের জ্বালনির দাম বেড়ে গিয়ে এই খাতটা ঝাঁকি খায়। ২০২০ ও ২০২১ সালজুড়ে কোভিড মহামারীর দীর্ঘ যে অভিঘাত ছিল এবং কেবল যখন এই খাতটা ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে, ঠিক সেই সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেইনের কনফ্লিক্টের জন্য তেলের দাম ভয়াবহভাবে বেড়ে যায়। শুধু তাই না সেখান থেকে বিশ্বব্যাপী মন্দার একটা আভাস চলে আসে, খাদ্যদ্রব্যের দামও বেড়ে গেছে এর প্রভাবে … সবকিছু মিলেই কিন্তু এভিয়েশন খাতটা সংকটে পড়ে যায়। এর সাথে আমাদের দেশের যে অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবম্যূল্যায়ন, মুদ্রাস্ফীতি সব মিলিয়ে আমাদের এভিয়েশন খাতটা খুবই সংকটের মধ্যে চলছে। বলতে হয়, আমরা একদম খাদের কিনারে।
প্রশ্ন: জেট ফুয়েলের দাম তো গত দুই বছর ধরেই বাড়ছে দেশের বাজারে, সরকারের কাছে আপনারা এ নিয়ে দেনদরবারও করেছেন। তার ফলাফলটা কী?
উত্তর: আমরা কিন্তু বরাবরই বলে আসছি, আমাদের দেশে তেলের দাম অতি মূল্যায়িত একটা বিষয়। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ার সাথে সাথেই আমাদের দেশে তেলের দামটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। যখন আবার বিশ্ববাজারে তেলের দামটা আগের জায়গায় আসে, তখন আমাদের দেশে কিন্তু দামটা আর সমন্বয় করা হয় না, সেই বাড়তিই থাকে। যার ফলে আমরা কিন্তু ব্যবসায়িকভাবে প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা সরকারের বিভিন্ন মহলে বারবার দেন-দরবার করছি, কিন্তু এটার কোনো সুরাহা হচ্ছে না। আমরা আমাদের মূল দাবি হলো বিপিসির (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন) মনোপলির অবসান। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেমন প্রতিযোগিতামূলক তেল কেনা যায় আমি যদি এখানে সেরকম দুই-তিনটি সরবরাহকারীর কাছ থেকে তেল নিতে পারি, তাহলে কিন্তু এই সমস্যাটা থাকে না। এটা শুধু দামের বিষয় না, সার্ভিসটাও এখানে ফ্যাক্টর। যখনই মনোপলি থাকে তখন সার্ভিসটা আর পাওয়া যায় না। যখন শুধু বিপিসি বা পদ্মার কাছ থেকে আমরা তেল নিই, তখন আমরা অনেকটা তাদের দয়ার উপর নির্ভরশীল হয়ে যাই। কিন্তু এখানেই যদি দুই বা তিনটি কোম্পানি থাকত, তাহলে আমরা কাঙ্ক্ষিত সেবাটা পেতাম, দামটাও হয়ত কমে আসতো। তেলের বাজারটা প্রতিযোগিতামূলকভাবে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমরা সম্প্রতি আমাদের জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। আমরা অপেক্ষায় আছি, আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
প্রশ্ন: বিমানযাত্রী তো বাড়ছে। প্রচুর বাংলাদেশি প্রবাসে থাকেন, অভিবাসী শ্রমিকদের ভিড় লেগে থাকে বিমানবন্দরে। দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলো এই বাজার ধরতে পারছে না?
উত্তর: মূল বাজার হচ্ছে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের যে বাজারটা। কিন্তু এই বাজারের ৮০ ভাগের উপরে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে ২০ থেকে ১৮ শতাংশ দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর কব্জায় আছে। এখানে যেটা হচ্ছে, এভাবে আমাদের দেশ থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এক কোটি প্রবাসীর যে বাজারটা তা বিদেশিদের কব্জাতেই। বিরাট একটা সংখ্যা সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে, দক্ষিণ এশিয়ার মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর। এই বাজারটা দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলো অনেক আশাব্যঞ্জক। কিন্তু আমরা এই সুযোগটা নিতে পারছি না বিরাজমান অনেকগুলো সমস্যার কারণে।
আভ্যন্তরীণ বাজারে বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার, ইউএসবাংলা ও এয়ার অ্যাস্ট্রা আছে। এর আগে কয়েকটি এয়ারলাইন্স কিন্তু দেউলিয়া হয়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ বাজারে ৮০ ভাগ বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর দখলে, বাকি ২০ ভাগ বিমান করছে।
প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে সমস্যাগুলো কোথায়? আপনাদের উদ্যোগটাই বা কী?
উত্তর: খুব অল্প কথায় এর জবাব দেওয়া যাবে না। তবে মোটা দাগে বলা যায়, পলিসি সাপোর্টটা এখানে খুবই দরকার। পাশের দেশের কথাই যদি বলি, তারা এভিয়েশন খাতের জন্য যুগোপযোগী পলিসি করেছে, যাতে এই খাতটা বৈশ্বিকভাবে প্রতিযোগিতা করতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোও কিন্তু উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা কিন্তু এইক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি। যদিও সম্প্রতি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে যদিও সেটা খুবই অপ্রতুল এবং ধীরগতির।
এমনিতেই এয়ারলাইন খুবই একটা খরচবহুল খাত, তার উপর যদি অনেক ট্যাক্স হয়, তাহলে কিন্তু খাতটা বিকশিত হবে না। আইন ও পলিসির বাইরে আমাদের অবকাঠামোরও সীমাবদ্ধতা আছে। ফাইনালি বলব, এই খাতে অনেক বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এখানে বিনিয়োগ করা অনেক ব্যয়বহুল। সুদের হার এখানে ৯ থেকে ১৫ শতাংশ, অন্যান্য দেশে যেখানে এসব খাতে সুদের হার থাকে দুই শতাংশের মতো।
প্রশ্ন: অভ্যন্তরীণ বাজার সংকুচিত হচ্ছে বলে আপনারা বলে আসছেন, আসলে অবস্থাটা কী?
উত্তর: কোভিডের আগ পর্যন্ত বছরপ্রতি ১০ থেকে ১২ শতাংশ হারে অভ্যন্তরীণ বাজারটা সম্প্রসারিত হচ্ছিল। অতি সম্প্রতি পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর কিন্তু বরিশালের ফ্লাইট মোটামুটি বন্ধ হয়ে গেছে। একইসাথে অন্যতম আরেকটা গন্তব্য যশোর সেখানেও যাত্রী ২০-২৫ শতাংশে নেমে আসছে। যেখানে আগে আমরা যশোরে ডেইলি ১৫টা ফ্লাইট করতাম, সেখানে এখন পাঁচটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। মাঝে মাঝে তারও কম চলে আসে। তবুও পর্যাপ্ত যাত্রী নেই। অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলছে ফ্লাইটগুলো। অভ্যন্তরীণ বাজারটা অলরেডি সংকুচিত হয়ে গেছে। এখানে সম্প্রসারিত হওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। কক্সবাজার কিন্তু আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারের একটা বিরাট অংশ, মোট অভ্যন্তরীণ যাত্রীর ৩৫ ভাগই কক্সবাজারের। সেখানে নতুন রেললাইন হয়ে গেলে, কর্ণফুলী টানেল হয়ে যাওয়ার পর কক্সবাজারেও ৭০ ভাগ ফ্লাইট কমে যাবে বলে আমরা ধারণা করছি। এখানেও সংকুচিত হচ্ছে। আগামীতে আমরা যে দৃশ্যটা দেখব, তা হল আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারটা হয়ত ৭ থেকে ৮ শতাংশ বাড়বে, কিন্তু অভ্যন্তরীণ বাজারে বিরাট ধস নামবে। এখনি আমাদের মোট সক্ষমতার বিপরীতে চাহিদা আছে মোটে ৬০ শতাংশ।
প্রশ্ন: তাহলে আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে নভোএয়ার কী ধরনের পরিকল্পনা করছে?
উত্তর: বৈশ্বিক যে অনুমান, সে অনুযায়ী আগামী ২৫ বছর পর্যন্ত বছরে ৪ শতাংশ হারে আন্তর্জাতিক বাজারটা বাড়তে থাকবে। দক্ষিণ এশিয়ায় এই বৃদ্ধির হার হবে ৮ শতাংশ। এটা কিন্তু একটা বিরাট ব্যাপার। অলমোস্ট ছয়-সাত বছরে বাজারটা দ্বিগুণ হবে। আমরা যদি সেই প্রেক্ষিত দেখি, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারটা কিন্তু একটা খুবই সম্ভাবনাপূর্ণ জায়গা। এই বাজার ধরতে হলে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট বাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই্। নভোএয়ার থেকে আমরা আঞ্চলিক কানেকটিভিটির জন্য … আমি বলব আমাদের দৃষ্টি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গন্তব্যগুলো। সৌদি আরব থেকে উপসাগরীয় দেশগুলো, এদিকে ব্যাংকক, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর থেকে জাকার্তা; সার্বিকভাবে আমরা যদি বলি আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারের হিস্যা মাত্র ১৮ শতাংশ, যেখানে যাত্রীদের ৯৫ শতাংশই বাংলাদেশি। এই বাজারটা ধরতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
প্রশ্ন: এজন্য নভোএয়ার কি নতুন উড়োজাহাজ সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে?
উত্তর: আমাদের এখন যে সাতটি এয়ারক্রাফট রয়েছে এগুলোর সবই এটিআর ১৭২ টার্বোপ্রপ। এগুলো অভ্যন্তরীণ গন্তব্য এবং পাশের দেশের কিছু বিমানবন্দরে সেবা দেওয়ার জন্য। যখনই আমরা আঞ্চলিক বৃদ্ধির কথা ভাবব, তখন এই এয়ারক্রাফটে হবে না। আমাদের হায়ার ক্যাপাসিটির এয়ারক্রাফট যেটাকে আমরা বলি ন্যারোবডির… এরকম এয়ারক্রাফট সংগ্রহের জন্য আমাদের পরিকল্পনা এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন: উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশের উচ্চ করহারসহ বিভিন্ন ধরনের শুল্ক নিয়ে অনেকদিন থেকেই বাংলাদেশ এভিয়েশন খাত সংশ্লিষ্টরা সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার করছে। তাতে কি কোনো লাভ হয়েছে?
উত্তর: দেখুন আমরা অদ্যাবধি এই বিষয়ে খুব একটা সাড়া পাইনি। বরং নতুন করে কিছু ভ্যাট ও ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। আমি যদি বলি, গত ১০ বছরে আমাদের এই এয়ারলাইন্স কোনো প্রফিট করতে পারেনি, অথচ একটা অঙ্কের প্রফিট ধরে সরকার কিন্তু আমাদের কাছ থেকে ট্যাক্স কেটে নিয়ে যাচ্ছে। খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে অগ্রিম ট্যাক্স, অগ্রিম আয়কর ইত্যাদি মিলিয়ে এখনো আমরা ২৫ থেকে ২৬ শতাংশ ট্যাক্স দিয়েই যাচ্ছি। যেখানে সারাবিশ্বব্যাপী এয়ারক্রাফটের স্পেয়ার পার্টসগুলো শূন্য ট্যাক্সে আমদানি করতে দেয়। অথচ আমাদের বিভিন্ন স্তরে ২৬ শতাংশ এখনই দিতে হয়। কিছু কিছু স্পেয়ার দেড়শ-দুইশ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়। এভাবে একটা শিল্প এগিয়ে যেতে পারে না।
প্রশ্ন: এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণের জনবলও কি আমদানিনির্ভর?
উত্তর: অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে স্বাধীনতার ৫০ বছরেও উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ জনবল আমরা তৈরি করতে পারিনি। এখনও মূল জায়গা, যেটা মানে যারা সার্টিফাই করে, সেই জায়গায় কিন্তু আমরা বিদেশি প্রকৌশলীনির্ভর। যেখানে আমরা পাইলটদের ক্ষেত্রে কিন্তু স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখানে আমাদের আইনের কিছু দুর্বলতা আছে প্রশিক্ষিত জনবলের সরবরাহের কিছু ঘাটতি আছে। সবমিলিয়ে আমরা একটা ভাগ যেটা আমাদের নিচের স্তরের টেকনিশিয়ান, সেটা আমরা দেশীয় জনবল নিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু যে কাজটা একজন করতে পারত, সেটা করতে এখনও পাঁচজন লাগে। কারণ দক্ষতার অভাব। আর যারা সার্টিফাইড ইঞ্জিনিয়ার তাদের কিন্তু আমাদের বিদেশ থেকে আনাতে হয়। ওটাতে এখনও আমরা বিদেশনির্ভর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু এভিয়েশন অ্যান্ড এরোস্পেস ইউনিভার্সিটি হয়েছে, যেটার মূল ক্যাম্পাস লালমনিরহাটে, বর্তমানে অস্থায়ী ক্যাম্পাস ঢাকায়। এখান থেকে ভবিষ্যতে টেকনিকাল জনবল বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছি।