কৃত্রিম তন্তু: ভারতকে কাঁচামালের নতুন উৎস ভাবছে বাংলাদেশ

আগামী সপ্তাহে প্রতিবেশী দেশটিতে যাচ্ছে পোশাক রপ্তানিকারকদের একটি প্রতিনিধি দল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2023, 06:31 PM
Updated : 6 Feb 2023, 06:31 PM

পোশাক শিল্পের কাঁচামাল কৃত্রিম তন্তুর নতুন উৎস হিসেবে চীনের পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারতকে চিন্তা করছেন বাংলাদেশের কারখানা মালিকরা।

উচ্চমূল্যের পোশাক তৈরির পাশাপাশি পোশাক পণ্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলছেন রপ্তানিকারকরা।

দীর্ঘদিন ধরে তুলা ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক আঁশ থেকে উৎপাদিত কাপড়ের পোশাক রপ্তানি করা শিল্প মালিকরা গত দুই বছর ধরে উচ্চমূল্যের ম্যান মেইড ফাইবার বা কৃত্রিম তন্তুর পোশাক রপ্তানির চেষ্টা করছেন।

এই লক্ষ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ ‘কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ বা সিআইটিআইকে সঙ্গে নিয়ে আগামী ৯ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি ভারতে দুটি ‘টেক্সটাইল সোর্সিং মিট' এবং রোড শো করছে।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান ও সহ সভাপতি শহিদউল্লাহ আজিমসহ পোশাক খাতের একটি প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেবে।

প্রতিনিধিদলটি ভারতের শীর্ষ টেক্সটাইল প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে দিল্লি, আহমেদাবাদ ও সুরাট তিনটি শহরে পরিকল্পিত টেক্সটাইল সোর্সিং রোড শোতে যোগ দেবে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিএমইএ জানায়, প্রথম বৈঠকটি ৯ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে হবে। ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি আহমেদাবাদ এবং সুরাটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠক দুটি হবে।

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য তৈরি পোশাকের বেশির ভাগই আমদানি করা কাঁচামাল নির্ভর। ৪২ বিলিয়ন রপ্তানি আয়ের এ খাতের সহায়ক হিসেবে সম্প্রতি দেশে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ গড়ে উঠেছে। কাঁচামালের বড় একটি অংশ নতুন নতুন বস্ত্র কারখানা থেকেও আসছে।

Also Read: পোশাক রপ্তানি বাড়াতে কৃত্রিম তন্তুতে সহায়তা চান ব্যবসায়ীরা

বিজিএমইএর সহ সভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভারতে বিশ্বমানের ম্যান মেইড ফাইবারভিত্তিক কাপড় তৈরি হয়। চীনের বিকল্প হিসেবে ভারত থেকে তা আনা গেলে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। এছাড়া আমরা ভারতের ব্যবসায়ীদেরকে তাদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে কৃত্রিম তন্তুর প্লান্ট স্থাপনের আহ্বান জানাব।

পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চীন থেকে বছরে অন্তত ৫ বিলিয়ন ডলারের কাপড় বা কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। ভারত থেকে এসব পণ্য আমদানি করা গেলে আর কিছু না হলেও সময় সাশ্রয় হবে।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে পোশাক রপ্তানির ১০০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য অর্জনে ম্যান মেইড ফাইবারের পণ্যকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ভারতের এ সফর এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

এতে আরও বলা হয়, “ম্যান মেইড ফাইবারভিত্তিক পোশাকের চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে এবং ভারত ম্যান মেইড ফাইবারভিত্তিক ফেব্রিক্স, বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশন ফেব্রিক্স উৎপাদনে বিশেষভাবে পারঙ্গম ও নির্ভরযোগ্য উৎস।

“যেহেতু ভারতীয় টেক্সটাইল সাপ্লাই চেইন অত্যন্ত বিস্তৃত এবং একই সাথে খন্ডিত, তাই বিজিএমইএ ফ্যাশন এবং টেক্সটাইল সামগ্রী আমদানির জন্য ভারতের সঠিক সরবরাহকারীদের সাথে দ্রুত সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করবে।”

এ লক্ষ্যে বিজিএমইএ উভয় দেশের স্থল বন্দরগুলো পুরোদমে চালু, পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে যানজট কমানো এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের কাঁচামাল যেন নির্বিঘ্নে রেলের মাধ্যমে আসতে পারে, সেজন্য উভয় দেশের সরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে।