চামড়া শিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের মধ্যে যারা ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে খেলাপি হয়েছেন, তারা ঋণ পুনঃতফসিল করতে আরও তিন মাস সময় পেলেন।
Published : 20 Jul 2020, 07:42 PM
মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে তারা ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারবেন। এই সুবিধা পেতে ২৯ অক্টোবরের মধ্যে আবেদন করতে হবে বলে সোমবার এক সার্কুলারে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত ৫ জুলাই এক সার্কুলারে এই সুবিধা পেতে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জারি করা সোমবারের সার্কুলারে তা বাড়ানো হল।
চামড়া শিল্পে সারা বছর ধরে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় অর্ধেকের যোগান আসে প্রতিবছর ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া থেকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, “এ সময় কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান নিশ্চিত করা সম্ভব হলে একদিকে মূল্যবান কাঁচামাল সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে, অন্যদিকে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে উপকৃত হবে।”
এই যুক্তি দিয়েই গত ৫ জুলাই চামড়া শিল্পের উদ্যোক্তাদের ঋণ পুনঃতফসিল করার সুযোগ দেওয়া হয়। সেদিনের সার্কুলারে যেসব নিয়মের কথা বলা হয়েছিল, বর্ধিত সময়ে সেগুলোই বহাল থাকবে বলে সোমবারের সার্কুলারে জানানো হয়েছে।
>> গত ৩০ জুন ঋণের যে স্থিতি ছিল, তার ন্যূনতম ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে। ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ব্যাংকগুলো নিজেরাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ইতোপূর্বে আদায় করা কিস্তি ডাউন পেমেন্ট হিসেবে গণ্য হবে না।
>> ঋণ গ্রহীতাদের আওতার বাইরে কোনো কারণে ঋণ শ্রেণিকৃত হয়ে থাকলে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সচল থাকলে এ সার্কুলারের আওতায় পুনঃতফসিল সুবিধা দেওয়া যাবে।
>> কেইস-টু-কেইস ভিত্তিতে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ তলবি ও চলমান ঋণ সর্বোচ্চ ছয় বছর মেয়াদে এবং মেয়াদী ঋণ সর্বোচ্চ আট বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করা যাবে।
>> কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া কেনার জন্য নতুন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ‘কম্প্রোমাইজড অ্যামাউন্ট’ গ্রহণের শর্ত শিথিল করা যাবে।
>> ২৯ অক্টোবরের মধ্যে এ সার্কুলারের আওতায় ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য আবেদন করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, চামড়া খাতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণই সোয়া ৩ হাজার কোটি টাকা। যার বেশির ভাগই দীর্ঘদিনের পুরনো ঋণ।
এই সোয়া ৩ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের ৯০ শতাংশই আবার রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের।