গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও রবি গত ৫ বছরে গুগল, ফেইসবুক, ইউটিউব, ইয়াহু, হোয়াটসঅ্যাপ, আমাজন, ইমোসহ অন্যান্য ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে বিজ্ঞাপন বাবদ যে অর্থ দিয়েছে, তা নিয়ে বিটিআরসি ও এনবিআরের হিসাবে বড় ফারাক দেখা গেছে।
Published : 23 Aug 2019, 12:15 AM
এই অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার ৭৪৪ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা বলে হাই কোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি।
অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অঙ্কে ১৩৩ কোটি টাকা।
পরে আদালত আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংককে হিসাবের এই পার্থক্যের কারণ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
একই সঙ্গে ইন্টারনেটভিত্তিক এসব মাধ্যম বা প্লাটফর্ম থেকে রাজস্ব আদায়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাও এনবিআরকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার বিটিআরসির পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন আইনজীবী এ কে এম আলমগীর পারভেজ। রিট আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খালেদ হামিদ চৌধুরী।
পল্লব পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২৩ জুন বিটিআরসি, এনবিআর এ দুটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে। প্রতিবেদন দেখে আদালত হিসাবের এই বিশাল গড়মিলের বিষয়ে এনবিআরকে ব্যাখ্যা দিতে বলে। বাংলাদেশ ব্যাংককেও এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সেদিন কোনো প্রতিবেদন দেয়নি।
“ব্যাখ্যা দাখিলের জন্য এনবিআর আজ আবার সময় চায়। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে আইনজীবী খালেদ হামিদ চৌধুরী ওকালতনামা দাখিল করে সময় চান। পরে আদালত ২০ অক্টোবর শুনানির পরবর্তী তারিখ রেখে এর মধ্যে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংককে ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ দেন।”
আদালতে বিটিআরসির সিস্টেমস এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের উপ পরিচালক প্রকৌশলী মো. নাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এর মধ্যে গ্রামীণফোন দিয়েছে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার ৬২৯ ডলার, বাংলালিংক দিয়েছে ২৮ কোটি ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার ৯৬৭ ডলার এবং রবি দিয়েছে ৩২ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
এর আগে সার্চ ইঞ্জিন গুগল, ইয়াহু, ই-কমার্সের আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম এমাজন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবসহ ইন্টারনেট ভিত্তিক সকল প্লাটফর্ম থেকে বিজ্ঞাপন, ডোমেইন বিক্রি, লাইসেন্স ফি’সহ সব প্রকার লেনদেন থকে উৎসে কর, শুল্কসহ সব ধরনের রাজস্ব আদায়ের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১২ এপ্রিল রুলসহ এ আদেশ দিয়েছিল আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, মোহাম্মদ কাউসার, আবু জাফর মো. সালেহ, অপূর্ব কুমার বিশ্বাস, মোহাম্মদ সাজ্জাদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের এ রিট আবেদনটি করেছিলেন।