আইনটি যুগোপযোগী করতে যে খসড়া করা হয়েছে, তাতে উচ্চহারে জরিমানা ও জামিন অযোগ্য ধারার মত কিছু বিষয়ে সংশোধন চান অংশীজনেরা।
Published : 05 Jun 2024, 11:58 PM
টেলিযোগাযোগ আইনের খসড়ায় কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি আছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে বিষয়ে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এই খসড়া নিয়ে যারা আপত্তি জানিয়েছেন, তাদের সবার সঙ্গে কথা বলে একটি কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বিদ্যমান টেলিযোগাযোগ আইনটি ২৩ বছরের পুরনো। সেটি যুগোপযোগী করতে আইনের নতুন যে খসড়া করা হয়েছে তাতে উচ্চহারে জরিমানা এবং যে কোনো ধরনের অপরাধকে জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। এসবের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয়কে টেলিযোগাযোগ খাতের বিকাশের অন্তরায় বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মিলনায়তনে নতুন টেলিকম আইনের খসড়ার ওপর আলোচনার আয়োজন করা হয়। এর বিষয় ছিল ‘এনাবেলিং স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১: রিফর্ম অব দ্যা টেলিকম অ্যাক্ট অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’।
মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন-অ্যামটব এর সহায়তায় এর আয়োজন করে টেলিযোগাযোগ খাতের রিপোর্টারদের সংগঠন টিআরএনবি। টেলিযোগাযোগ সেবা ও প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সেখানে মতামত তুলে ধরেন।
মূল উপস্থাপনায় বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল হক বলেন, “খসড়া আইনে ‘অশ্লীল কনটেন্ট’ আদান-প্রদানের জন্য লঘুদণ্ড এবং টেলিফোনে আড়িপাতার মত বিষয়কে হালনাগাদ করার কথা আছে। ই-কমার্স ও ওটিটির মত স্মার্ট সেবাসহ নতুন আইনের খসড়ায় ৯টি ধারণা যুক্ত করা হয়েছে।”
অ্যামটব এর পক্ষ থেকে মোবাইল ফোন অপারেটর রবির কর্মকর্তা শাহেদ আলম বলেন, “ভিওআইপি ও তরঙ্গ-বিষয়ক আইন বাস্তবায়ন সহজ নয়। এ আইনে আমরা আইসিটি-বিষয়ক উপদেষ্টার দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ দেখছি না।”
অ্যামটব এর সভাপতি ইয়াসির আজমান বিধিবিধান ভঙ্গে উচ্চহারে জরিমানা ও জামিন অযোগ্য ধারা রাখার সমালোচনা করে বলেন, “মাথার ওপর অজামিনযোগ্য ধারার খড়্গ নিয়ে আমি কীভাবে এখানে সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করব?”
১৪ জনের বক্তব্য শোনার পর প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, “জরিমানার বিষয়টি আরেকটু কমিয়ে আনা যায় কিনা, সেটা আমি বলব। আরেকটা হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রতিষ্ঠান-প্রধানকে যদি অজামিনযোগ্য মামলায় পড়তে হয়, সেটা তার জন্য মানসিক ভীতি তৈরি করবে। সেটা বিদেশি কোম্পানি হোক বা দেশীয় স্টার্ট-আপ যাই হোক না কেন।
“গ্রামীণ ফোনের সিইও যেভাবে বলছেন, উনি এজন্য চাকরি ছেড়ে দেবেন কি না। তো, আমি এটুকু আশ্বস্ত করছি, যেসব বিচ্যুতির কথা উঠল সেগুলো আপনাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করার।”
এর পরই বিষয়টি সমন্বয়ের জন্য ৯ সদস্যের কমিটি করে প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব দেন টিআরএনবির সভাপতি রাশেদ মেহেদীকে, যিনি সভাটি সঞ্চালনা করছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমরা মনে করি, সংশোধিত টেলিকম আইনটি হবে সময়োপযোগী, উদার, বিশ্বেরর সেরা আইনের সর্বোত্তম চর্চার মাধ্যমে ভবিষ্যৎমুখী, ব্যবসাবান্ধব ও নাগরিকবান্ধব। এ জন্য আইনটির বিষয়ে যে প্রস্তাবনা এসেছে, তা নিয়ে কোনো মতবিরোধ নেই।”
আলোচনায় অংশ নেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ, ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন-আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক, মোবাইল টাওয়ার কোম্পানির ‘ই ডটকো’র কান্ট্রি ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল আইজ্যাক, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা নগদ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট সজল জাহিদ।