পেঁয়াজের বাজার আরও পর্যবেক্ষণ করতে চান কৃষিমন্ত্রী

বর্তমান সময়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৪৫ টাকার মধ্যে থাকা ‘যুক্তিসঙ্গত’ হবে বলে মনে করেন কৃষিমন্ত্রী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2023, 07:55 AM
Updated : 21 May 2023, 07:55 AM

পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমতির দিকে থাকায় আরও দুই-তিন দিন বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কৃষিমন্ত্রীর মতবিনিময়ের সময় পেঁয়াজের প্রসঙ্গ আসে।

খুচরা বাজারে ভালো মানের পেঁয়াজ এখন প্রতিকেজি ৮০ টাকা, যা একমাস আগেও ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে ছিল।

এ পরিস্থিতিতে গত ১০দিন ধরে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে বলে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত ঘোষণা এখনও আসেনি।  

কৃষিমন্ত্রী বলেন, গেল ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা চলছে। হঠাৎ করে দাম বেড়ে যায়, আবার কিছুটা কমে যায়। দু-একদিনের ব্যবধানে বাজার ওঠানামা করে।

“এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা গত চার-পাঁচদিন ধরে বাজার বোঝার চেষ্টা করছি। বাজারে কী হচ্ছে; তা দেখছি। ৮০ টাকা কেজি পেঁয়াজ কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। সেই তুলনায় আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দাম অনেক কম। সেখান থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে বাজারকে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে পারি।”

তিনি বলেন, “আমরা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের খবর নেওয়ার চেষ্টা করেছি, কৃষকদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। অধিকাংশ কৃষক বলেছেন, তাদের কাছে পেঁয়াজ পর্যাপ্ত রয়েছ। দাম বৃদ্ধি হওয়ার আশায় তারা ধরে রেখেছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ে কথা বলেছি। দুই-তিন দিনের মধ্যেই আপনারা সিদ্ধান্ত পাবেন যে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে কিনা। 

“আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের চেষ্টা করছি। গতকাল পেঁয়াজের দাম মণে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে কমেছে। যেহেতু কমার লক্ষণ দেখা দিয়েছে আমরা দুয়েকদিন দেখব। জানি মধ্যম আয়ের ও সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। তার পরেও আমরা শেষ পর্যন্ত চাষীর স্বার্থটা দেখতে চাচ্ছি।”

সরকার পেঁয়াজের ‘সিন্ডিকেটকে’ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভেতরে ভেতরে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পেঁয়াজের দামটা প্রতি কেজি ৪৫ টাকার বেশি হওয়া উচিৎ না।”

তিনি বলেন, গত বছর পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হয়েছিল। মজুতদ ভালো ছিল। পরে অনেক পেঁয়াজ পচে গেছে।

“অনেক আড়ৎদার দাম বাড়ার আশায় পেঁয়াজ মজুদ রেখে দিয়েছিলেন। পরে তা নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু চলতি বছরে আমাদের পেঁয়াজ আবাদ কম হয়েছে।”

সে কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন গতবারের তুলনায় দুই লাখ টনের মত কম হয়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বছরের ২৮ থেকে ৩০ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৪০ লাখ টনের মত। চাষীরা এবার ভুট্টা ও সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকেছে। সে কারণে উৎপাদন কিছুটা কমে গেছে।”  

Also Read: লোকসানে পেঁয়াজ বেচেছেন কৃষক, ‘মজুতদারিতেই’ দাম তিন গুণ

Also Read: আমদানির ‘হুঁশিয়ারিতেও’ এক মাসে পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৮০

Also Read: পেঁয়াজের ঝাঁজ বাড়ছেই, সরকারের ‘পর্যবেক্ষণ’ শেষ হচ্ছে না