“বিনিয়োগের তেমন খাত না থাকায় আমানত ব্যাংকেই ফিরেছে”, মনে করেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।
Published : 14 Mar 2025, 12:40 AM
দেশে কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ডিসেম্বর শেষে আগের তিন মাসের চেয়ে ৪ হাজার ৯৫৪টি বা ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং স্ট্যাটিসটিকস’ প্রতিবেদন বলছে, ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে কোটি টাকার বেশি আমানত থাকা হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ৮১টি। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে যা ছিল ১ লাখ ১৭ হাজার ১২৭টি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ১ লাখ ২২ হাজার ৮১টি হিসাবে মোট জমা রয়েছে ৭ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। আগের প্রান্তিকে এর পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা।
সে হিসাবে তিন মাসে আমানত বেড়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
কোটি টাকার ওপর আমানত থাকা ব্যক্তি পর্যায়ের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তাতে দেখা যায়, আগের প্রান্তিকের চেয়ে ডিসেম্বরে এসে এ ধরনের হিসাবের সংখ্যা ১ হাজার ৭২টি বেড়ে হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৭৯টি। এসব হিসাবে মোট জমার পরিমাণ ছিল ৯৩ হাজার ৮০ কোটি টাকা।
সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যক্তি পর্যায়ে এ ধরনের ব্যাংক হিসাব ছিল ৩৩ হাজার ৮৬১টি; আমানতের পরিমাণ ছিল ৮৩ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা।
অর্থাৎ তিন মাসে হিসাব বেড়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ; আমানত বেড়েছে ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
কোটি টাকার আমানত বাড়ার কারণ হিসেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “সরকার পালাবদলের পর ব্যাংক খাত নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।
“তখন ব্যাংক শতভাগ সিকিউরড খাত হবে কিনা, এমন দ্বিধায় অনেকে ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিয়েছিলেন। সে সময় এসব হিসাব থেকেও আমানত তুলে নেওয়া হয়।“
তিনি বলেন, “সরকার পতনের পর ব্যাংকগুলোর পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ এ খাত নিয়ে আবার আস্থা তৈরি হয়।
“এছাড়া বিনিয়োগের তেমন খাত না থাকায় আমানত ব্যাংকেই ফিরে এসেছে। এজন্য কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা হিসাব সংখ্যা বেড়েছে।“
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধতন এক কর্মকর্তা বলেন, “বর্তমানে কোনো কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক আমানতে সুদহার ৮ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত দিচ্ছে। ফলে অনেকেই এখন ব্যাংকে আমানত রাখতে আগ্রহী হচ্ছেন।”
সরকার পতনের পর ব্যাংকিং খাতে সংস্কার শুরু হয়। সে সময় ইসলামী ধারার অনেক ব্যাংকে সরাসরি তারল্য সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
গভর্নরও বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বলেন, অবৈধভাবে কোনো ব্যাংকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন