দেশি ও বিশ্ববাজার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে আপাতত ৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেবে সরকার।
Published : 16 Sep 2022, 07:03 PM
অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম প্রতি মাসে বেঁধে দিতে সরকারের তরফে যে উদ্যোগের কথা জানানো হয়েছিল তা বাস্তবায়নে আরেক সপ্তাহ সময় চাইলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেছেন, “বিশ্ববাজারের মূল্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দেশের বাজারে আপাতত ৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। আগামী সাত দিনের মধ্যে হয়ত তা করা সম্ভব হবে। সব দোকানে এই তালিকা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে; কেউ যাতে বাড়তি দাম নিতে না পারে।”
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানান তিনি।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর দাবি যৌক্তিক বলেও মন্তব্য করেন। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ও বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির কারণে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
গত ৩০ অগাস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য, সরবরাহ ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
তখন জানানো হয়েছিল, ১৫ দিনের মধ্যে ট্যারিফ কমিশন এসব পণ্যের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে একটা যৌক্তিক মূল্য ঘোষণা করবে।
ওই বৈঠকের দুই সপ্তাহ পেরোনোর পর আরও সাত দিন সময়ের কথা জানালেন মন্ত্রী।
“আমরা ট্যারিফ কমিশনকে ১৫ দিন সময় দিয়েছি। আরও হয়তো ৭ দিন সময় লাগবে এ কাজে। আপাতত রড, সিমেন্টের পাশাপাশি চাল, গম (আটা, ময়দা), ভোজ্যতেল (সয়াবিন, পাম), পরিশোধিত চিনি, মশুর ডাল, পেঁয়াজ ও ডিমের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন পণ্য এর সঙ্গে যোগ করা হবে।”
শুক্রবার দুপুরে প্রেস ক্লাবে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ১৬তম বার্ষিক সম্মেলনে বক্তৃতা করেন টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, “শ্রমিকদের ঘামের মূল্য রক্তের মূল্যের চেয়ে কম নয়। একটি খাত টেকসই করার জন্য শ্রমিক ও মলিক উভয়ের স্বার্থ নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। এজন্য শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত হবার পাশাপাশি পণ্যের উপযুক্ত মূল্যও নিশ্চিত হওয়া দরকার।”
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ও বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির কারণে এখনই পোশাক শ্রমিকদের মজুরি পর্যালোচনা করা প্রয়োজন মন্তব্য করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বেড়েছে, বাংলাদেশেও বেড়েছে। শ্রমিকদের কষ্ট হচ্ছে, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি যৌক্তিক।
“এজন্য মজুরি কমিশন গঠন করে শ্রমিকদের জীবনযাত্রার ব্যয়, পণ্যের মূল্য, উৎপাদন ব্যয় সার্বিক দিকগুলো নিয়ে একটি গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। যেটা যৌক্তিক মজুরি, সেটাই হওয়া প্রয়োজন।”
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন নাহার, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোবেদা পারভীন।
‘কিছু পণ্যের’ দাম প্রতি মাসে বেঁধে দেবে সরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী