“প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আমাদের এই কথাগুলো কখনও শোনেনা। তারা আমাদেরকে এখন কোনো বৈঠকেও ডাকেনা। কেবল করপোরেটদের নিয়ে বৈঠক করে।”
Published : 23 Aug 2023, 07:09 PM
মুরগি ও ডিমের বাজারে অস্থিতার জন্য করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোরে একক আধিপত্য ও কারসাজি রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন-বিপিএ।
খামারিদের এই সংগঠনটি বলছে, সরকারের প্রণিসম্পদ অধিদপ্তর শুধু করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গেই বৈঠক করে, তাদেরকে ডাকা হয় না।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, “বর্তমানে করপোরেট প্রতিষ্ঠানাগুলোর একক আধিপত্য ও তাদের কারসাজির কারণে ডিম-মুরগির বাজার কিছুদিন পর পর অস্থির হয়ে উঠছে।”
জাতীয় পোল্ট্রি উন্নয়ন নীতিমালা-২০০৮ সংশোধনের মাধ্যমে করপোরেট কোম্পানিগুলোকে আরও বেশি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে বিপিএ সভাপতি বলেন, “নতুন নীতিমালায় কন্টাক্ট ফার্মিংকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। বিদেশ থেকে একদিনের মুরগির বাচ্চা আমদানি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এগুলো করা হলে এই শিল্প করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কাছে আরও জিম্মি হয়ে যাবে।”
সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এই খাতের করপোরেট কোম্পানিগুলোর ‘করপোরেট অফিসে’ পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সুমন হাওলাদার।
“প্রান্তিক খামারিদেরকে নিজেদের অধীনে আনতে বড় কোম্পানিগুলো একবার ফিডের দাম বাড়িয়ে দেয়, আবার একদিনের বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দেয়। এতে করে ছোট খামারগুলোতে উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়ে তারা লোকসানের মুখে পড়ে। দেখা যাচ্ছে একদিনের বাচ্চার দাম কখনও ১০ টাকা আবার কখনও ১০০ টাকা। বাজার এতো হেরফের হলে তো গ্রামের একজন খামারি তার খামার টিকিয়ে রাখতে পারবেনা।”
তিনি বলেন, “প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আমাদের এই কথাগুলো কখনও শোনেনা। তারা আমাদেরকে এখন কোনো বৈঠকেও ডাকেনা। কেবল করপোরেটদের নিয়ে বৈঠক করে।”
বর্তমানে বাচ্চা ও ফিডের মূল্য অনুযায়ী, এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৬৭ টাকা, এক কেজি সোনালি মুরগির উৎপাদন খরচ ২৫৯ টাকা এবং একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৭৯ পয়সা বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
ডিম ও মুরগির দাম কমিয়ে আনতে পোল্ট্রি ফিড ও একদিনের বাচ্চার দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে বিপিএ সভাপতি বলেন, “ফিড উৎপাদন করতে কত খরচ হয় সরকারের উচিত সেখানে তদারকি করে দেখা। একদিনের বাচ্চা উৎপাদন করতে কত খরচ হয় সেখানেও তদারকি প্রয়োজন। কেবল খুচরা বাজারে অভিযান চালালে হবে না।”
সংবাদ সম্মেলনে বিপিএর সহসভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মেজবাউল হক, নোয়াখালী জেলার প্রতিনিধি জাকির হোসেন, গাজীপুর জেলার প্রতিনিধি অনিক সরকার, সাতক্ষীরা জেলার প্রতিনিধি তসলিম আলমসহ প্রান্তিক খামারি ও ডিলাররা উপস্থিত ছিলেন।