Published : 06 Oct 2017, 12:03 PM
খবরের কাগজে শিরোনামটা এইরকম হওয়া উচিত ছিলো- 'চার্জার রিকশা ফ্যাক্টরীর সব রিকশা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে'। এমনটা না হয়ে হলো – 'চালকের রিকশা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে'।
৭-৮ বছর আগে যখন এই চার্জার রিকশাগুলো ছিলো না তখন কি যানজট ছিলো না? যানজট ছিল ঠিকই, রিকশাও ছিল, ছিলো না শুধু ব্যাটারি! ব্যাটারি লাগিয়ে রিকশাগুলোর নাম হয়েছে অটো রিকশা! যানজটের চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বিদ্যুৎ! বিদ্যুৎ সব অটো রিকশাতে খেয়ে নিচ্ছে নাকি? ১০ বছর আগে গ্রীষ্মকালে আমাদের পল্লীবিদ্যুৎ এ দিনে ১২-১৩ ঘন্টা লোডশেডিং হত, এখন কমপক্ষে ৪-৫ ঘন্টা! মানলাম একটা রিকশা চার্জ করেত অনেক বিদ্যুৎ খরচ হয়। কিন্তু এই বিদুৎটুকু কেন আমরা পাচ্ছিনা? এত ভ্যাট, এত ভারতীয় বিদ্যুৎ তারপরেও হচ্ছেনা? সত্যিই তো হচ্ছেনা। কিন্তু কেন হচ্ছেনা?
নসিমন, ভুটভুটি সেই ২৫-৩০ বছর থেকে চলে আসছে, এরাও তো অবৈধ, যানযট সৃষ্টি করে, শব্দ দূষণ করে, ট্রাফিকের পকেটে ৫০ টাকা গুঁজে দেয়। এদের উচ্ছেদ করা উচিত ছিল ২৫ বছর আগেই। করা হচ্ছেনা। চালকদের জীবিকা জড়িয়ে গেছে এসবের সাথে।এদের উচ্ছেদ করা উচিত। উচ্ছেদ করলে নতুন কি কাজ করবে এই নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। কোনো কাজ পেয়ে যাবে তো?
যশোরে শেখ হাসিনা আইসিটি পার্কে জব ফেয়ারে যখন ১১০০ জনের বিপরীতে লক্ষাধিক শিক্ষিত বেকার যুবকের আবেদন জমা পড়ে তখন আরো লক্ষাধিক বেকারের সৃষ্টি হতে পারে এই রিকশা গুঁড়িয়ে দেয়ার অভিযানে। রিকশা হারানো অশিক্ষিত যুবক হোক অথবা ট্রিপল-ই ইঞ্জিনিয়ার বেকার তো বেকারই।
আমাদের দেশ তো আর ইউরোপ আমেরিকার মত না যে রাস্তায় নিজস্ব সব বড় বড় গাড়ি থাকবে, ট্যাক্সি থাকবে, রিকশার বদলে ১০ কিমি দূরত্ব ৩০০ টাকা ভাড়া দিয়ে মধ্যবিত্ত মানুষ ট্যাক্সিতে যাবে। বাংলাদেশের রাস্তায় কমপক্ষে আরো ২০ বছর গণহারে রিকশার দেখা মিলবে। রিকশা যখন একটু আধুনিক হলো তখন যেহেতু সরকারের ক্ষোভ যে এসব অবৈধ, তাহলে রিকশার ব্যাটারি খুলে চালকের হাতে ধরিয়ে দিলেই পারতো। সাথে ৫০০-১০০০ টাকা জরিমানা করলে রিকশাওয়ালা আর জীবনে রিকশাই ব্যাটারি লাগানোর সাহস করতো না। কারণ তাদের ৭ দিনে ১০০০ টাকা রোজগার হয় কিনা সন্দেহ। বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়ার দরকার ছিলো না।
যানজট নিয়ন্ত্রণের নামে এসব গরিব মানুষের পেটে লাথি মারা হচ্ছে না কি?