এ কথা বলতেই হবে মুজিব সিনেমা কোথাও ঝুলে পড়েনি।
Published : 22 Oct 2023, 01:38 AM
মুজিব সিনেমায় শুরু থেকে একজন সাধারণ ছেলের নেতা হবার গল্প বলে গেছেন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল ।
শুরুতেই বেগম ফজিলাতুন্নেসাকে দেখা যায় দাদার হাত ধরে টুঙ্গিপাড়া মুজিবের বাড়িতে অবস্থান করতে। বিয়ের আগের কোন দৃশ্যে বা বিয়ের পরের কোনো দৃশ্যে রেনুর বাবা-মায়ের সাথে দর্শকের কোনো পরিচয় ঘটে না । কিশোরী বেলার রেনু অর্থাৎ দিঘীকে কিছু সময়ের জন্যে দর্শকের সামনে উপস্থিত রেখে তার মা হবার পরের দৃশ্যগুলোতে তিশাকে দেখা যায়। যদিও মুজিবের তরুণ বয়স এবং পরিণত বয়স দুই জায়গাতেই আরেফিন শুভকে দেখানো হয়েছে।
ক্লোজ শটগুলোতে শুভর মুখের আদল মুজিবের মতই লেগেছে। এখানে মেকাপ আর্টিস্টকে পুরো কৃতিত্ব দিতে হবে। কয়েকটি সংলাপে বিশেষ করে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সাথে সংলাপের কয়েক জায়গায় শুভর নিজ্বস্ব কথা বলার ধরন চলে আসে, এছাড়া আরেফিন শুভ বরাবর দারুণ ছিল।
গান্ধীজির চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন তাকে সেরা অভিনেতার পুরস্কার দেওয়া উচিত। তার অভিনয়ে যেমন অভিব্যক্তি ছিল, তেমন ছিল তার কন্ঠের পরিবেশনা। যেন গান্ধীজিকেই চোখের সামনে দেখতে পেয়েছি।
এছাড়া এ কে ফজলুল হক চরিত্রে শহীদুল আলম সাচ্চু, খন্দকার মুশতাক চরিত্রে ফজলুর রহমান বাবু, তাজ উদ্দীন চরিত্রে রিয়াজ, আব্দুল হামিদ চরিত্রে গাজী রাকায়েত তাদের চরিত্র অনুযায়ী যতটা দেবার দিয়েছেন।
মুজিবের বাবা শেখ লুৎফর রহমান চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী পুনরায় দর্শক মন জয় করে নিয়েছেন। মুজিবের মায়ের ভূমিকায় সঙ্গীতা চৌধুরীকে সিনেমার প্রথমার্ধে দেখা গেলেও শেষের দিকে দিলারা জামানকে উপস্থাপন করা হয়। তার তেমন উল্লেখযোগ্য সংলাপ ছিল না। এতো বড় একজন অভিনেত্রীর আরো বেশি সময় পর্দা উপস্থিতি কাম্য ছিল। তাছাড়া শুভকে মেকাপ করে পরিনত বয়সের মুজিব বানানো গেলে সঙ্গীতাকে মেকাপ করেও বৃদ্ধা মা দেখানো যেত।
মুজিব সিনেমার দারুণ উপভোগ্য বিষয় হচ্ছে কালার গ্রেডিং। রঙ দিয়ে সত্তরের দশককে ২০২৩ সালের দর্শকের সামনে তুলে ধরেছেন পরিচালক। এ কথা বলতেই হবে মুজিব সিনেমা কোথাও ঝুলে পড়েনি। বাস্তব ঘটনাকে সেলুলয়েডে তুলে আনার মতো কঠিন কাজ শ্যাম বেনেগাল আগেও করেছেন। এবারো প্রমাণিত হলো, তিনি পারেন।
চট্রগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমানের পাঠ “I Major Zia, on behalf of our great national leader Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, do hereby declare [the] independence of Bangladesh” বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত সিনেমায় বাদ পড়ল কেন তা বোঝা গেল না।
আমার প্রিয় অভিনেতা খলিলুর রহমান কাদেরী ভাই আমাকে বলেছিলেন সিনেমাটি দেখে মন্তব্য করতে। উনার কোনো সংলাপ ছিল না সিনেমায়। তবু আমি মুগ্ধ হয়ে উনি সহ বাংলাদেশের প্রথম সারির সব মেধাবী অভিনেতাদের অভিনয় দেখেছি। এমন সিনেমা আমাদের অনেক আগেই নির্মাণ করা দরকার ছিল।
আপনার নিবন্ধিত ইমেইল থেকে অপ্রকাশিত লেখা (ইউনিকোডে)/ছবি/ভিডিও আকারে নাগরিক সংবাদ পাঠান [email protected] ঠিকানায়।
নিবন্ধিত নাগরিক সাংবাদিক হতে আপনার নাম (বাংলা ও ইংরেজিতে), ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেইল আইডি এবং ছবি [email protected] ঠিকানায় ইমেইল করুন।