প্রতিবেদন প্রস্তুত হওয়ার পরও দুদক তা দাখিল করছে না, আদালতে একথা বলেছেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী।
Published : 23 Aug 2023, 02:56 PM
সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ির মামলায় দুদককে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
দুদককে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন না দিলে আদালত অবমাননা হিসেবে ধরা হবে।
বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ থেকে এই আদেশ দেওয়া হয়।
মঙ্গলবারের মধ্যে দুদকের এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া কথা ছিল। তারা তা জমা দেয়নি।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
শুনানি শেষে সায়েদুল হক সুমন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিবেদন প্রস্তুত হওয়ার পরও দুদক প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করছে না। আদালত বলেছে, এটা আদালত অবমাননার (কনটেম্পচুয়াস) শামিল।
“আমি বলেছি, মনে হচ্ছে দুদক সালাম মুর্শেদীর সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন দাখিল করবে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিআইএল (জনস্বর্থে মামলা) করব; দুদকের হাতে তুলে দেব; আর তারা সুবিধা নেবে।”
বিজিএমইএ নেতা সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর সড়কের ২৯ নম্বর বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি বলে অভিযোগ তুলে সে বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ৩০ অক্টোবর রিট আবেদন করেন সুমন। সেই আবেদনে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
এরপর ২০২২ সালের ১ নভেম্বর সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে এ সম্পত্তি সম্পর্কিত সব কাগজপত্র ১০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) রাজউক, গণপূর্ত বিভাগ ও সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দেয় আদালত।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ বাড়ি সংক্রান্ত নথি ও প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউককে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। একইসঙ্গে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন দুদককে দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরপর ১৩ নভেম্বর বাড়িটি সম্পর্কিত কাগজপত্র হাই কোর্টে দাখিল করা হয়।
সুমন জানান, গত ২০ জুলাই দুদকের এক চিঠিতে জানানো হয়, অভিযোগের অনুসন্ধান শেষ করেছে দুদক গঠিত অনুসন্ধান টিম। অনুসন্ধান প্রতিবেদন দুদক কার্যালয়ে দাখিল করা হয়েছে এবং তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কমিশনের অনুমোদন পাওয়ার পর প্রতিবেদন হাই কোর্টে দাখিল করা হবে।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিলের শুনানির দিন ১৪ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে দুদককে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওইদিন সময় চেয়ে দুদকের আবেদনে বলা হয়েছিল, মামলায় ১৯৬০ সাল থেকে নথি পর্যালোচনা করতে সময় প্রয়োজন।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি বাড়িটি নিয়ে রাজউকের প্রতিবেদন হাই কোর্টে দাখিল করে বলা হয়, বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় নেই। পরিত্যক্ত ওই বাড়ির নকশাও (মূল লে আউট প্ল্যান) আদালতে জমা দেয় রাজউক।