কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একটি কনটেইনার ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষের পর এগার সিন্ধুর এক্সপ্রেসের দুটি বগি উল্টে হতাহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস।
পরিচালক (অপারেশন ও মেনটেইন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি করে ৫ সদস্যের এই কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার ফায়ার সার্ভিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সহকারী পরিচালক, (ময়মনসিংহ) মো, মাসুদ সরদার এই কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে আছেন। অন্য সদস্যরা হলেন- উপসহকারী পরিচালক (নরসিংদী) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, উপসহকারী পরিচালক (কিশোরগঞ্জ) মো. এনামুল হক এবং ভৈরব বাজার ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার মো. আজিজুল হক।
কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী এগার সিন্ধুর এক্সপ্রেস সোমবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন পার হওয়ার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে। উল্টো দিক থেকে ক্রসিং লাইনে আসা চট্টগ্রামগামী একটি কনটেইনার ট্রেন এগার সিন্ধুরের শেষের দিকে একটি বগিতে আঘাত করে।
সংঘর্ষের পর বগি দুটো উল্টে দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলে নিহত ১৭ জনের মধ্যে রাতে ভৈরব হাসপাতালে ১৬ জনের লাশ স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম জানান।
আহতদের স্থানীয় হাসপাতালের পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পঙ্গু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়।
ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য কনটেইনারবাহী ট্রেনের চালক ও তার সহকারীকে দায়ী করেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা জানতে পেয়েছি ওই কনটেইনারবাহী ট্রেনটির চালক ও সহকারী চালক সিগন্যাল অমান্য করায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তাদের দাঁড়ানোর কথা ছিল ভৈরব স্টেশনের আউটার সিগন্যালে।
“কিন্তু তারা সেটি না করে সিগন্যাল অমান্য করে ট্রেনটি চালিয়ে চলে আসে। একই সময় ভৈরব স্টেশন থেকে বের হয়ে ঢাকার পথে আসছিল যাত্রীবাহী এগার সিন্ধুর এক্সপ্রেস। চট্টগ্রামমুখী মালবাহী ট্রেনটির ইঞ্জিন এগার সিন্ধুরের পেছন থেকে তৃতীয় বগিতে আঘাত করে।”
ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার পর ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম, সিলেট ও কিশোরগঞ্জের সাত ঘণ্টা রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। দুই পাশের বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে বেশ কয়েকটি ট্রেন। ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন যাওয়ার পর একটি লাইন ক্লিয়ার হলে রাত পৌনে ১১টার দিকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
দুর্ঘটনার পর মালবাহী ট্রেনের চালক, সহকারী চালক ও পরিচালক (গার্ড)- এ তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি কমিটিতে তিন কর্ম দিবসের মধ্যে এবং অপরটিকে ও পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এর বাইরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে বলে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান।
আরও পড়ুন