ভারি বর্ষণে সুনামগঞ্জ-সিলেটের নিম্নাঞ্চলে বন্যার পূর্বাভাস

আষাঢ়ের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সিলেটে দেশের সর্বোচ্চ ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 June 2023, 03:46 PM
Updated : 15 June 2023, 03:46 PM

ঘূর্ণিঝড় মোখা আর কালেভদ্রে কালবৈশাখীর ঝাপটা ছাড়া তাপপ্রবাহের মধ্যেই কেটেছে গ্রীষ্ম; তবে এবার ভারি বর্ষণের আভাস নিয়ে আসা বর্ষায় জুন মাসের শেষার্ধ্বে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আষাঢ়ের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সিলেটে দেশের সর্বোচ্চ ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শ্রীমঙ্গলে হয়েছে ৩৫ মিলিমিটার।

আবহাওয়া অফিস বলছে, মৌসুমি বায়ু দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলে সক্রিয়। এছাড়া দেশের অন্যত্র মোটামুটি সক্রিয় অবস্থায় আছে।

এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা,  বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, আগামী দুই সপ্তাহে সুরমা-কুশিয়ারাসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। উজানে ভারি বর্ষণের কারণে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

“জুন মাসের প্রথমার্ধ হতে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর প্রভাব বিস্তার করায় দেশে ও উজানের অববাহিকার স্থানসমূহে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে।”

এই সময় দেশের উত্তরাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। জুনের শেষ সপ্তাহে এই অববাহিকার পানি সমতলে বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছতে পারে।

Also Read: ‘আষাঢ় মাইস্যা ভাসা পানি’ নেই এবার, বিপদে হাওর

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, জুনে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, ধরলা, তিস্তাসহ প্রধান নদ-নদীর পানি সমতলে অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে যমুনা নদী বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।

আগামী দুই সপ্তাহ গঙ্গা ও পদ্মায় স্বাভাবিক প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে; তবে তাতে এ অববাহিকায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানানো হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকা এবং উপকূলীয় অঞ্চলে আগামী দুই সপ্তাহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এই সময়ে ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা দেখছে না আবহাওয়া অফিস।

ছিল তাপপ্রবাহও

বর্ষা শুরুর দিন ভারি বর্ষণের আভাসের মধ্যেই দেশের কোথাও কোথায় তাপপ্রবাহ ছিল।

রাজশাহীতে দিনের সর্বোচ্চ ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকায় পারদ উঠেছিল সর্বোচ্চ ৩৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাজশাহী, যশোর এবং খুলনা জেলাসমূহের উপর দিয়ে তীব্র তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ঢাকা ও বরিশাল বিভাগসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্ঠাংশের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে. যা কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে।

“সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দেশের অন্যত্র তা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।”