কোচিং না করলে ফেইল করানোর ‘অপরাধজনক কাজ’ হচ্ছে: শিক্ষামন্ত্রী

ঢাকার হলিক্রস কলেজের এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনার মধ্যে শিক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্য এল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2022, 01:12 PM
Updated : 25 August 2022, 01:12 PM

দেশের কোথাও কোথাও শিক্ষকরা যে শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতে বাধ্য করছেন, সেই কথা এল খোদ শিক্ষামন্ত্রীর মুখ থেকে।

ঢাকার হলিক্রস কলেজের এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনার মধ্যে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী দীপু মনি বলেন, “কোচিং না করলে শিক্ষার্থীদের ফেইল করিয়ে দেওয়া অপরাধজনক কাজ, যা কোথাও কোথাও হচ্ছে।”

হলিক্রস স্কুলের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী গত মঙ্গলবার স্কুল থেকে ফিরে ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় বাসার ১০ তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকেই স্কুলের এক শিক্ষককে ইঙ্গিত করে বলছেন, তার কাছে প্রাইভেট না পড়লে তিনি ‘ফেইল করিয়ে দেন’। অভিভাবকদের পক্ষ থেকেও ফলাফল নিয়ে চাপ থাকার কথাও এসেছে।

প্রাইভেট পড়ানো বা কোচিং নিয়ে এর ধরনের অভিযোগ বহু পুরনো। স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানো নিয়েও কম কথা হয়নি। তবে সুরাহা হয়নি কোনো কিছুতেই।

সাংবাদিকরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোথাও কোথাও শিক্ষকরা নিজের ক্লাসে হয়ত ঠিকমত পড়ান না। কিংবা পড়ালেও চান যে তার ক্লাসের শিক্ষার্থীরা তার কাছে প্রাইভেটে কোচিং করতে যাবে।

“কেউ যদি না পড়ে, অনেক সময় তাকে বৈষম্যের চোখে দেখেন। কম নম্বর দেন। ফেল করিয়ে দেন। এ ধরনের ঘটনা কোথাও কোথাও ঘটে। সে জায়গাটি অনৈতিক।"

এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং করানোর সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

“কোচিংয়ের সমস্যাটা হল, একজন শিক্ষক ক্লাসে ভালো পড়ান বা না পড়ান- নিজের শিক্ষার্থীদের বাধ্য করেন তার কোচিংয়ে পড়তে যেতে। না পড়লে তখন তার প্রতি বৈষম্য করেন। হয়ত কম নাম্বার দেন, ফেইল করিয়ে দেন। এটি খুবই অনৈতিক। একেবারেই অপরাধজনক একটি কাজ।"

তবে শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ের দরকার হতে পারে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “কোনো শিক্ষার্থী একটু দুর্বল হতে পারে। আমাদের দেশের ক্লাস সাইজগুলো যে রকম, তাতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সমান মনোযোগ দেওয়ার পরিবেশ এখনো আমরা তৈরি করতে পারিনি।”

দীপু মনি বলেন, প্রতি ক্লাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমিয়ে ৩০-৪০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। এর বেশি হয়ে গেলে একজন শিক্ষকের পক্ষে শ্রেণিকক্ষে সকল শিক্ষার্থীকে সমান মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না।

Also Read: প্রত্যাশার চাপ নিতে পারেনি মেয়েটি?

“তাতে কারো কারো দুর্বলতা থেকে যেতে পারে। কারো কারো বাড়িতে হয়ত সে সহযোগিতার তেমন সুযোগ নেই। বাবা-মায়ের পক্ষে বোঝানোর সুযোগ হয় না কোথাও কোথাও।"

অন্য অনেক দেশেও কোচিংয়ের ব্যবস্থা আছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, “দেশি-বিদেশি পরীক্ষায় প্রস্তুত হওয়ার জন্যও কোচিংয়ের প্রয়োজন হতে পারে।"

জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।