দুদক বলছে, ২০১৮ সালে দুই লাখ ৮০ হাজার ডলারে তিনতলা ওই বাড়ি কেনেন এস কে সিনহার ভাই অনন্ত কুমার সিনহা।
Published : 19 Oct 2022, 08:38 PM
ঘুষের টাকায় যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি কেনার অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আরও তিন মাস সময় পেল দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আরও সময়ের আবেদন করায় ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সৈয়দা হাফসা ঝুমা আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখ রাখেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক (প্রসিকিউশন) আমিনুল ইসলাম এ তথ্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে এসকে সিনহার তিনতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় গত ৩১ মার্চ এই সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
মামলায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
মামলার এজহারে বলা হয়, এসকে সিনহার জন্য ২০১৮ সালের ১২ জুন দুই লাখ ৮০ হাজার ডলারে তিনতলা ওই বাড়ি কেনেন তার ভাই অনন্ত কুমার। তার আগে ৩০ বছরের কিস্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে অনন্ত সিনহা নিজের জন্য এক লাখ ৮০ হাজার ডলার ব্যাংক ঋণ নিয়ে আরও একটি বাড়ি কিনেছিলেন।
পেশায় দন্ত চিকিৎসক অনন্ত প্রথম বাড়িটি ৩০ বছরের কিস্তিতে কিনলেও নিজের ভাইয়ের জন্য বাড়ি কেনেন নগদ টাকায়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৫ মার্চ থেকে ২৮ মের মধ্যে নিউ জার্সির প্যাটারসনে ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে অনন্ত কুমার সিনহার একটি হিসাবে ৬০ হাজার ডলার জমা হয়। ওই একই হিসাবে অন্য একটি উৎস থেকে একই বছরের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়।
এস কে সিনহার বাড়ি কেনার বা বিদেশে অর্থ পাঠানোর বৈধ কোনো উৎসের সন্ধান পায়নি দুদক। কর্মকর্তাদের সন্দেহ, এস কে সিনহা বিভিন্ন সময়ে ‘ঘুষ হিসেবে’ যেসব টাকা গ্রহণ করেছেন, তা বিদেশে পাচার করেছেন।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের প্লট বরাদ্দ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস কে সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এস কে সিনহা তার নিজ নামে রাজউকের উত্তরা প্রকল্পে একটি প্লট বরাদ্দ পান।
পরে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ও প্রতারণার মাধ্যমে’ তার আরেক ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার নামে রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পে তিন কাঠার আরও একটি প্লটের জন্য আবেদন করেন। বরাদ্দ পাওয়ার পর আবারও প্রভাব খাটিয়ে তা পাঁচ কাঠার প্লটে রূপান্তর করার অভিযোগও আনা হয় সাবেক এ প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে।
ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের আরেক মামলায় আলাদাভাবে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে যথাক্রমে চার বছর এবং সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।