রাজধানীর বাসে ‘ওয়ে বিল’, ‘চেকার’ থাকবে না

বুধবার ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভায় এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজ পর্যন্ত বাসের দরজা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2022, 02:08 PM
Updated : 10 August 2022, 02:08 PM

ঢাকার বিভিন্ন রুটের বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়া নেওয়ার কথা জানিয়ে মালিকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এসব গাড়িতে এখন থেকে ‘ওয়ে বিল’ বন্ধ হবে; থাকবে না ‘চেকার’ প্রথাও।

বুধবার ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভায় এসব সিদ্ধান্তের পাশাপাশি এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজ পর্যন্ত বাসের দরজা বন্ধ রাখা এবং রুট পারমিট অনুযায়ী স্টপেজ অনুযায়ী বাস থামাতে একমত হয়েছেন বাস মালিকরা।

ঢাকার কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে সমিতির কার্যায়লে এ সভা হয়। বৈঠক শেষে সমিতির দপ্তর সম্পাদক সামদানী খন্দকার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

আট মাসের মধ্যে গত শনিবার ডিজেলসহ চার ধরনের জ্বালানি তেলের দাম ৫২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

ডিজেলের দাম সাড়ে ৪২ শতাংশ বাড়ানোর কারণে ওই দিন রাতেই নতুন হারে বাস ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসে। নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হলেও রোববার থেকে রাজধানীর বাসগুলোতে অনেক বেশি হারে ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগ আসে। এ নিয়ে বিভিন্ন রুটে গত কয়েকদিনে যাত্রী অসন্তোষ ঘটনা সামনে আসে।

সর্বনিম্ন দূরত্বের সরকার নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুণ নেওয়ারও অভিযোগ আসে। বিশেষ করে ‘ওয়ে বিল’ ও ‘চেকার’ প্রথার নামে স্বল্প দূরত্বেও অনেক বেশি ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাস কর্মীদের বচসার ঘট্না ঘটে।

এমন প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন থেকে রাজধানীর গণপরিবহনে আলোচিত ওয়ে বিল প্রথা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল বাস মালিক সমিতি।

দীর্ঘদিন থেকে বাসগুলো সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মালিকদের নির্ধারণ করা নির্দিষ্ট স্থান পরপর ‘চেক পয়েন্ট’ অনুসারে ভাড়া আদায় করছে।

নগরীর প্রতিটি রুটেই কয়েক কিলোমিটার পরপর বাস পরিবহনগুলো অনেকদিন থেকে ‘চেক পয়েন্ট’ বসিয়ে যাত্রীর হিসাব রাখে। প্রতিটি পয়েন্টে রাখা হয়েছে কর্মী। বাস ওইসব ‘চেক পয়েন্ট’ অতিক্রম করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যাত্রীর সংখ্যা উল্লেখ করে নির্ধারিত একটি শিটে সই করে দেন। এটাকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ভাষায় বলা হয়, ‘ওয়ে বিল’।

বুধবারের সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। এতে ঢাকার ১২০টি পরিবহন কোম্পানির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সভায় বিআরটিএর চার্ট অনুযায়ী ভাড়া আদায় করা, চার্টের বাইরে ভাড়া আদায় না করা এবং প্রতিটি গাড়িতে ভাড়ার চার্ট টানিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করতে সব বাস মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এসব বিষয়সহ অন্যান্য নিয়ম প্রতিপালন নিশ্চিত করতে মালিক সমিতি পরিদর্শন চালাবে বাসগুলোতে। এজন্য নয়টি পরিদর্শন দল গঠন করা হবে বলে জানানো হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

“এই টিম সড়কে যে কোনো ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধে বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সহায়তা করবে।“

গত শুক্রবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সরকার, যা শনিবার প্রথম প্রহর থেকে কার্যকর হয়।

এরপর শনিবার রাতে বিআরটিএর সঙ্গে বৈঠক করে নতুন ভাড়ার হার ঠিক করে মালিক সমিতি।

সভায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতি কিলোমিটারে ৩৫ পয়সা বাড়িয়ে ২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা। আগে ভাড়া ছিল ২ টাকা ১৫ পয়সা। অপরদিকে দূর পাল্লায় আগের ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সার জায়গায় ৪০ পয়সা বাড়িয়ে ২ টাকা ২০ পয়সা করা হয়।