‘চেকার’ পার হলেই ১০ টাকা: ‘ওয়ে বিল’র ছুতোয় ‘গলা কাটছে’ গণপরিবহন

রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরী পাড়ার আবুল হোটেল থেকে কাকরাইলের দূরত্ব তিন কিলোমিটার। এ পথে সর্বনিম্ন বাস ভাড়া ১০ টাকাই নেয় তরঙ্গ প্লাস। তবে কেউ কাকরাইল না নেমে এ বাসে ওই মোড় ঘুরলেই তাকে গুণতে হচ্ছে ২৫ টাকা!

তাবারুল হক নিজস্ব প্রতিকেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2022, 06:54 PM
Updated : 15 March 2022, 06:57 PM

এভাবে শুধু তরঙ্গ প্লাস নয়, ঢাকার অধিকাংশ গণপরিবহনই ‘পকেট কাটছে’ যাত্রীদের। নানা ছুতো ধরে আদায় করছে অতিরিক্ত ভাড়া; এর মধ্যে মালিকদের বানানো পদ্ধতি ‘ওয়ে বিল’ এর চক্করেই কাটা হচ্ছে পকেট।

সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা কিংবা উচ্চ আদালতের নির্দেশনা কোনটিই তোয়াক্কা করছে না গণপরিবহনগুলো।

গত এক সপ্তাহ ঢাকার বেশ কিছু রুটে চলাচলকারী বিভিন্ন পরিবহনে ঘুরে ভাড়া আদায়ের এমন চিত্র দেখা গেছে।

পোস্তগোলা থেকে গাজীপুরে চলাচলকারী রাঈদা পরিবহন; নতুন বাজার-গাবতলী হয়ে সাভার রুটে বৈশাখী পরিবহন; বনশ্রী- মিরপুর রুটে আলিফ পরিবহন, উত্তরা-সদরঘাট রুটে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহন, আব্দুল্লাপুর-বাবুবাজার ব্রিজ রুটের আকাশ পরিবহনেও একই চিত্র দেখা যায়।

দেখা গেছে, বাসগুলো সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মালিকদের নির্ধারণ করা নির্দিষ্ট স্থান পরপর ‘চেক পয়েন্ট’ অনুসারে ভাড়া আদায় করছে।

অথচ ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর বাস মালিকদের দাবি মেনে গত ৭ নভেম্বর ঢাকা মহানগরীতে বিআরটিএ প্রতি কিলোমিটারের জন্য দুই টাকা ১৫ পয়সা ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়; সর্বনিম্ন ভাড়া করা হয় ১০ টাকা।

এর সঙ্গে আর কোনো অর্থ যোগ করে ভাড়া দাবি করা যাবে না বলে নির্দেশনা দিয়ে পরের দিন ভাড়ার চার্ট (তালিকা) প্রকাশ করে বিআরটিএ। প্রতিটি বাসে এ তালিকা সাঁটানো বাধ্যতামূলক।

সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায় হলেও বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না- এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, “দূর পাল্লার বাসগুলোতে ঠিক আছে, সিটি সার্ভিসগুলোতে এটা হচ্ছে। সিটি সার্ভিসগুলো কন্ট্রোল করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

“সিটি সার্ভিসগুলোতে কিছু কিছু অনিয়ম আছে, সেই অনিয়ম দূর করার জন্য আমরা সব সময় কাজ করছি।”

তিনি বলেন, “দূর পাল্লার বাস ঠিক আছে, এক লক্ষ বাসের মধ্যে সিটিতে তিন-চার হাজার বাসের অনিয়ম, বাকিসব ঠিক আছে। এগুলো আমরা কাজ করছি, আমরা ওয়ার্নিং দেই, মিটিং করি, চার্ট আবার লাগায়, কিছুদিন পর আবার দেখি সেগুলো থাকে না।”

‘চেক পয়েন্ট’ ও ‘ওয়ে বিল’ নিয়ে যাত্রীদের বেশি অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আজকেও মিটিং করেছি, মিটিংয়ে এই বিষয়গুলো আমি উত্থাপন করেছি। আমাদের কাজ চলছে।”

মানছে না বেশির ভাগই

রাজধানীর কয়েকটি রুটের বাসে চড়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ গণপরিবহন এ নির্দেশনা মানছে না। বহু বাসে ভাড়ার তালিকাই নেই, কোনটিতে থাকলেও এর তোয়াক্কা করা হয় না। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কোথাও কোথাও দ্বিগুণের বেশিও আদায় করা হয়।

যাত্রীদের অভিযোগ, অতিরিক্ত ভাড়া দিতে না চাইলে বাসের কন্ডাক্টর, হেলপার ও চালক দুর্ব্যবহার করেন, কখনও বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি ভাড়া নিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে কোনো কোনো ‘চেক পয়েন্টে’ বাসের লোকেরা মিলে যাত্রীকে মারধর করে বলেও অভিযোগ আছে।

চেক পয়েন্ট আর ওয়ে বিলের ‘চক্কর’

নগরীর প্রতিটি রুটেই কয়েক কিলোমিটার পরপর বাস পরিবহনগুলো অনেকদিন থেকে ‘চেক পয়েন্ট’ বসিয়ে যাত্রীর হিসাব রাখে। প্রতিটি পয়েন্টে রাখা হয়েছে কর্মী। বাস ওইসব ‘চেক পয়েন্ট’ অতিক্রম করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যাত্রীর সংখ্যা উল্লেখ করে নির্ধারিত একটি শিটে সই করে দেন। এটাকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ভাষায় বলা হয়, ‘ওয়ে বিল’।

ওয়ে বিলের নামে প্রতিটি চেক পয়েন্ট অতিক্রম করলেই ১০ টাকা কিংবা কোথাও ১৫ টাকা পর্যন্ত আগের যাত্রাপথের ভাড়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

কাকরাইল মোড়ে তরঙ্গ প্লাস পরিবহন তেমনি একটি চেক পয়েন্ট বসিয়েছে। ওয়ে বিল পদ্ধতিতে বনশ্রী থেকে ছেড়ে আসা বাসটির প্রথম চেক পয়েন্ট রামপুরা ব্রিজ। এরপর চৌধুরী পাড়ার আবুল হোটেলে রয়েছে আরেকটি ‘চেক পয়েন্ট’। এটি পার হলেই ভাড়া হয়ে যায় ২০ টাকা। এরপর কাকরাইল পার হলে আরও ১৫ টাকা যুক্ত হয়ে ভাড়া হবে ৩৫ টাকা। এ টাকা ভাড়া দিয়ে সর্বোচ্চ সাইন্সল্যাব পর্যন্ত যাওয়া যায় এ পরিবহনের বাসগুলোতে। অথচ বিআরটিএ এর তালিকা অনুযায়ী বনশ্রী থেকে সাইলল্যাব পর্যন্ত ভাড়া হয় ২২ টাকা।

আর আবুল হোটেল থেকে কাকরাইলের ভাড়া ১০ টাকা। তবে এ মোড় পার হলেই কাউকে গুণতে হয় আরও ১৫ টাকা; গন্তব্য সাইন্সল্যাব না হলেও এ অর্থ জোর করেই আদায় করা হয়।

এছাড়া বনশ্রী থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটারে এ রুটে সর্বোচ্চ ভাড়া ৩০ টাকা হলেও তারা নেয় ৪৫ টাকা।

তরঙ্গ প্লাসের কর্মীরা জানান, বনশ্রী থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত ১৪ কিলোমটার দূরত্বের এ রুটে অন্তত ১০টি স্থানে ‘চেক পয়েন্ট’ রয়েছে কোম্পানিটির।

বাসের জন্য এমন অপেক্ষা মাঝে-মধ্যেই দেখা যায় ঢাকায়। ফাইল ছবি

প্রতিবাদ করলেই বিড়ম্বনা, অতিরিক্ত ভাড়া ‘মালিকের নির্দেশে’

বনশ্রী থেকে মৎস্য ভবন নিয়মিত যাতায়াতকারী ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তা আসাদ উদ-জামান বলেন, “এ রুটে চলে তরঙ্গ প্লাস ও রমজান পরিবহনের বাস। এ দুটির যে কোনো একটিতে বনশ্রী থেকে কাকরাইল পর্যন্ত আসলে ২০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। কিন্তু কয়েকশ মিটার পর মৎস্য ভবন গেলেই ভাড়া হয়ে যায় ৩৫ টাকা।”

সরকার নির্ধারিত ভাড়া বাসগুলো মানছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, নিজেদের মত ভাড়া আদায় করছে। একজন যাত্রী নামবেন মৎস্য ভবন কিংবা শাহবাগ, তাকে সাইন্সল্যাবের পুরো ভাড়া দিতে হবে, এটা কেমন কথা!

এজন্য প্রথম দিকে কয়েকদিন প্রতিবাদ করেও কাজ হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “কন্ডাক্টরা বলে ‘ইচ্ছে না হলে এ বাসে উঠবেন না’।”

বিআরটিএ এর ভাড়া তালিকায় দেখা যায়, বনশ্রী থেকে কাকরাইলের দূরত্ব ৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার, ভাড়া ১৪ টাকা। কিন্তু বাসগুলো নেয় ২০ টাকা। আবার বনশ্রী থেকে শাহবাগ পর্যন্ত ৮ দশমিক ৮ কিলোমিটারে নির্ধারিত ভাড়া ১৯ টাকা হলেও বাসগুলো নেয় ৩৫ টাকা।

এভাবে চেক পয়েন্ট বসিয়ে ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কয়েকটি বাসের একাধিক কন্ডাক্টর ও হেলপার জানান, সরকারের নিয়মে নয়, ভাড়া আদায় করা হয় মালিকদের সিদ্ধান্ত মেনে।

মো. মামুন নামে এক কন্ডাক্টর বলেন, “আমাদেরকে মালিক থেকে বলে দেওয়া হয়েছে ওয়ে বিল অনুযায়ী ভাড়া নিতে, এভাবে ভাড়া তুলতে না পারলে চাকরি থাকবে না।

“চাকরি না থাকলে আমার তো আর কিছু করার উপায় নাই।”

রাজধানীর পোস্তগোলা থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ি পর্যন্ত চলাচল করা রাঈদা পরিবহনের বাসও ওই ওয়ে বিল পদ্ধতি অনুসরণ করে।

এ পরিবহনের বাসে রামপুরা বাজার থেকে অতীশ দীপঙ্কর রোডে কমলাপুর উত্তর ফুটওভার ব্রিজ পর্যন্ত চার কিলোমিটার পথে ১০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। কেউ যদি ওই ফুটওভার ব্রিজ এলাকায় না নেমে কয়েক মিটার সামনে মুগদা নামতে চান তাহলে তাকে ভাড়া গুণতে হবে ২৫ টাকা। অর্থাৎ কমলাপুর ফুটওয়ার ব্রিজের নিচে ওই পরিবহনের ‘চেক পয়েন্ট’ রয়েছে।

এ পরিবহনের একটি বাসের কন্ডাক্টর মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমরা ওয়ে বিল হিসাব করে ভাড়া নিয়ে থাকি। ‘চেকারম্যান’ যাত্রী গুণে গুণে শিটে সংখ্যা লিখে যায়, দিন শেষে সেই হিসাব করে কোম্পানিকে ভাড়া বুঝিয়ে দিতে হয়।“

এ কারণে এক পয়েন্টে ‘শিটে’ সই হওয়ার পর কেউ নামলেই তাকে পরবর্তী পয়েন্টের ভাড়া দিতে হয় বলে দাবি তার।

আর ‘চেক পয়েন্টের’ দায়িত্বে থাকা কর্মী পারিশ্রমিক হিসেবে প্রতিবার প্রতিটি বাস থেকে কমপক্ষে ১০ থেকে ২০ টাকা পেয়ে থাকেন।

ভাড়ার তালিকা আছে, কিন্তু মানতে দেখা যায় না অনেক বাসকে।

তালিকা না মানা: মালিকের যত যুক্তি

সরকারের নির্ধারিত ভাড়া তালিকা মেনে গাড়ি চালানো সম্ভব না বলে দাবি তরঙ্গ প্লাস ট্রান্সপোর্টের মালিকদের একজন শেখ লিয়াকত হোসেনের।

তার দাবি, শুধু তরঙ্গ প্লাস নয়, ঢাকায় কোনো বাসেই এ তালিকা অনুযায়ী ভাড়া নেওয়া হয় না। চেক পয়েন্ট ধরে যে ভাড়া নেওয়া হয় তা ১০ বছর ধরেই চলে আসছে।

তিনি বলেন, “সরকার নতুন যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে তা অনেক কম, এ ভাড়া নিয়ে ঢাকার ভেতরে কোনো পরিবহনই টিকে থাকতে পারবে না।”

এর কারণ হিসেবে ওই বাস মালিক বলেন, “বনশ্রী থেকে মোহাম্মদপুর যেতে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা লাগার কথা; কিন্তু প্রচণ্ড যানজটের কারণে চার ঘণ্টা লাগে, এটা গতকালের (রোববার) কথাই বলছি। একটি বাসে দৈনিক দুটি ট্রিপ দেওয়ার পর তৃতীয় ট্রিপ দেওয়া সম্ভব হয় না।

“এছাড়া ছাত্রদের হাফ ভাড়া করা হয়েছে, অনেক অছাত্রও ছাত্রের নামে গাড়িতে উঠে হাফ ভাড়া দেয়। তাদের কাছ থেকে আইডি কার্ড দেখতে গেলে গাড়ির স্টাফদের মারধর করে গাড়ি আটকে রাখে, ভাঙচুর করে। গার্মেন্টসকর্মী, দোকানের কর্মচারীরাও হাফ ভাড়া দেয়। বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের বিনা ভাড়ায় বহন করতে হয়।“

তার দাবি, “তেলের দামবৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় স্টাফদের বেতন বাড়াতে হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কারণে-অকারণে চাঁদা ও জরিমানা করা হয়ে থাকে। এসব কারণে এইভাবে (চেক পয়েন্ট) ভাড়া নেওয়া হয়।”

সরকারের নির্ধারিত ভাড়া কোনো পরিবহনই মানছে না বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “কোনো কোনো বাসে সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ, এমনকি তিনগুণ পর্যন্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।“

ওয়ে বিলের পরিবর্তে বাসে ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভাড়া নেওয়া হলে বাস মালিকরা সড়কে চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অপচয় থেকে রেহাই পাবেন এবং তারা কাঙ্ক্ষিত মুনাফা করতে পারবেন।”

দৃশ্যমান স্থানে তালিকা টানাতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ

এদিকে গত ২৪ জানুয়ারি সারাদেশের সব বাস ও মিনিবাস-স্ট্যান্ডগুলোর দৃশ্যমান স্থানে গণপরিবহনের ভাড়ার তালিকা টানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ।

পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিআরটিএকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে আদালত।

অতিরিক্ত বাস ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই নির্দেশনা দিয়ে আদালত এক মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করতেও বলেছে।

ওই রিট দায়েরকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আবু তালেব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমরা চেয়েছি যে সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে যেন মানুষের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেওয়া না হয়। বিশেষ করে ঢাকা ও আশপাশের এলাকার গণপরিবহনগুলো টিকিট ব্যবস্থায় চলাচল নিশ্চিত করার বিষয়টি আমরা চেয়েছি।”

বাসে নির্ধারিত ভাড়া না মানা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বাস ও মিনিবাস-স্ট্যান্ডগুলোর দৃশ্যমান স্থানে ভাড়া তালিকা সাঁটানোর বিষয়ে বিআরটিএ এর কার্যক্রম ও পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে সংস্থাটির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি সংস্থাটির উপ পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) মো. হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে বিআরটিএর কার্যক্রম জানতে চাইলে হেমায়েত উদ্দিন রোববার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকেও ঢাকায় আমাদের মোবাইল কোর্টের আটটি টিম এ বিষয়ে কাজ করছে।”

ঢাকা নগর পরিবহনের বাস স্টপেজে দাঁড়াতেই টিকেট কেটে সুশৃঙ্খলভাবে যাত্রীরা উঠছেন, যা রাজধানীর অন্য রুটে দেখা যায় না। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

নগর পরিবহন দিয়ে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা

ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে দীর্ঘ সময়ের প্রচেষ্টার পর গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে বাস রুট ফ্যাঞ্চাইজির আওতায় ঢাকা নগর পরিবহনের বাস চলাচল শুরু হয়েছে।

শুরুতে নগর পরিবহনের আওতায় কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে মোহাম্মদপুর, শংকর, শাহবাগ হয়ে কাচপুর সেতু পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ রুটে এই একক কোম্পানির বাস চলছে। যেখানে নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকেট কেটে বাসে উঠছেন যাত্রীরা।

এদিকে গত ৭ ফেব্রুয়ারি আরও তিন রুটে নগর পরিবহনের বাস চালুর ঘোষণা দিয়েছেন বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঢাকা নগর পরিবহনের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তার ভাষ্য, নতুন এ উদ্যোগ দেখিয়েছে মুনাফা করতে হলে সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও শৃঙ্খলার বিকল্প নেই।

ঢাকা নগর পরিবহনে সরকার নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি, বিভিন্ন রুটে চলাচলরত বেসরকারি কোম্পানির বাসগুলোকে নগর পরিবহনের আওতায় আসতে বাস মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন