পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যা: সাক্ষ্য দিলেন ৪ পুলিশ কর্মকর্তা

৩৮ সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য শেষ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2023, 04:18 PM
Updated : 4 June 2023, 04:18 PM

পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন চার পুলিশ কর্মকর্তা, যে মামলায় রবিউল ইসলাম নামে আসামি হিসেবে রয়েছেন দুবাইয়ে গহনার দোকান খুলে আলোচনায় আসা আরাভ খান।

রোববার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল বিন আতিকের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন।

সাক্ষ্যদাতারা হলেন-খিলগাঁও জোনাল টিমের তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক মো. আরিফুর রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক রুবেল শিকদার, এনামুল হক ও শাহ আলম মন্ডল।

এর মধ্য দিয়ে মামলাটিতে ৩৮ সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য শেষ হলো বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু।

মামলার আসামিরা হলেন- মো. রহমত উল্লাহ (ইন্সপেক্টর মামুনের বন্ধু), স্বপন সরকার, দিদার পাঠান, মো. মিজান শেখ, আতিক হাছান (দিলু শেখ), সুরাইয়া আক্তার কেয়া (কেয়া), মো. সারোয়ার হোসেন ও মো. রবিউল ইসলাম।

আপন, সোহাগ, হৃদয়সহ নানা নামে পরিচিত রবিউল এখন দুবাইয়ে রয়েছেন আরাভ খান নামে। তার স্ত্রী কেয়াও রয়েছেন দুবাইয়ে। তারা দুজন এই মামলায় পলাতক।

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান ২০১৮ সালের ৮ জুলাই বন্ধু রহমত উল্লাহর সঙ্গে বনানীর একটি বাসায় গিয়ে খুন হন। পরদিন তার লাশ বস্তায় ভরে উলুখোলার জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পোড়ানো হয় বলে পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে।

২০১৮ সালের ৯ জুলাই গাজীপুরের জঙ্গল থেকে মামুনের লাশ উদ্ধারের পর তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বনানী থানায় হত্যা মামলাটি করেন।

২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান অভিযোগপত্র জমা দেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, রবিউল ইসলামের (আরাভ খান) নেতৃত্বে বিত্তবানদের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করত একটি চক্র। তাদের লক্ষ্য ছিল রহমত উল্লাহকে আটকে ‘অশালীন’ ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে টাকা আদায় করা। সেজন্য ওই চক্র জন্মদিনের নাটক সাজিয়ে রহমতকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল বনানীর ওই বাসায়। বন্ধু রহমতের সঙ্গে সেখানে গিয়ে খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা মামুন।

সেসময় মামলাটির তদন্তে যুক্ত ছিলেন গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহীদুর রহমান। তিনি জানান, রবিউলসহ ১০ জনকে আসামি করেই পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয় আদালতে।

২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ হয়।

পাঁচ বছর আগে ঢাকায় পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যামামলায় আসামি রবিউল যে আরাভ খান নামে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন তা সম্প্রতি প্রকাশ পায় সেখানে আরাভ জুয়েলার্স উদ্বোধনকালে।

সেই অনুষ্ঠানে জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ বিনোদন জগতের তারকারা ছুটে গেলে আরাভের চেহারা প্রকাশ্যে আসে।

এরপর গত ১৫ মার্চ ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, আরাভ খানেই যে রবিউল, তারা সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন।

Also Read: অস্ত্র মামলায় আরাভ খানের ১০ বছরের জেল

Also Read: হত্যার আসামি রবিউলই দুবাইয়ের আরাভ খান, বলছে পুলিশ

পুলিশ বলছে, মামলার পর রবিউল ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে আরাভ খান নামে ভারতীয় পাসপোর্ট করিয়ে দুবাইয়ে পাড়ি জমান।

আরাভকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিস’ জারি করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

গত ৯ মে ঢাকার আরেকটি আদালত ২০১৫ সালের একটি অস্ত্র মামলায় আরাভ খানকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।