নাদিয়াকে চাপা দেওয়া বাসের চালক ও হেলপার ২ দিনের রিমান্ডে

চালক লিটন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2023, 11:46 AM
Updated : 23 Jan 2023, 11:46 AM

ঢাকায় বাস চাপায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাদিয়া আক্তার নিহতের ঘটনায় ভিক্টর পরিবহনের চালক ও তার সহকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।

সোমবার শুনানি শেষে রিমান্ডে নেওয়ার এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম সৈয়দ মোস্তফা রেজা নূর।

এর আগে চালক লিটন ও তার সহকারী আবুল খায়েরকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই মোহাম্মদ আল ইমরান রাজন আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।

আদালতে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানিকালে বিচারক আসামিদের কাছে জানতে চান, তাদের কী কিছু বলার আছে?

তখন চালক লিটন বলেন, “আমার মাথা ব্যথা করছিল। এজন্য আমার পরিচিত এক ড্রাইভার আরিফকে গাড়িটি দিয়েছিলাম। পড়ে শুনি এ ঘটনা ঘটেছে। আমার কোনো দোষ নাই। এ ঘটনা শোনার পর আমি আমার এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেই। সেখান থেকে আমাকে ধরে আনে। আমি ওই ড্রাইভারকে ধরার অনুরোধ করছি।”

Also Read: নাদিয়ার মৃত্যুতে ফের বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ

Also Read: নাদিয়াকে চাপা দেওয়া বাসের চালক ও হেলপার গ্রেপ্তার

Also Read: সপ্তাহ না ঘুরতে একেবারেই চলে গেলেন নাদিয়া

Also Read: বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মৃত্যুতে বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ

Also Read: মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মৃত্যু

চালকের সহকারী আবুল খায়ের বলেন, “আমাদের বাসটি দাঁড়ানো ছিল। মোটরসাইকেলের লোকটি হাত ছেড়ে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল আর মহিলাকে কী জানি দেখাচ্ছিল। হাতছাড়া থাকার কারণে মোটরসাইকেলটি পড়ে যায়। পরে আমাদের গাড়ির পেছনের চাকায় ধাক্কা লাগে।”

এরপর বিচারক দুই আসামির দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন, যা আগামী চার কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ঠিক করেছেন বিচারক।

বাসের ধাক্কায় ২৪ বছর বয়সী নাদিয়ার মৃত্যু হয় রোববার দুপুরে। বন্ধু মেহেদী হাসানের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে যমুনা ফিউচার পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। ভিক্টর পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দিলে নাদিয়া সড়কে ছিটকে পড়েন। পরে ওই বাসের নিচে পিষ্ট হয়ে তার প্রাণ যায়।

পুলিশ সে সসময় বাসটি আটকাতে পারলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গিয়েছিল। পরে ওই দিন রাতে সড়ক পরিবহন আইনে ভাটারা থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা জাহাঙ্গীর আলম।

সোমবার ওই বাসের চালক মো. লিটন (৩৪) ও সহকারী আবুল খায়েরকে (২২) ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

ফার্মেসি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্রী নাদিয়ার বাড়ি নারায়গঞ্জের ফতুল্লা থানার চাষাড়ায়। তার বাবা জাহাঙ্গীর আলম একটি পোশাক কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক। তিন বোনের মধ্যে সবার বড় নাদিয়া এক সপ্তাহ আগেই নারায়ণগঞ্জের বাসা ছেড়ে উত্তরায় একটি হোস্টেলে উঠেছিলেন।

রোববার নাদিয়ার প্রাণহানির পর বিকালে কাওলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরেও তারা সড়কে নামেন, পরে চালক ও হেলপারের গ্রেপ্তারের খবর শুনে তারা সড়ক ছেড়ে দেন।