ডিসিসিআইয়ের যেকোনো সদস্য প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ডিসিসিআই ভবনে স্থাপিত দক্ষিণ সিটির বুথ থেকে পাঁচ বছর মেয়াদী ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের এই সুবিধা নিতে পারবে। এছাড়া করপোরেশনের আওতাধীন যেকোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অঞ্চল থেকে এ সেবা নিতে পারবে।
Published : 06 Jul 2023, 03:23 PM
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদী ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি।
বৃহস্পতিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) মিলনায়তনে 'ট্রেড লাইসেন্স সেবা বুথ’ স্থাপনের মাধ্যমে দুই সপ্তাহব্যাপী (৬-২০ জুলাই) এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
এ সময় মেয়র বলেন, “ব্যবসা সহজীকরণের একটি বড় দাবি ছিল আমাদের ব্যবসায়ী সমাজের। বাণিজ্য অনুমতি (ট্রেড লাইসেন্স) প্রত্যেক বছর নবায়ন করতে হয়। এই বিষয়টি তাদের (ব্যবসায়ীদের) অনেক সময় মনে থাকে না অথবা দেখা যায় যে বছরের শেষ প্রান্তে এসে করতে হয়।
“সেসব বিষয়কে সহজীকরণ করার জন্য আইন অনুযায়ী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমরা প্রথমবারের মতো ৫ বছর মেয়াদী ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের কার্যক্রম আজ থেকে শুরু করলাম। এখন থেকে যেকোনো ব্যবসায়ী বাণিজ্য অনুমতি নেওয়ার পরে ১ বছর, ২ বছর, ৩ বছর বা ৪ বছর অথবা সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত নবায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।”
এ সেবা প্রথম ডিসিসিআইর মাধ্যমে শুরুর কারণ ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “ঢাকা চেম্বার দিয়েই শুরু করছি, কারণ, আমি মনে করি, ঢাকা শহরের ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ঢাকা চেম্বার দীর্ঘদিন ধরে তার অবস্থান করে নিয়েছে। ঢাকা চেম্বার ঢাকা শহরের ব্যবসা-বাণিজ্যের নেতৃত্বদানকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী এখানে একটি বুথ দিয়ে রাজস্ব সেবা আমরা নিশ্চিত করব।
“এর মাধ্যমে ঢাকা চেম্বারের সাথে আমাদের যে নিবিড় সম্পর্ক, তা আরো সুসংহত হল। ব্যবসায়ীদের সাথে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যে নিবিড় সম্পর্ক তা আরো সুসংহত হল। অংশীজন হিসেবে আমদের ঐক্যবদ্ধভাবে পথ চলতে হবে এবং পথ চলা উচিত- আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা আরো সমৃদ্ধ হলো।”
একটি কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, “প্রত্যেক শহরের একটি সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট বা ফাইন্যান্সিয়াল হাব থাকে। ঢাকা যখন স্থাপিত হয় তখন চকবাজার ফিন্যান্সিয়াল হাব হিসেবে স্থাপিত হয়।
“কিন্তু ঢাকাকে নিয়ে কোনো সময় সুপরিকল্পিত নগরায়নের চিন্তা করা হয়নি। যে কারণে চকবাজারের সেই জৌলুস বা কার্যক্রম এখন ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে গেছে। পরবর্তীতে মতিঝিলকে ফিন্যান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে মতিঝিলও তার সেই জৌলুস হারিয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে শহর পরিকল্পনার লক্ষ্যে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। যার মাধ্যমে আমরা চকবাজারকে আবার পুনরুজ্জীবিত করতে চাই। আমরা চাই সেটা ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র হিসেবে আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। মতিঝিলকেও আমরা আবার পুনরুজ্জীবিত করতে চাই। সেগুলো বাস্তবায়নে আমরা এ বছর থেকেই কার্যক্রমে যাব। এছাড়াও স্মার্ট বাংলাদেশের যে রূপকল্প, তার আলোকে আমরা কামরাঙ্গীরচরকে একটি সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্টে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।”
'ট্রেড লাইসেন্স সেবা বুথ’ একটি 'ওয়ান স্টপ সার্ভিস' পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে জানিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি মো. সমীর সাত্তার বলেন, “এ ধরনের উদ্যোগ পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের একটি অনন্য উদাহরণ এবং এর মাধ্যমে ব্যবসা সহজীকরণ প্রচেষ্টা শক্তিশালী হল।”
কর্মকর্তারা জানান, ডিসিসিআইয়ের যেকোনো সদস্য প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ডিসিসিআই ভবনে স্থাপিত দক্ষিণ সিটির বুথ থেকে পাঁচ বছর মেয়াদী ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের এই সুবিধা নিতে পারবে। এছাড়া করপোরেশনের আওতাধীন যেকোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অঞ্চল থেকে এ সেবা নিতে পারবে।
অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাথে ডিসিসিআইয়ের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান এবং ডিসিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল আনসারুল আরিফিন নিজ নিজ পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।